স্টাফ রিপোর্টার :
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের মধ্যেও দীর্ঘ প্রায় আড়াই মাস পর সিলেট থেকে ছেড়ে গেছে দূরপাল্লার বাস। গতকাল সোমবার সকাল থেকেই সিলেটে পরিবহন চলাচল শুরু হয়। তবে বাসের ভেতর শারীরিক দূরত্ব কিছুটা থাকলেও বাস টার্মিনালে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। শারীরিক দূরত্ব তো দূরের কথা, মানুষের ব্যাপক ভিড়।
দক্ষিণ সুরমার টার্মিনাল এলাকা ঘুরে দেখা যায়, প্রথম দিন হওয়ায় অনেক গণপরিবহনই শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে যাত্রী তুলছে। তবে গাড়ির ভেতর অনেক যাত্রীরই মাস্ক ও হ্যান্ড গ্লাভস নেই। স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই গাড়িতে উঠছে যাত্রীরা।
কদমতলী বাস টার্মিনালের এক যাত্রী জানান, মানুষের অনেক ভিড়। কাউন্টারের বাইরে শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিতের দায়িত্ব যেন কারো নেই। অনেক যাত্রীই মাস্ক ব্যবহার করছেন না। কদমতলী থেকে ভোর থেকেই বিভিন্ন গন্তব্যে বাস ছেড়ে যায়। তবে কিছু কিছু বাস শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করেই চলতে দেখা যায়।
জেলা প্রশাসন সুত্র জানিয়েছে, গতকাল বাস চলাচলের প্রথম দিন হওয়া স্বাস্থ্যবিধির বিষয়টি মনিটরিং করা হচ্ছে। পরে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দূরপাল্লার বাস চলাচলের জন্য নির্দেশনা দিয়েছে ট্রাফিক পুলিশ। গতকাল সোমবার সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ এর ৩৪ ধারার প্রদত্ত ক্ষমতাবলে করোনা ভাইরাসজনিত রোগ (কোভিড-১৯) এর বিস্তার প্রতিরোধকল্পে শর্ত সাপেক্ষে সীমিত পরিসরে নিদিষ্ট সংখ্যক যাত্রী নিয়ে স্বাস্থ্য বিধি মেনে আন্তঃজেলা ও দূরপাল্লায় চলাচলকারী বাস ও মিনিবাস চলাচলের জন্য সরকারী নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
উক্ত নির্দেশনার আলোকে মহানগর এলাকার বিভিন্ন বাস স্টপ হতে যে সমস্ত গণপরিবহণ আন্তঃজেলা ও দূরপাল্লায় চলাচল করছে সে সকল যানবাহনসমূহ নিম্নোক্ত সরকারী নির্দেশনাসমূহ যথাযথভাবে পালন করছেন কিনা সে বিষয়ে সিলেট মহানগর ট্রাফিক বিভাগ কর্তৃক তদারকি কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
শর্তগুলো হচ্ছে, বাস/মিনিবাসের পাশাপাশি দুইটি আসনের একটি আসনে একজন যাত্রীকে বসিয়ে অপর আসনটি ফাঁকা রাখা, স্বাস্থ্যবিধি মোতাবেক শারীরিক ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, সংশ্লিষ্ট মোটরযানের রেজিষ্ট্রেশন সার্টিফিকেটে উল্লেখিত আসন সংখ্যার অর্ধেকের বেশী যাত্রী বহন না করা এবং দাঁড়িয়ে কোন যাত্রী বহন না করার বিষয়ে মহানগর এলাকার নির্ধারিত স্টেশন হতে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া যানবাহন সমূহ ট্রাফিক পুলিশের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক প্রদত্ত নির্দেশনা যথাযথভাবে অনুসরণ পূর্বক বাস/মিনিবাসসমূহ মহানগর এলাকার নির্দিষ্ট বাস ষ্ট্যান্ড হতে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হচ্ছে কিনা এ বিষয়ে তদারকি করা হচ্ছে। এবং সিলেটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা আন্তঃজেলা ও দূরপাল্লার গণপরিবহনসমূহ একইভাবে নিয়ম মেনে সিলেট মহানগর এলাকায় প্রবেশ করছে কিনা এ বিষয়ে নজরদারী করা হচ্ছে।
এসএমপি’র অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক-উত্তর) জ্যোতির্ময় সরকার পিপিএম ও সহকারি পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক-উত্তর) আবুল খয়ের এর নেতৃত্বে নগরীর কুমাড়গাঁও বাসস্টেন্ড, তেমুখি ও মজুমদারী এলাকায় এবং অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক-দক্ষিণ) (পুলিশ সুপার) নিকুলিন চাকমা ও সহকারি পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক-দক্ষিণ) মোঃ আশিদুর রহমান এর নেতৃত্বে হুমায়ুন রশিদ চত্ত্বর, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের লালাবাজার ও টিলাগড় এলাকায় তদারকি কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।