করোনা আক্রান্ত রোগীদের হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিতে নিয়মের পরিবর্তন

12

কাজিরবাজার ডেস্ক :
দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। পরীক্ষার সুযোগ বাড়লেও চাহিদার তুলনায় এখনো সেটি খুবই কম। এছাড়া যারা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন, তাদের স্স্থু হয়ে উঠতে গড়ে অন্তত দুই সপ্তাহ সময় লাগছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। এজন্য হাসপাতাল থেকে রোগীদের ছাড়পত্র দেয়ার ক্ষেত্রে নিয়ম কিছুটা বদলানো হয়েছে।
আগে যেকোনো রোগীর ক্ষেত্রে একটানা দুটি পরীক্ষা নেগেটিভ হলে তাকে সুস্থ হিসেবে বিবেচনা করা হতো এবং হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেয়া হতো। তবে এবার টানা ৭২ ঘণ্টা জ্বর ও শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণজনিত উপসর্গ না থাকলে পরপর দুটি পলিমারেজ চেইন রিঅ্যাকশন (পিসিআর) টেস্ট ছাড়াই হাসপাতাল থেকে সেই রোগীকে ছাড়পত্র দেয়ার নতুন বিধান তৈরি করেছে দেশের কোভিড-১৯ কারিগরি কমিটি।
শুক্রবার দুপুরে করোনাভাইরাস বিষয়ক নিয়মিত স্বাস্থ্য বুলেটিনে এ তথ্য জানান অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
কারিগরি কমিটি রোগীর ছাড়পত্র দেয়ার ক্ষেত্রে পাঁচটি বিষয় বিবেচনা নেয়ার কথা বলেছে। সেগুলো হলো:
১. রোগীর জ্বর যদি ওষুধ ছাড়াই সেরে যায়।
২. শ্বাসযন্ত্রে সংক্রমণের সমস্যা যেমন – শুষ্ক কাশি, কফ, নিঃশ্বাস নিতে অসুবিধা – এসব উপসর্গের ক্ষেত্রে লক্ষণীয় উন্নতি হলে।
৩. ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে পরপর দুটি পরীক্ষা নেগেটিভ হলে।
৪. যদি পরীক্ষা করা সম্ভব না হয় তাহলে ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত রোগীর জ্বর না থাকলে এবং শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ উন্নতি হলে রোগীকে হাসপাতাল থেকে ছাড়ের অনুমতি দেয়া যাবে।
৫. হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর রোগীকে অবশ্যই নিজ বাসায় অথবা মনোনীত জায়গায় আইসোলেশনে থেকে নিয়ম মেনে চলতে হবে। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরবর্তী ১৪ দিন সেখানেই অবস্থান করতে হবে। পরবর্তী সময়ে সম্ভব হলে রোগী টেস্টের জন্য নির্ধারিত জায়গায় উপস্থিত হয়ে নমুনা দিতে পারবেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নতুন নির্দেশনা তুলে ধরে নাসিমা সুলতানা বলেন, তারা সম্প্রতি আরেকটি গাইডলাইন তৈরি করেছেন। সেটা হলো কোডিভ-১৯ এর সামাজিক ও প্রাতিষ্ঠানিক সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের কারিগরি নির্দেশনা। এই নির্দেশনায় তিনটি অধ্যায় আছে। প্রথম দুটি অধ্যায়ে ৫০টি সামাজিক ও প্রতিষ্ঠানিক স্থাপনার কোভিড-১৯ প্রতিরোধ ও করণীয়সমূহ সহজভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। যেসব প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা যেমন- চিকিৎসা, আইনশৃঙ্খলা, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, জরুরি খাদ্য ও পণ্য সরবরাহ ইত্যাদি যেগুলো চালু রয়েছে, তাদের এই গাইডলাইনের প্রদত্ত নির্দেশনাসমূহ যথাযথভাবে অনুসরণ করতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বিশেষভাবে অনুরোধ করেছে। যারা ভবিষ্যতে এ ধরনের প্রতিষ্ঠান খুলবেন, তারা নির্দেশনা অনুযায়ী এখন থেকেই বিশেষভাবে প্রস্তুতি গ্রহণ করবেন।
এছাড়া দ্বিতীয় অধ্যায়ে বিভিন্ন বয়স পেশার মানুষের জন্য সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের নির্দেশনা দেয়া আছে। গর্ভবতী মা ও শিশু এবং বয়োজ্যেষ্ঠদের করণীয় এতে অন্তর্ভুক্ত আছে। এই কারিগরি নির্দেশনা এই ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে বলে জানান নাসিমা সুলতানা।