কাজিরবাজার ডেস্ক :
বৈশ্বিক মহামারী নভেল করোনাভাইরাসে সৃষ্ট পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকার ঘোষিত চলমান ছুটিতে দেশে প্রতিদিন অন্তত তিন হাজার তিনশ কোটি টাকা ক্ষতি হচ্ছে বলে মনে করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক। তাদের এই হিসাব আমলে নিলে বন্ধ দিনের এক মাসে এক লাখ তিন হাজার ১৬৫ কোটিরও বেশি টাকা আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।
লকডাউন চলাকালীন দেশের আর্থিক ক্ষতির বিষয়ে মঙ্গলবার ‘অর্থনীতিতে করোনার প্রভাব’শীর্ষক একটি সমীক্ষা জরিপের প্রতিবেদনে এই হিসাব তুলে ধরেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের গবেষক দল।
দলটিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ আব্দুল হামিদ। তার নেতৃত্বে গত বছর ডেঙ্গুর ক্ষয়ক্ষতিও একটি প্রাক্কলন করেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক দল গবেষক।
নভেল করোনাভাইরাসের বিস্তার ও সংক্রমণ রোধে গত ২৬ মার্চ থেকে ছুটি চলছে। ওই সময় থেকে বন্ধ রয়েছে সব ধরনের কল-কারখানাসহ বাইরের সব কাজকর্ম। আগামী ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত এই ছুটি রয়েছে। একটানা বন্ধ দিনে দেশের কী পরিমাণ আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে সে বিষয়ে সরকারি হিসাব এখনও আসেনি।
প্রতিবেদনে গবেষকরা এক মাসে বাংলাদেশ কী পরিমাণ অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে প্রাথমিকভাবে তার একটি ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। তাদের হিসাবে, এক মাসে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ক্ষতি এক লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।
তাদের হিসাবে এরপরে লকডাউন আরো দীর্ঘায়িত হলে প্রতিদিনের ক্ষতির পরিমাণও বেড়ে যাবে। আর পুরো মে মাস লকডাউন থাকলে ক্ষতির পরিমাণ দুই লাখ কোটি টাকা অর্থাৎ গত অর্থবছরের জিডিপির প্রায় ৯ শতাংশ ছাড়িয়ে যেতে পারে।
দেশের অর্থনীতির তিনটি বড় খাত- কৃষি, শিল্প ও সেবা খাত ধরে ক্ষতির এই হিসাব অনুমিত হয়েছে। তাদের হিসাবে লকডাউনে প্রতিদিন কৃষিতে ক্ষতি হচ্ছে ২০০ কোটি টাকা। এরপরে শিল্প খাতে দিনে ক্ষতি হচ্ছে এক হাজার ১৩১ কোটি টাকা। আর সেবা খাতে দিনে দুই হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে বলে সমীক্ষায় বলা হয়েছে।
এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠার উপায়গুলো আগেভাগে খুঁজে বের করাসহ সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ প্যাকেজের সুষ্ঠু বাস্তবায়নের ওপর জোর দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন ওই গবেষক দল।