ওসমানীনগরের সাদিপুর ইউনিয়ন ॥ আচরণবিধি লঙ্ঘন করছেন বিএনপিসহ একাধিক প্রার্থী!

18

শিপন আহমদ ওসমানীনগর থেকে :
ওসমানীনগর উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচনে বিএনপির দলীয় প্রাথীসহ একাধিক প্রার্থীদের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ ওঠেছে। প্রার্থীরা আচরণ বিধির তোয়াক্কা না করে নিজ প্রতিকের পক্ষে বহিরাগতদের নিয়ে প্রচার-প্রচারণা মিছিল ও গাড়ি দিয়ে শোডাউন করেছেন। উপজেলা পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিরা বিএনপির দলীয় প্রার্থীর পক্ষে চালিয়ে যাচ্ছেন সরগম প্রচারণা। প্রার্থীদের আচরণবিধি লঙ্ঘন দেখে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। প্রার্থীও আচরণবিধি মেনে নির্বাচন সম্পন্ন করার জন্য কমিশন সংশ্লিষ্টদের আরোও কঠোর হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সাধারণ ভোটাররা।
এদিকে ১৭ অক্টোবর বিকেলে এ ব্যাপারে আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা কবির উদ্দিন আহমদ আচরণবিধি লঙ্গনের বিষয়টি উল্লেখ করে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তা উপজেলা নির্বাচন অফিসার আবুল লায়েছ দুলালসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রিাটানিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে ওই দিন বিএনপির দলীয় প্রার্থী আব্দুর রব আল মামুনসহ সংশ্লিষ্টদের এবিষয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা কবির উদ্দিন আহমদের দাখিল করা অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ২০অক্টোবর ২নং সাদিপুর ইউনিয়নের উপ- নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সিলেট-২ আসনে (বালাগঞ্জ, বিশ্বনাথ) বিএনপির সাবেক এমপি এম ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসীনা রুশদী লুনা ১৬ অক্টোবর এই ইউনিয়নে ধানের শীষের প্রার্থী আব্দুর রব আল মামুনের পক্ষে প্রায় শতাধিক কার, মাইক্রো, মোটর সাইকেল নিয়ে ঢাকা-সিলেট সড়কের বেগমপুর- শেরপুরসহ বিভিন্ন স্থানে পথ সভা করেন। ফলে মহা সড়কে প্রায ৩০-৩৫ মিনিট বন্ধ থাকে এবং যানঝটের সৃষ্টি হয় এছাড়া গ্রামীণ বাজারে ও ছোট-ছোট রাস্তায় চিঙ্কার শুরগোল করে সরকার বিরোধী উস্কানীমূলক শ্লোগান দিয়ে এলাকার মানুষকে ভীত সন্ত্রস্ত করা হয়। এ রকম প্রচারণায় যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারতো। কিন্তু নৌকা সমর্থকরা ভদ্রতার পরিচয় দিয়েছেন বিধায় কোনো ধরনের অঘটন ঘটেনি। এ রকম প্রচারণায় নৌকা প্রতিকের প্রার্থী কবির উদ্দিন আহমদের ক্ষতি সাধিত হয়েছে বলেও অভিযোগেপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। একই তারিখে কবির উদ্দিনের দাখিল করা অপর একটি অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, ঘোড়া প্রতীকের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী (স্বতন্ত্র) গোলাম কিবরিয়া ১৭ অক্টোবর বিকেল ৪টায়র দিকে গাড়ী ও মোটর সাইকেল দিয়ে মহাসড়কের মিছলি ও গণসমাবেশ করেছেন।
এ বিষয়ে আওযামীলীগের নৌকা প্রতীকের পার্থী মুক্তিযোদ্ধা কবির উদ্দিন আহমদ বলেন, আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেই যাচ্ছেন। লুনাসহ বিএনপির দলীয় নেতা ও বিএনপির অনুসারী উপজেলা পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিরা বহিরাগতদের নিয়ে বেআইনী শোডাউন করে সমাবেশে প্রকাশ্যে ধানের শীষ প্রতিকে ভোট চেয়েছেন যা সুষ্ঠু নির্বাচনের অন্তরায় এবং আচরণবিধি লঙ্গনের শামিল। বিএনপির সাথে পাল্লা দিয়ে স্বতন্ত্র প্রাথী বহিরাগতদের দিয়ে শোডাউনসহ আচরন বিধি লঙ্ঘন করে নৌকার বিজয়কে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
তবে বিএনপি মনোনিত ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী আব্দুর রব আল মামুন বলেন, আমি বা আমার কর্মী সমর্থকেরা আচরণ বিধি ভঙ্গ করিনি। সরকার দলীয় প্রার্থী আচরণবিধি ভঙ্গ করে আমার উপর দ্বায় ছাপাচ্ছেন।
ঘোড়া প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম কিবরিয়া বলেন, নির্বাচনী আচরণবিধি মেনেই প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। নির্বাচনে আমার পক্ষে অর্থাৎ ঘোড়া প্রতীকের গণজোয়ার সৃষ্টি হওয়ায় নৌকার প্রার্থীসহ অনান্য প্রার্থীরা আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও ভিত্তিহীন অভিযোগসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা রকম কল্প কাহিনী রটিয়ে যাচ্ছে। বিষয়গুলি আমি বার বার মৌখিকভাবে কমিশনকে জানিয়ে আসছি।
আনারস প্রতিকের অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল আজিজ বলেন, প্রভাবশালী প্রার্থীরা আচরণবিধি লঙ্গন করছেন এতে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে আমি সন্দিহান। নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে কার জনপ্রিয়তা কতটুকু সেটা প্রমাণ হবে।
রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল লায়েস মো: দুলাল বলেন, সুষ্ঠু প্রক্রিয়ায় নির্বাচন সম্পন্নের জন্য কমিশনের নির্দেশনানুযায়ী সব রকমের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রার্থীদের আচরণ বিধি লঙ্ঘনের বিষয়টি আমাদের নজরে রয়েছে। সকলের সার্বিক সহযোগিতায় আমরা চাই অবাধ নিরপেক্ষ সুষ্ঠু নির্বাচন।