স্টাফ রিপোর্টার :
নগরীর শহীদ ডা: শামসুদ্দিন হাসপাতালে রোগিদের সেবা দিতে গিয়ে করোনা ভাইরাসে (কোভিড-১৯) ইউনিটে কর্মরত সিনিয়র স্টাফ নার্স (নার্সিং কর্মকর্তা) নাসিমা পারভীনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালের আইসিইউতে করোনা আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে স্বাস্থ্যবিধি মোতাবেক নগরীর মানিকপীর টিলার কবরস্থানে তার মরদেহ দাফন করা হয়। শহীদ ডা: শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) সুশান্ত মহাপাত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নার্সেস এসোসিয়েশন (বিএনএ) সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল শাখার সাধারণ সম্পাদক ইসরাইল আলী সাদেক জানান, নার্স নাসিমা পারভীন করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৩ দিন ধরে আইসিইউতে ছিলেন। গতকাল সকালে তিনি মারা যান। রোগীদের সেবা দিতে গিয়েই তার মৃত্যু হয় বলে জানান সাদেক।
শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালের উপসেবা তত্ত্বাবধায়ক নেহারী রাণী দাস বলেন, সিনিয়র স্টাফ নার্স নাসিমা পারভীন করোনাসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ছিলেন। সোমবার সকাল সাড়ে ৮টার সময় তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
এদিকে নার্সিং কর্মকর্তা নাসিমা পারভীনের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করছেন বাংলাদেশ নার্সেস এসোসিয়েশন (বিএনএ) সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল শাখার সভাপতি শামীমা নাসরিন ও সাধারণ সম্পাদক ইসরাইল আলী সাদেক।
অপরদিকে, একই হাসপাতালে আরো ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। একজন সিলেট জেলার ও অপর জন সুনামগঞ্জের। এ নিয়ে সিলেট বিভাগে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯০ জনে। শহীদ ডা. শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ডা. সুশান্ত কুমার মহাপাত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেন। এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জ জেলায় আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্র। সূত্র জানায়, গত ৫ এপ্রিল থেকে এ যাবৎ সিলেটে মারা যাওয়া ৯০ জনের মধ্যে ৭০ জনই সিলেটের। সুনামগঞ্জের ৮ জন, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের ৬ জন করে।
ডা. সুশান্ত কুমার মহাপাত্র বলেন, এ যাবৎ হাসপাতালে ৯৩ জন চিকিৎসাধীন। এরমধ্যে ৮৮ জনের করোনা পজিটিভ। বাকিরা করোনা উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এছাড়া আইসিইউতে ১৪ জন চিকিৎসাধীন। এরমধ্যে দু’জন মারা যাওয়াতে এখন ১২ জন রয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, বিভাগে বর্তমানে আক্রান্তের সংখ্যা ৫ হাজার ২৬২ জন। এরমধ্যে সিলেট জেলায় দুই হাজার ৮০৯ জন, সুনামগঞ্জে এক হাজার ৯২ জন, হবিগঞ্জে ৮০৪ জন ও মৌলভীবাজারে ৫৫৭ জন। সুস্থ হয়েছেন এক হাজার ৮০২ জন। এরমধ্যে সিলেটে ৫৪৭ জন, সুনামগঞ্জে ৬৫৬ জন, হবিগঞ্জে ৩১৭ জন ও মৌলভীবাজারে ২৮২ জন।