বাবরুল হাসান বাবলু তাহিরপুর থেকে :
তাহিরপুরে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। ধীর গতিতি উজানের পানি নিম্নাঞ্চলের দিকে নামতে শুরু করেছে। এতে উপজেলার নিম্নাঞ্চলের হাওর পারের কমপক্ষে অর্ধ শতাধিক গ্রাম বন্যার পানিতে প্লাবিত হওয়ার সংবাদ পাওয়া গেছে। নতুন করে যে গ্রামগুলো প্লাবিত হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে সোলেমানপুর, আনন্দ নগর, রামজীবনপুর, রামসিংহপুর, মানিকখিলা, দুমাল, মাড়ালা, তাহিরপুর, লক্ষ্মীপুর, সূর্য্যেরগাঁও, বীরনগর, রতনশ্রী, বড়দল, গাজিপুর, আমবাড়ি, পাতারগাঁও, দক্ষিণকুল, চিকসা, পৈন্ডুপ, পাতারি, তিওরজালাল, হোসেনপুর,কামারকান্দি,মন্দিয়াতা, মাটিয়ান সহ অর্ধশতাধিক গ্রাম।
তাছাড়া গত তিন দিন ধরে পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে তাহিরপুর বাদাঘাট সড়ক এ তাহিরপুর থানা কমপ্লেক্সের উত্তর পার হতে পাতারগাঁও সড়ক পর্যন্ত একাধিক স্থান, তাহিরপুর সুনামগঞ্জ সড়কের তাহিরপুর আনোয়ারপুর ব্রীজের এপ্রোচ, চিকসা সীমানা গ্রামের পূর্ব দিকে আনোয়ারপুর পর্যন্ত সড়ক। পানি উঠেছে তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স আঙ্গিনা সহ একাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয় আঙ্গিনায়। সেই সাথে হাওরে উত্তাল পানিতে সামন্য বাতাসে ঢেউ সৃষ্টি হয়ে ভাঙ্গছে হাওর পারে বিভিন্ন লোকজনের কাচা ঘরবাড়ি।
উপজেলার ভাটি তাহিরপুর গ্রামের কৃষক আল আমীন তিনি জানান, তার ঘরটি তাহিরপুর বাজার থেকে তাহিরপুর উচ্চ বিদ্যালয় সড়কের দক্ষিণ পাশে শনি হাওর পারে। হাওরে বর্তমানে বেশী পানি,আর এতে সামান্য বাতাসে বড় বড় ঢেউ ওঠে। ঢেউয়ের আঘাতে তার কাঁচা ঘরবাড়ি কিছুটা ভেঙ্গেছে বলেও জানান।
উপজেলার মধ্য তাহিরপুর গ্রামের সিএনজি চালক ইসলাম উদ্দিন, তিনি জানান, গত তিনি দিন ধরে তিনি সিএনজি নিয়ে বসে আছেন। তাহিরপুর সুনামগঞ্জ সড়কে পানি থাকায় গাড়ি চালাতে পারছেন না।
ভাড়ায় চালিত মোটর সাইকেল চালক উপজেলার সদর ইউনিয়নের ধুতমা গ্রামের নেফরু মিয়া, তিনি বলেন, বর্ষাতে এমনিতেই রাস্তাঘাট কমে যায়। যে দুটো সড়কে গাড়ি চালাতাম এখন এ দুটো সড়কেও পানি।
উপজেলার দক্ষিণ বড়দল ইউনিয়নের অবস্থিত গ্রাম আমবাড়ি। গ্রামের সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষিকা মাম্পী চৌধুরী জানান, পাহাড়ি ঢলের পানি বিদ্যালয়ের ভবনের ভিতর ঢুকে পড়েছে। বর্তমানে বিদ্যালয়টি পানি বন্দী অবস্থায় রয়েছে।
উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিপ্লব সরকার বলেন, বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তি রয়েছে। একাধিক শিক্ষক বিদ্যালয় ভবনে পানি প্রবেশ করার বিয়য়টি আমাকে ফোনে জানিয়েছেন।
উপজেলা পরিষদ মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান খালেদা বেগম বলেন, তাহিরপুর বাদাঘাট সড়ক পাহাড়ি ঢলে পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বাড়ি থেকে তাহিরপুর উপজেলা সদর যাতায়াত করতে নৌকা ব্যাবহার করতে হচ্ছে।
উল্লেখ্য গত মঙ্গলবার থেকে সারা দেশে মেঘ বলয় সক্রিয় থাকায় দেশের সর্বত্রই বৃষ্টিপাত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় তাহিরপুরেও প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। প্রবল বৃস্টিপাতের সীমান্ত নদী যাদুকাটা ও আশপাশের নালা দিয়ে প্রচুর পাহাড়ি ঢলের পানি নামে এতে তাহিরপুরে বন্যা দেখা দেয়। বন্যায় তাহিরপুর সুনামগঞ্জ সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পরে। সেই সাথে বন্যায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয় রোপা আমন ও রবিশস্য।