বাংলাদেশে করোনায় আক্রান্ত প্রথম রোগীর সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল ৮ মার্চ ২০২০। এরই মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মোট এক লাখ দুই হাজার ২৯২ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৩৪৩ জন। আক্রান্তদের মধ্যে ৪০ হাজার ১৬৪ জন চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছেন। বাংলাদেশের জনসংখ্যার তুলনায় পরীক্ষা করা হয়েছে কম; উল্লেখযোগ্যসংখ্যক রোগী সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরছেন। কিন্তু তার পরও আতঙ্ক ঠেকানো যাচ্ছে না। ভাইরাসটি এখন পর্যন্ত সবার কাছেই অজানা, চিকিৎসা করা হচ্ছে উপসর্গ দেখে। সেই সঙ্গে হুজুগে পড়ে ওষুধ সেবনের প্রবণতাও লক্ষ করা যাচ্ছে। ওষুধের দোকানে গেলেই ওষুধ পাওয়া যায়। ফলে যখন যে ওষুধের কথা শোনা যায়, তখন সেই ওষুধের বিক্রি বেড়ে যেতে দেখা গেছে। বিশ্বের কোন দেশ কোন ওষুধ করোনায় ব্যবহার করছে বা কোনটি গবেষণায় সফল হচ্ছে এমন খবর জানাজানি হলেই দেশের এক শ্রেণির মানুষ যেমন ছোটাছুটি শুরু করে ফার্মেসিতে, তেমনই ওষুধ কোম্পানিগুলোও এমন হিড়িক দেখে মেতে ওঠে বাণিজ্যে। রাতারাতি ওষুধ তৈরি করে বাজারজাতও করে ফেলছে করোনার চিকিৎসার নামে। কিন্তু এসব ওষুধ সেবন কতটা নিরাপদ? চিকিৎসকরা বলছেন, ওষুধের এমন ব্যবহারে করোনার মধ্যেই আরো ভয়ানক কোনো পরিণতি যুক্ত হতে পারে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো ওষুধই কেউ যাতে ফার্মেসি থেকে সংগ্রহ করতে না পারে, সে ব্যবস্থা নিশ্চিত করার বিষয়ে জোর দিচ্ছেন তাঁরা। শুধু ওষুধ নয়, দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসায় দরকারি সামগ্রী যেমন অক্সি মিটার, পোর্টেবল অক্সিজেন ক্যান, পোর্টেবল ভেন্টিলেটর, ফেস শিল্ডসহ অক্সিজেন সিলিন্ডারের বিক্রি বিপুল পরিমাণে বেড়ে গেছে। বিক্রেতারা দামও নিচ্ছেন ইচ্ছামতো। আবার যেখানে-সেখানে অক্সিজেন সিলিন্ডার বিক্রি বাড়াচ্ছে ঝুঁকি। চিকিৎসা সংশ্লিষ্টদের মতে, মেডিক্যাল অক্সিজেনের সঙ্গে মানুষের জীবন-মরণ জড়িত। বেশি অক্সিজেন নিলে তা শরীরে অক্সিজেনের বিষক্রিয়া ঘটাতে পারে।
গণমাধ্যমে ওষুধের কথা শুনে তা সেবন বন্ধ করতে হবে। জনগণকে সচেতন হতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো ওষুধ সেবন করা যাবে না। সরকারের সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রক সংস্থা এ ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা নেবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।