শ্রীমঙ্গলে এএসপি আশরাফুজ্জামানের মানবিকতা-বাসায় তুলে দিলেন পরিবারকে

17

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
করোনার এই ভয়াবহ সংকটের মুহূর্তে ঠিক সময়ে ভাড়া দিতে না পারায় শিশুসহ একটি পরিবারকে বাসা থেকে বের করে দিলেন এক বাড়িওয়ালা।
১৩মে বুধবার সন্ধ্যারাতে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার পৌর শহরের শাপলাবাগ আবাসিক এলাকার রেল লাইনের পাশে রুবেল মিয়ার বাসায় এ ঘটনা ঘটে।
করোনা সংক্রমণে আতঙ্কিত যখন পুরোদেশ তখন মধ্যরাতে এমন ঘটনায় প্রশ্ন উঠে মানবিকতা নিয়ে।
পরে মৌলভীবাজারের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো.আশরাফুজ্জামানের রাতেই সেহরির পর পরিবারটিকে বাসায় তুলে দেন।
জানা গেছে, শাপলাবাগ এলাকার বাসিন্দা রুবেল মিয়ার বাসার ভাড়াটিয়া ৭০০ টাকা মাসিক ভাড়ায় থাকতেন। দেড় মাসের বাসাভাড়া দিতে না পারায় দুই শিশু শরীফা আক্তার (৪৫) নারীকে বাসার মালিক বুধবার সন্ধ্যারাতে বাসা থেকে বের করে দেয়। পরে শ্রীমঙ্গল থানার সামনের মার্কেটের বারান্দায় দুই শিশুকে ঘুম পাড়িয়ে শিশুর মা পাশে বসে রয়েছেন। একদিকে মশার কামড়ে দুই শিশু ঘুমের মধ্যেই ছটফট করছে। এমন সময় শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এম ইদ্রিস আলী ও তরুণ সমাজ সেবক শেখ সারোয়ার জাহান জুয়েল ছবি নিয়ে তাদের ফেসবুকে স্ট্যাটাসের পর শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আশরাফুজ্জামান নজরে আসে। সাথে সাথেই এএসপির নির্দেশে থানা পুলিশ তাদেরকে অপারেটর রুমে রাতের খাবার খাওয়ানোর পর তাদেরকে বসিয়ে রাখে। পর্যাপ্ত খাবার থাকায় তারা সব খাবারও খেতে পারেনি। রাত চারটার দিকে কাপড় চোপড় ও পুলিশের দেয়া খাদ্যসামগ্রীসহ তাদের নিয়ে এক সিএনজি অটোরিক্সাতে তুলেন ওই পরিবারকে এবং সার্কেল এএসপি আরেকটি সিএনজি অটোরিক্সা উঠে তাদেরকে শাপলাবাগ রেললাইনের পাশে ওই বাসায় গিয়ে বাসার মালিককে ডেকে তুলেন এবং কঠোর সতর্কবার্তা দেন।
মৌলভীবাজার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো.আশরাফুজ্জামান বলেন, দেশের এমন সংকটের সময় উনি যা করেছেন সেটি দুঃখজনক। বাসার মালিককে সতর্ক করে দিয়েছি যেন এধরনের কোন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে। বাসায় তুলে দিয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে চাল,ডাল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী এবং নগদ টাকা দিয়েছি। এমনকি দুই মাসের বাসা ভাড়া পরিশোধ করে দিয়েছেন। তিনি শিশুদের মাকে বলেছেন, খাবার না পেলে থানায় যোগাযোগ করতে।’
এএসপি আশরাফুজ্জামানের মানবিকতার কারণে পুরো পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তি জনসাধারণের কাছে উজ্জ্বল করেছে।