তারাপুর গণহত্যা দিবসের অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক ॥ একাত্তরের গণহত্যার সকল স্মৃতি রক্ষার্থে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে

21
তারাপুর গণহত্যা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে শহীদ বেদিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করছেন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম।

১৮ এপ্রিল মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে তারাপুর গণহত্যায় ৩৯জন শহীদের স্মরণে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিলেটের জেলা প্রশাসক এম. কাজী এমদাদুল ইসলাম বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ও নির্দেশনায় সমগ্র বাঙালি জাতি পাকিস্তানী বাহিনীর বিরুদ্ধে দেশকে মুক্ত করতে বীরের মতো লড়াই করে যাচ্ছে ঠিক সেই সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে রাজাকার, আলবদরদে সহযোগিতায় বর্বর পাকিস্তানী সৈন্যরা নিরীহ-নিরস্ত্র মানুষকে নির্মমভাবে হত্যায় মেতে উঠে। তাদের এই নির্মমতার চিহ্ন আজও বহুস্থানে খুঁজে পাওয়া যায়। তিনি বলেন, গণহত্যার অনেক স্থান এখনও অযতেœ পড়ে আছে। বর্তমান সরকার খুবই আন্তরিকভাবে গণহত্যার সেই সমস্ত স্থানগুলো করা ও স্মৃতি ধরে রাখার জন্য কাজ করছে। তিনি গণহত্যায় শহীদ তারাপুর চা বাগানের স্বত্ত্বাধিকারীসহ বাগানের অন্যান্য কর্মকর্তা ও শ্রমিকদের আত্মার শান্তি কামনা করে উপস্থিত শহীদ পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। জেলা প্রশাসক বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে আমাদের সকলকে কাজ করতে হবে।
১৮ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় তারাপুর গণহত্যা দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন অনুষ্ঠান তারাপুর চা-বাগান শহীদমিনার প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত হয়। তারাপুর চা-বাগানের সেবাইত ও শহীদ পরিবারের সদস্য ডা: পংকজ গুপ্তের সভাপতিত্বে গণহত্যা দিবস উপলক্ষে স্মরণ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেটের জেলা প্রশাসক এম. কাজী এমদাদুল ইসলাম। রজত কান্তি গুপ্তের পরিচালনায় স্মরণ সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সিলেট জেলা ইউনিট কমান্ডের সাবেক কমান্ডার সুব্রত চক্রবর্তী জুয়েল, সিলেট মহানগর ইউনিট কমান্ডের সাবেক কমান্ডার ভবতোষ রায় বর্মণ, বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ব্যারিস্টার মোঃ আরশ আলী, ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা কমরেড সিকন্দর আলী, পূজা উদ্যাপন পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক এডভোকেট মৃত্যুঞ্জয় ধর ভোলা প্রমুখ। স্মরণ সভায় উপস্থিত ছিলেন মহানগর আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল আনোয়ার আলাউর, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা আওয়ামীলীগ নেতা জাবেদ সিরাজ, বীর মুক্তিযোদ্ধা ভাটি-বাংলা মুক্তিযোদ্ধা সমবায় সমিতির সভাপতি অনিল তালুকদার, মুক্তিযোদ্ধা মন্টু দাস, টেনাই উল্লাহ আব্দুর রহিম, মকবুল হোসেন, হারুনুর রশীদ, রথীশ চন্দ্র রায়, বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সহ-সভাপতি মোকাদ্দেস বাবুল, পূজা উদ্যাপন পরিষদ সিলেট মহানগরের সভাপতি সুব্রত দেব, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদ মহানগরের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ দেব, পূজা পরিষদের জেলা সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট রঞ্জন ঘোষ, বাংলাদেশ নারী মুক্তি সংসদের সভাপতি ইন্দ্রানী সেন শম্পা, সংস্কৃতিকর্মী মাসুম খান, তারাপুর পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি চৈতন্য মোদী ও সাধারণ সম্পাদক সুনীল মোদী, মনোরঞ্জন রায় সমর, যুবসংঘের সভপতি জগন্নাথ রায়, শহীদ পরিবারের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গৌরী সমাদ্দার, সুখময় রায়, রঞ্জন মোদী, মন্টু মোদী, পরিমল হালদার, স্বপন রায়, লিপি রায়, দূর্গাচরণ ভূমিজ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ সকল শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তারাপুর গণহত্যায় শহীদ সকলের স্মৃতির উদ্দেশ্যে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করেন তারাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীবৃন্দ।
স্মরণ সভা শেষে শোক র‌্যালীর মাধ্যমে শহীদবেদিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সিলেটের জেলা প্রশাসক এম. কাজী এমদাদুল ইসলাম, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী, সিলেট সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আশফাক আহমদ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, সিলেট জেলা ও মহানগর ইউনিট কমান্ড, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, সিলেট, সম্মিলিত নাট্য পরিষদ, সিলেট, বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ, সিলেট জেলা ও মহানগর, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদ, সিলেট জেলা ও মহানগর, টুলটিকর ইউনিয়ন ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ, তারাপুর পঞ্চায়েত কমিটি তারাপুর যুবসংঘ ও শহীদ পরিবারের সদস্যবৃন্দ। বিজ্ঞপ্তি