ত্রাণ বিতরণে সচ্ছতা চাই

7

দেশের প্রায় সব জেলা থেকেই ত্রাণ বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে রাজধানীর ত্রাণ বিতরণ নিয়েও। ঢাকার প্রতিটি ওয়ার্ডে ৩৭০টি স্বল্প ও নিম্ন আয়ের পরিবারকে ওএমএস কার্ড দেওয়া হয়েছে। কোনো কোনো ওয়ার্ডে ডিলারদের মাধ্যমে ওএমএস কার্ডের পণ্য বিক্রি শুরু হয়েছে। উত্তর সিটি করপোরেশনের একটি ওয়ার্ডের কার্ডধারী ১৫০ জন পণ্য কেনেননি। কারণ ওএমএস কার্ডধারী ওই লোকেরা সবাই বিত্তবান। তাঁরা কেউ ১০ টাকা দামের চাল নিতে আগ্রহী নন। তবু রাজনৈতিক প্রভাব ও কাউন্সিলরের সঙ্গে সম্পর্কের কারণে তাঁদের কার্ড দেওয়া হয়েছে। রীতিমতো হতাশাজনক। করোনা-দুর্যোগের এ সময় সরকারি ত্রাণের তালিকায় স্থান পাচ্ছে না অসহায়-অসচ্ছলরা। তালিকায় উঠছে বিত্তবান, বাড়ির মালিক, রাজনৈতিক নেতা ও কাউন্সিলরের আত্মীয়-স্বজনের নাম। অসচ্ছল লোকজনকে ত্রাণ দেওয়ার জন্য তালিকা করার কথা বলে বারবার জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি ও পাসপোর্ট সাইজের ছবি নেওয়া হয়; কিন্তু ত্রাণ পায়নি তারা। ত্রাণের জন্য কাউন্সিলরের কাছে গেলে বের করে দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। তালিকায় উঠা সচ্ছল বাড়ি মালিকের নাম এবং বাড়ির ঠিকানাও উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। করোনার সময় ত্রাণ সহায়তা চেয়ে এবং ত্রাণ বিতরণে দুর্নীতির খবর জানিয়ে ফোন করছেন নাগরিকরা। গত ২১ এপ্রিল থেকে ১২ মে পর্যন্ত সংরক্ষিত তথ্য মতে এ সময়ে ত্রাণ চেয়ে কল করেছেন আট হাজার ২০৮ জন। ত্রাণ নিয়ে দুর্নীতির তথ্য দিয়ে ফোন করেছেন ১৭৫ জন।
সমালোচকরাও মনে করেন এবার যে ত্রাণ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, তা মোটামুটি প্রয়োজন মেটানোর মতো। একেবারে অপ্রতুল, তা বলার অবকাশ কম। কিন্তু মাঠে অভিযোগের শেষ নেই এবং অভিযোগগুলো একেবারে ভিত্তিহীন নয়। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। এ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। আমরা আশা করব, এ জন্য মাঠ পর্যায়ে বিতরণ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক কিছু নীতিগত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।