বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসে শনাক্তের সংখ্যায় উল্লম্ফন ঘটেছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। বিশ্বের বেশির ভাগ মানুষ এখন ঝুঁকিতে জানিয়ে সংস্থাটি বলছে, ভাইরাসটি এখনো দ্রুতগতিতে বিস্তার লাভ করছে। রেকর্ড আক্রান্তদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শনাক্ত হয়েছে দক্ষিণ এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশ বাংলাদেশেও আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। তবে বাংলাদেশে আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হওয়ার হার ৪০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বা মৃত্যু হলে সরকারি চাকরিজীবীদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার পরিপত্র জারি করেছে সরকার। পরিপত্র অনুযায়ী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সরকারি চাকরিজীবীরা মারা গেলে গ্রেডভেদে ২৫ থেকে ৫০ লাখ টাকা পাবেন। আর করোনার আক্রান্ত হলে গ্রেডভেদে পাবেন ৫ থেকে ১০ লাখ টাকা। আর এর জন্য ৮৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এখন পর্যন্ত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ১০ হাজার। আক্রান্তের পাশাপাশি মৃতের সংখ্যাও বাড়ছে। করোনাভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্ত সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য ঘোষিত ক্ষতিপূরণের টাকা পেতে অর্থ বিভাগে আবেদন জমা পড়তে শুরু করেছে।
করোনা মোকাবেলা করতে গিয়ে সরকারি চাকরিজীবী ও সম্মুখযোদ্ধাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত পুলিশ। এ ছাড়া সারা দেশে এক হাজার ৩৫ জন চিকিৎসকের করোনা শনাক্তের খবর জানা গেছে। নার্সদের মধ্যে ৮৮৫ জন এবং অন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে এক হাজার ৩৫৪ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। গত শুক্রবার পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৩৮ জন চিকিৎসক। তাঁদের মধ্যে পাঁচজন মারা গেছেন করোনার লক্ষণ নিয়ে। আর করোনা আক্রান্ত হয়ে দুজন নার্স ও একজন স্বাস্থ্যকর্মীর মৃত্যু হয়েছে। বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, প্রশাসন ক্যাডারে এ পর্যন্ত মোট করোনা আক্রান্ত প্রায় ২০০। কর্মরতদের মধ্যে মারা গেছেন তিন কর্মকর্তা। এর বাইরে প্রশাসনের নিম্ন স্তরের শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী করোনায় আক্রান্ত।
বাংলাদেশে ক্ষতিপূরণ আদায়ের জন্য অনেক ক্ষেত্রেই ভুয়া সনদ দাখিলের নজির আছে। সন্দেহ করা হচ্ছে, এবারও টাকা পাওয়ার জন্য কেউ কেউ ভুয়া করোনা আক্রান্তের সনদ জোগাড় করতে পারেন। এরই মধ্যে গত ১৫ জুন রাজধানীর মুগদা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ভুয়া করোনা সনদ তৈরির অভিযোগে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। এ বিষয়ে কড়া নজর রাখা প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি।