বন্যার আশংকা

11

অবিরাম বৃষ্টিতে বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বাড়ছে, পানির তোড়ে অনেক চরের ফসল তলিয়ে গেছে। প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল; নদীভাঙনও ভয়ংকর রূপ নিয়েছে। অনেকে ভিটামাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে।
উজানি পাহাড়ি ঢল ও টানা বর্ষণে যমুনা নদী সহ বন্যার পানি সকল পয়েন্টে বাড়ছে। পানি বাড়তে থাকলে দিন কয়েকের মধ্যে বিপথসীমা অতিক্রান্ত হতে পারে। এরই মধ্যে চরাঞ্চলের ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। নষ্ট হয়েছে ফসল। যমুনা অববাহিকার পাঁচটি উপজেলার প্রায় ৩০টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুরে ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তার পানি বেড়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। নদীবর্তী এলাকার বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। চরাঞ্চলে বাদাম, পাট, ভুট্টা, মরিচক্ষেত ও বীজতলা পানিতে তলিয়ে গেছে। তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্রের অব্যাহত ভাঙনে বসতবাড়ি ও আবাদি জমি নদীতে বিলীন হচ্ছে। পাউবো (পানি উন্নয়ন বোর্ড) উলিপুরের হাতিয়া ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্রপারের পালের ভিটা ও হাতিয়া গ্রামে জিও ব্যাগ ফেলছে। তিস্তার ভাঙন ঠেকাতে পাউবো পদক্ষেপ নেয়নি; থেতরাই ইউনিয়নের পাকার মাথায় এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করছে। ভাঙনে এরই মধ্যে অর্ধশতাধিক বাড়িঘর ও প্রচুর আবাদি জমি নদীতে লীন হয়েছে। ভূরুঙ্গামারীতে বসতভিটা, বাঁশঝাড়, গাছবাগান ও আবাদি জমি নদীগর্ভে লীন হচ্ছে। বসতভিটা হারিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছুটছে শত শত মানুষ। দুধকুমর নদীর ভাঙনে উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের শত শত বিঘা আবাদি জমি ও বসতভিটা নদীতে বিলীন হচ্ছে। উজানি পাহাড়ি ঢল ও অবিরাম বর্ষণে বগুড়ার ধুনটের ভাণ্ডারবাড়ী ইউনিয়নে যমুনার পানি বাড়ছে। চর এলাকার আউশ ধান ও পাটক্ষেত ডুবে গেছে। অতিবর্ষণজনিত জলাবদ্ধতায় কুয়াকাটার শতাধিক পরিবারের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। রংপুরের কাউনিয়া, গঙ্গাচড়া ও পীরগাছার চরাঞ্চলে আগাম বন্যায় তলিয়ে গেছে বাদামক্ষেত। টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিতে রাজশাহীর তানোরে ধানকাটা ও মাড়াই নিয়ে বিপাকে পড়েছে কৃষকরা।
বর্ষাকালে নদীভাঙন, বন্যা, ফসলহানি ঘটতে পারে—এ বিবেচনা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোর থাকা উচিত। তাহলে সময়মতো প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব। আর দীর্ঘ মেয়াদে ড্রেজিং করে নদীর গভীরতা বাড়াতে হবে। খাল-বিল খননের ব্যবস্থাও করতে হবে। যা জন প্রত্যাশা।