বাংলাদেশের দুটি পাতা একটি কুঁড়ির দেশ সিলেট সিটি করপোরেশন আর ইরানের সবচেয়ে বেশি চা উৎপাদনকারী এলাকা গীলান প্রদেশের লাহিজান সিটির মেয়রের মধ্যে ভার্চুয়াল সৌজন্য সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক ঐহিহ্যে সাদৃশ্যপূর্ণ বাংলাদেশের সিলেট ও ইরানের লাহিজানকে ‘সিস্টার সিটি’ করায় সম্মত হয়েছেন উভয় সিটি করপোরেশনের মেয়র।
মঙ্গলবার দুপুরে সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর সাথে ইরানের গিলান প্রদেশের লাহিজান সিটি করপোরেশনের মেয়র ইউসুফ ক্বিয়ামাতিয়ুনের ভার্চুয়াল সভায় এ প্রস্তাবে সম্মত হন তারা।
সভায় লাহিজান সিটি করপোরেশনের মেয়র ইউসুফ ক্বিয়ামাতিয়ুন দুই সিটিকে সিস্টার সিটিতে পরিণত করার প্রস্তাব দিলে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী এই প্রস্তাবে সম্মত হন।
ঢাকাস্থ ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান হাই কমিশনের উদ্যোগে প্রকৃতিক সৌন্দর্যে অভিন্ন দুই সিটি করপোরেশনের মেয়রের মধ্যে জুমিএর মাধ্যমে ঢাকাস্থ ইরান দূতাবাসের কালচারাল কাউন্সিলর ড. সাইয়্যেদ হাসান সেহাতের সঞ্চালনা এ সৌজন্য ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় দুই দেশের দুই সিটি মেয়র তাদের সিটি করপোরেশনের ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন।
লাহিজান সিটি মেয়র ইউসুফ ক্বিয়ামাতিউন বলেন, ইরানের প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক দিক দিয়ে লাহিজানের সাথে বাংলাদেশের সিলেটের অনেক মিল রয়েছে। বিশেষ করে চায়ের উৎপাদনে দুই দেশের এই দুটি এলাকা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।
তিনি বলেন, চা উৎপাদন, চা রপ্তানী, পর্যটন, স্বাস্থ্য সেবা বিষয়ে অভিজ্ঞতা বিনিময়ের পাশাপাশি এসব বিষয়ে লাহিজান সিটি সিলেট সিটি করপোরেশনের সাথে যৌথভাবে কাজ করতে পারে।
এদিকে ঢাকাস্থ ইরান হাই কমিশনের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী লাহিজানের সিটি মেয়র সহ হাই কমিশনারকে সিলেট সিটি করপোরেশনে আমন্ত্রন জানান।
সিসিক মেয়র এই ভার্চুয়াল সভার মাধ্যমে লাহিজান সিটির সাথে সিলেট সিটি একটি বন্ধুপ্রতিম সম্পর্কের শুরু হলো। দুই সিটি প্রাকৃতি সৌন্দর্য্য- বিশেষ করে চায়ের উৎপাদনকারী এলাকা হিসাবে অভিন্ন সম্পর্কটি আমাদের অন্যান্য কার্যক্রমকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, পর্যটন, চা গবেষণা, উৎপাদন ও রপ্তানী খ্যাতে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। এর জন্য দুই সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় লাহিজান সিটি ও সিসিক করণীয় নির্ধারণ করবে।
তিনি বলেন, সিলেট তথা বাংলাদেশের দক্ষ জনশক্তি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সুনামের সাথে কাজ করছে। চা-গবেষণা, উৎপাদন, আমদানি-রপ্তানির বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা হতে পারে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশে দক্ষ চা-শ্রমিক রয়েছে। যারা বিদেশে গিয়ে কাজ করতে সক্ষম। লাহিজান এদেশ থেকে দক্ষ শ্রমিক নেয়ার বিষয়টি চিন্তা করতে পারে।
প্রবাসি অধ্যুষিত সিলেট সিটি করপোরেশন ও লাহিজান সিটির মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে বলেও আশা প্রকাশ করেন সিসিক তিনি।
সভায় ঢাকাস্থ ইরান দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ রেজা নাফা কালচারাল কাউন্সিলর ড. সাইয়্যেদ হাসান সেহাতের মাধ্যমে সিটি মেয়রদ্বয়ের এই সৌজন্য ভার্চুয়াল সভাকে স্বাগত জানান। এবং সিস্টার সিটি হিসাবে ভবিষ্যতে নেয়া যৌথ উদ্যোগগুলো বাস্তবায়নে সহযোগিতার আশ্বাস দেন। এবং চা উৎপাদন, বাজারজাতকরণ ও রপ্তানি সংক্রান্ত অভিজ্ঞতা বিনিময় করা, ভূ-গর্ভস্থ পানি সংরক্ষণের ক্ষেত্রে সহযোগিতা কর্মসূচি নিয়েও দুই সিটি কাজ করবে বলেও আশা প্রকাশ করেন। বিজ্ঞপ্তি