এডভোকেট আনোয়ার হোসেন হত্যার ঘটনায় স্ত্রী গ্রেফতার, কবর থেকে লাশ উত্তোলনের আবেদন

18
নিহত এডভোকেট আনোয়ার হোসেন ও আটক স্ত্রী শিপা বেগম।

কাজিরবাজার ডেস্ক :
এডভোকেট আনোয়ার হোসেন (৪২) হত্যা মামলায় স্ত্রী শিপা বেগমকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার (৩ জুন) দিবাগত রাত ৩টার দিকে নগরের তালতলা এলাকার একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। দুপুরে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শিপ্রা বেগমের সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেছেন মামলার তদন্তু কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইয়াছিন আলী। অপর এক আবেদনে নিহতের মরদেহ কবর থেকে তুলে ময়নাতদন্তের অনুমতিও চেয়েছেন তিনি। এ দুটি আবেদনের ওপর আগামী রবি (৬ জুন) বা সোমবার (৭ জুন) শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার (১ জুন) সিলেট মহানগর হাকিম আদালতে বাদী হয়ে আইনজীবী আনোয়ার হোসেনকে হত্যার অভিযোগ এনে ৩০২ ধারায় মামলা দায়ের করেন নিহতের ভাই সিলেট সদর উপজেলার শিবেরবাজারের দীঘিরপার গ্রামের মনোয়ার হোসেন।
মামলায় শিপা বেগমের খালাতো ভাই (বর্তমানে স্বামী) শাহজাহান চৌধুরী মাহিকে প্রধান আসামি ও শিপাকে দ্বিতীয় আসামিসহ আটজনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়।
বাদীপক্ষের আইনজীবী এডভোকেট এএসএম আব্দুল গফুর জানান, এডভোকেট আনোয়ার হোসেন সিলেট নগরীর তালতলা এলাকায় নিজ বাসায় স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে বসবাস করতেন। তিনি সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আইনজীবী ছিলেন। কিন্তু তার অগোচরে স্ত্রী শিপা বেগমের পরকীয়া সম্পর্ক চলছিল শাহজাহান চৌধুরী মাহি নামের একজনের সঙ্গে। এর জেরেই আনোয়ার হোসেনকে হত্যা করা হয়।
গত ৩০ এপ্রিল সাহরি খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন আনোয়ার হোসেন। পরদিন বিকেল ৩টার দিকে স্ত্রী শিপ্রা বেগম সবাইকে জানান, আনোয়ার হোসেন ডায়াবেটিক নিল হয়ে মারা গেছেন। পরে তাকে নিজের গ্রামের বাড়ি সিলেট সদর উপজেলার শিবেরবাজারের দীঘিরপার গ্রামে দাফন করা হয়।
পরবর্তীতে আনোয়ার হোসেনের পরিবার জানতে পারে, পরকীয়ার জেরে আনোয়ার হোসনকে হত্যা করেন স্ত্রীসহ কয়েকজন মিলে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার (১ জুন) সিলেটের অতিরিক্ত চিফ মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হত্যা মামলার আবেদন করেন আনোয়ার হোসেনের ভাই মনোয়ার হোসেন। পরে আদালতে শুনানি শেষে কোতোয়ালি থানার ওসিকে ৩০২ ধারায় মামলা রুজু করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন বিচারক।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইয়াছিন আলী জানান, আনোয়ার হোসেন মারা যাওয়ার মাত্র ১০ দিনের মাথায় শিপা বেগম তার খালাতো ভাই কানাইঘাটের বাসিন্দা (বর্তমানে নগরের উপশহর এলাকায় বসবাসকারী) শাহজাহান চৌধুরী মাহিকে বিয়ে করেন। এরপর থেকে আনোয়ারের পরিবারের সঙ্গেও শিপা যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। এ থেকে তাকে সন্দেহ করছে এডভোকেট আনোয়ারের পরিবার।