চা বাগানে লক্ষাধিক শ্রমিক ঝুঁকিতে

6

হবিগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় সারাদেশে ছুটি ঘোষণা করা হলেও হবিগঞ্জ জেলার ২৪টি চা বাগানের প্রায় ৪০ হাজার চা শ্রমিক পাচ্ছেন না ছুটি। তাদের দেওয়া হচ্ছে না সচেতনতামূলক কোনো পরামর্শও। এসব শ্রমিকদের ব্যাপারে বাগান কর্তৃপক্ষ রয়েছে নিরব ভূমিকায়। যে কারণে শ্রমিকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে অসন্তোষ।
জানা যায়, ছুটির দাবিতে শুক্রবার (২৭ মার্চ) অনশন করেছে চুনারুঘাট উপজেলার নালুয়া বাগানের শ্রমিকরা। একই উপজেলার আমু বাগানের শ্রমিকরা বাংলাদেশ টি এস্টেট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশন বিভাগীয় শ্রম দপ্তরে উপ-পরিচালক বরাবর ছুটির আবেদন করেছেন। তারা বলছেন করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় সরকার সবাইকে ঘরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন, বন্ধ করে দিয়েছে সব যান চলাচল ও যোগাযোগ ব্যবস্থা। বন্ধ রয়েছে দোকানপাট থেকে সব সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু চা বাগানের কর্মচারীদের ছুটি দেওয়া হচ্ছে না। তারা অবিলম্বে ছুটির ঘোষণা দাবি করেন।
কয়েকটি বাগান ঘুরে দেখা যায়, প্রতিদিনের মতোই সকাল থেকে চা-শ্রমিকরা এসে কাজে যোগদান করেছে। রুটিন অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছে শ্রমিকরা। তারা জানান, তাদের ছুটি নেই। তাই কাজে এসেছেন। আর কাজ না করলে খাবার জুটবে কই থেকে। মালিক ও বড় বাবুরা ঘরে বসিয়ে টাকা দেবে না। করোনা ভাইরাস নিয়ে তারা বলেন, এটার কথা শুনেছি। তবে উপরওয়ালা আমাদের রক্ষা করবেন।
উপজেলার একাধিক সামাজিক ও সচেতন ব্যক্তিরা জানান, খুব দ্রুত সম্ভব চা শ্রমিকদের ছুটি দিয়ে ঘরে থাকা ও করোনা ভাইরাস সম্বন্ধে সচেতন করতে হবে। অন্যথায় যদি কোনো একজন শ্রমিক আক্রান্ত হয়ে যান। তাহলে পরিস্থিতি ভয়াবহ অবস্থা ধারণ করবে।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক নৃপেন পাল জানান, আমরা চা শ্রমিকদের ছুটির দাবি জানিয়েছি। কিন্তু বাগান কর্তৃপক্ষ এখনও এ বিষয়ে আমাদের কিছু জানায়নি। অতি দ্রুত চা শ্রমিকদের ছুটি দিয়ে সবাইকে ঘরে রাখার দাবি জানান।
হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, ছুটির ব্যাপারে শ্রমিকদের অনশনের বিষয়টি শুনেছি। সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি নিরসনের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া উপজেলার রেমা বাগানের শ্রমিকদের জন্য তিনটন চালও বরাদ্দ এসেছে।