কাজিরবাজার ডেস্ক :
শুরু হয়েছে মাদকবিরোধী স্পেশাল টাক্সফোর্সের সাঁড়াশি অভিযান। এবারের অভিযানে শূট এ্যাট সাইট নীতি অবলম্বন করার নির্দেশনা আছে। ইতোমধ্যেই খোদ বনানীতে র্যাবের সঙ্গে গোলাগুলিতে মাদক মামলার আসামি ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। আর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর মাত্র চব্বিশ ঘণ্টায় চারটি বড় ধরনের অপারেশন চালিয়েছে। উদ্ধার হয়েছে হাজার হাজার পিস ইয়াবা। জব্দ করা হয়েছে মাদক পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত ট্রাক। আর গ্রেফতার হয়েছে সাত জন পেশাদার ইয়াবা ব্যবসায়ী। উদ্ধার হয়েছে তেরো হাজার পিসের বেশি ইয়াবা। এমন অভিযান চলবে ধারাবাহিকভাবে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ অনেক কাজে ব্যস্ত থাকা র্যাবকে চাপমুক্ত রাখতে মাদক উদ্ধারে নিজস্ব ডগ স্কোয়াড গঠনের চেষ্টা করছে। পাশাপাশি পরিবহন থেকে পণ্য না নামিয়ে তাতে মাদক আছে কিনা তা নিশ্চিত হতে ভেহিক্যাল ড্রাগ স্ক্যানার কেনার বিষয়ে চিন্তাভাবনা চলছে।
র্যাবের লিগ্যাল এ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক ও বাহিনীটির গোয়েন্দা শাখার প্রধান লে. কর্নেল সারওয়ার-বিন-কাশেম জানান, করোনাভাইরাসের মধ্যে যেখানে মানুষ, নিজের প্রাণ বাঁচানোর জন্য ব্যস্ত, সেখানে মাদক ব্যবসায়ীরা মাদক চোরাচালানে ব্যস্ত। এমন পরিস্থিতির মধ্যেও মাদক চোরাচালান থেমে নেই। কিছু দিন ফেনসিডিলের চালান এলেও, এখন আবার ইয়াবার চালান আসছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা মোতাবেক র্যাব মাদকবিরোধী স্পেশাল টাস্কফোর্সের নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছে। একের পর এক অভিযান চালাচ্ছে।
গত ১৫ মে ভোরে মাদকের আখড়া হিসেবে পরিচিত বনানীর কড়াইল বস্তি এলাকার টিএনটি বটতলা মাঠে অভিযান চালানো হয়। সেখানে গোলাগুলিতে জলিল (৪৫) নামের এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়। আহত হন এক র্যাব সদস্য। ঘটনাস্থলে পাওয়া যায় ২টি অত্যাধুনিক বিদেশী পিস্তল, ২টি ম্যাগজিন, ১১ রাউন্ড তাজা বুলেট ও ৫শ’ পিস ইয়াবা। নিহত জলিল ১৬টি মাদক মামলার আসামি ছিল। পাশাপাশি সে ছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত পেশাদার মাদক ব্যবসায়ী। কড়াইল বস্তির মাদক ব্যবসার অধিকাংশেরই নিয়ন্ত্রণ ছিল তার হাতে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের পরিচালক (অপারেশনস) পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) এস এম মাসুম রাব্বানী জানান, করোনাভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যেও দেশে মাদক ঢুকছে। এরই প্রেক্ষিতে মাদক নিয়ন্ত্রণে গঠিত স্পেশাল টাস্কফোর্স সারাদেশে মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযান শুরু করেছে। অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরও এককভাবে ঝটিকা অভিযান চালাচ্ছে।
উল্লেখ্য, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের গবেষণা ও নিরোধ শাখার তথ্য মোতাবেক দেশে বর্তমানে সরকারী হিসেবে মাদকাসক্তের সংখ্যা প্রায় এক কোটি। এই এক কোটি পেশাদার মাদকসেবী। এর বাইরে অনিয়মিত মাদকসেবীর সংখ্যা আরও প্রায় এক কোটি।