বিশ্বব্যাপী নভেল করোনা ভাইরাসের এই তান্ডব পরিস্থিতিতে ২০২০-২০২১ অর্থ বছরের জন্য অর্থনৈতিক উত্তরণ: ভবিষ্যৎ পথ পরিক্রমা বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে একটি ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্প বান্ধব বাজেট মহান জাতীয় সংসদে পেশ করায় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, এমপি ও বর্তমান সরকারকে দি সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র পক্ষ থেকে সিলেট চেম্বারের সভাপতি আবু তাহের মোঃ শোয়েব অভিনন্দন জানান। এটি দেশের ৪৯তম, আওয়ামীলীগ সরকারের ২০তম, অর্থমন্ত্রী হিসেবে এটি তাঁর দ্বিতীয় বাজেট এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন তৃতীয় মেয়াদের দ্বিতীয় বাজেট। মহামারীর এই সংকটময় পরিস্থিতি উত্তরণ ও বাংলাদেশকে বিশ্বে উন্নয়নের নতুন মডেল হিসেবে গড়ে তোলার যে স্বপ্ন আশা করি ‘‘অর্থনৈতিক উত্তরণ: ভবিষ্যৎ পথ পরিক্রমা’’ শীর্ষক এই বাজেটে তারই প্রতিফলন পাওয়া যাবে। ২০২০-২০২১ অর্থ বছরের জাতীয় বাজেটে মোট আকার দেয়া হয়েছে ৫ লক্ষ ৬৮ কোটি টাকা, যা জিডিপি’র ১৭.৯ শতাংশ। বাজেটে প্রবৃদ্ধির হার নির্ধারণ করা হয়েছে ৮.২ শতাংশ যা বর্তমান সরকারের জীবনমান পরিবর্তনমুখী মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ।
বিশ্বব্যাপী নভেল করোনা ভাইরাসের (কভিড-১৯) প্রাদুর্ভাব ও বিস্তৃতির ফলে সব দেশেই অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট ও চাহিদা বদলে গেছে, যা আমাদের দেশের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। প্রায় দুই মাস ধরে অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে স্থবিরতা, বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর লকডাউনে থাকা, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, পেশাজীবী ও শ্রমিক এবং প্রান্তিক চাষীদের কর্মহীন হয়ে পড়ার প্রেক্ষাপটে এবারের বাজেটে কর্মসংস্থান, শিল্প ও কৃষি খাতে উৎপাদন, সার্ভিস সেক্টর সচল করাসহ দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে গতিসঞ্চার করার মতো উপাদান সংযুক্ত করা হয়েছে। যা খুবই সময়োপযোগী।
আসন্ন মন্দা ও দুর্ভিক্ষ অবস্থা মোকাবেলায় সামাজিক সুরক্ষা খাতের বরাদ্দ বৃদ্ধিসহ উপকারভোগীর সংখ্যা বাড়ানো, কর মুক্ত আয়ের সীমানা ৩ লাখ করা, স্বাস্থ্য খাতে বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধি, সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ বাড়ানো একটি যুগপযোগী প্রস্তাব বলে আমি মনে করি।
২০২০-২০২১ অর্থ বছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে মানবসম্পদ (শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য) খাতে ২৮.৫ শতাংশ, সার্বিক কৃষি খাতে ২২.০ শতাংশ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ১৩.০ শতাংশ, যোগাযোগ খাতে ২৫.৪ শতাংশ এবং অন্যান্য খাতে ১১.১ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, যার ফলে দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত হবে।
সিলেট চেম্বারের সভাপতি বলেন, ২০২০-২০২১ অর্থ বছরের বাজেটে জীবন রক্ষাকারী ঔষধ ও সারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে জীবন রক্ষাকারী ঔষধ ও সারের দাম হ্রাস করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। বর্তমান পরিস্থিতিতে বিশাল জনগোষ্ঠীর খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা অন্যতম একটি চ্যালেঞ্জ। এই পরিস্থিতিতে সারের দাম হ্রাস হলে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি সহ আসন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় গুরুত্বর্পূণ ভূমিকা পালন করবে। তাছাড়া অনলাইন রিটার্ণ দাখিলের উপর ২ হাজার টাকা কর রেয়াতের যে সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে তা অত্যন্ত সময়োপযোগী।
সর্বোপরি ২০২০-২০২১ অর্থ বছরের জন্য ঘোষিত বাজেট একটি সময়োপযোগী ও জনবান্ধব বাজেট। সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হলে এই বাজেট বর্তমান সংকটময় পরিস্থিতি উত্তোরণ এবং দেশ ও জনগণের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে। বিজ্ঞপ্তি