জগন্নাথপুর-দিরাইবাসীর ব্রীজ থাকলেও রাস্তা না থাকায় সামাদ আজাদ ও সুরঞ্জিত সেনের উদ্যোগ ভেস্তে যেতে বসেছে

34

মো. শাহজাহান মিয়া জগন্নাথপুর থেকে :
সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর ও দিরাই উপজেলাবাসীর যোগাযোগের একমাত্র ব্রীজটি অযতœ-অবহেলায় পড়ে আছে। ব্রীজের দুই পাশের এপ্রোচে রাস্তা না থাকায় ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন এ দুই উপজেলার জনগণ। যদিও প্রতি বছর হেমন্ত মৌসুমে ব্রীজের দুই পাশের এপ্রোচে সামান্য মাটি ভরাট করা হলেও বর্ষা মৌসুমে নলুয়ার হাওরের পানির ঢেউয়ে মাটিগুলো সরে যায়।
সরজমিনে স্থানীয়রা জানান, জগন্নাথপুর উপজেলা সদর থেকে চিলাউড়া বাজার পর্যন্ত রাস্তা রয়েছে। তবে ১৯৯৬ সালে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রয়াত জাতীয় নেতা আলহাজ¦ আবদুস সামাদ আজাদের উদ্যোগে জগন্নাথপুর ও দিরাইবাসীর যোগাযোগের জন্য এ রাস্তার পাশে থাকা কবিরপুর থেকে নলুয়ার হাওরের মধ্যস্থান দিয়ে উপজেলার শেষ সীমান্ত ভূরাখালি পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার একটি ডুবন্ত রাস্তা নির্মাণ করেন। এ সময় ভূরাখলি বাজারের দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে অবস্থিত কামারখালি নদীর উপর একটি ব্রীজ নির্মাণের উদ্যোগ নিলেও সামাদ আজাদের মৃত্যু হওয়ায় তা বাস্তবায়ন হয়নি। অবশেষে ২০১৬ সালে সাবেক রেলমন্ত্রী প্রয়াত সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত এর উদ্যোগে এ নদীতে প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে ব্রীজ নির্মাণের মাধ্যমে জগন্নাথপুর ও দিরাইবাসীর সেতুবন্ধন তৈরী করে যান।
এদিকে-দিরাই উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১৪ কিলোমিটার রাস্তা এ ব্রীজে এসে সংযোগ হয়েছে। শুধু ব্রীজের দুই পাশে মাত্র কয়েক শত মিটার রাস্তা না থাকায় ব্রীজটি অযতœ অবহেলায় পড়ে আছে। হেমন্ত মৌসুমে মাটির রাস্তা দিয়ে ও ব্রীজের দুই পাশের এপ্রোচে সামান্য মাটি ভরাট করে কোন রকমে চলাচলের ব্যবস্থা করে দেয়া হয়। বর্ষা হলেই মাটিগুলো নলুয়ার হাওরের অথই ঢেউয়ে পানিতে তলিয়ে চলে যায়। যে কারণে প্রতি বছর ব্রীজের এপ্রোচে মাটি ভরাট করা হলেও কাজে আসছে না।
এতে স্থানীয়দের অভিমত, ব্রীজের এপ্রোচে পাকা ব্লক দিয়ে মাটি ফেলা হলে ঢেউয়ে ভেঙে যাবে না। এছাড়া ব্রীজের দুই দিকের রাস্তা করা হলে মানুষের ভোগান্তি থাকবে না। তাই দুই উপজেলার মানুষের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ব্রীজ চলাচলের উপযোগী করতে তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানান। না হলে ব্রীজটি জনগণের কোন উপকারে আসবে না।
এ ব্যাপারে চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়নের স্থানীয় ইউপি সদস্য রনধীর কান্তি দাস (রান্টু) ও উপজেলা হাওর উন্নয়ন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ব্রীজের দুই পাশে রাস্তা না থাকায় ব্রীজটি অযতœ-অবহেলায় পড়ে আছে। এতে দুই উপজেলার জনগণের ভোগান্তি চরমে পৌছেছে। তাই জন ভোগান্তি লাঘবে জরুরী ভিত্তিতে ব্রীজের দুই পাশের এপ্রোচ সহ রাস্তা নির্মাণ করতে তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। তারা আরো বলেন, জগন্নাথপুর-দিরাইবাসীর সেতুবন্ধনের ব্রীজ থাকলেও রাস্তা না থাকায় সামাদ আজাদ ও সুরঞ্জিত সেন গুপ্তের উদ্যোগ ভেস্তে যেতে বসেছে।
এ ব্যাপারে জগন্নাথপুর উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) গোলাম সারোয়ার বলেন, কবিরপুর থেকে ভূরাখলি পর্যন্ত রাস্তাটি আমরা করলেও ব্রীজটি নির্মাণ করেছে দিরাই এলজিইডি। তবে আমাদের রাস্তা থেকে ব্রীজ পর্যন্ত মাত্র ৩০০ মিটার বাকি থাকা রাস্তার কাজ আগামীতে শেষ করা হবে। জানতে চাইলে দিরাই উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) মোঃ ইফতেখার হোসেন বলেন, অচিরেই ব্রীজ থেকে আমাদের দিরাই অংশের কাজ করা হবে।