বাজার নিয়ন্ত্রণে কঠোর হউন

8

বাংলাদেশের বাজারে করোনাভাইরাসের প্রভাব পড়েছে। হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে জিনিসপত্রের দাম। অন্যদিকে ক্রেতার চাপও বেড়েছে বাজারে। সরবরাহ চেইন বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যেতে পারে কিংবা বাজারে নিত্যপণ্য দুষ্প্রাপ্য হতে পারে এমন আশঙ্কায় অনেকেই চাল, ডাল, তেল, লবণ কিনে ঘরে মজুদ করার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় এই চাপ বেড়েছে। করোনাভাইরাসের আতঙ্কের সঙ্গে গত ১৭ মার্চ থেকে মানুষের মাঝে দেখা দেয় খাদ্যসংকটের দুর্ভাবনা। এতে চাল, ডাল, পেঁয়াজসহ নিত্যপণ্যগুলো মজুদ করতে থাকে অনেকে। এতে হঠাৎ বাজারের ওপর চাপ পড়ে। এ সুযোগ নেয় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। এসব পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয় তারা।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও খাদ্য মন্ত্রণালয় বলছে, এসব পণ্য যথেষ্ট মজুদ রয়েছে। ব্যবসায়ীরাও স্বীকার করছেন পণ্যের তেমন ঘাটতি নেই। আতঙ্কিত হয়ে খাদ্য মজুদ না করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এখনো ১৭ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য শুধু সরকারি গুদামেই আছে। সাড়ে তিন লাখ মেট্রিক টন গম মজুদ আছে। বাংলাদেশের যে রিজার্ভ আছে, তাতে অন্তত এক বছরের খাবার কেনার মতো সামর্থ্য আছে। কাজেই সেদিক থেকেও দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হওয়ার কোনো কারণ নেই। তার পরও বাজারের ওপর চাপ সৃষ্টি করা হয়েছে। দাম বেড়েছে নিত্যপণ্যের। বিস্ময়ের ব্যাপার হচ্ছে, নভেল করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে থাকায় লোকজন নিত্যপণ্যের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় ওষুধ সংগ্রহ করতেও হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। প্যারাসিটামল ও গ্যাস্ট্রিকের মতো সাধারণ ওষুধ ছাড়াও দীর্ঘমেয়াদি রোগের ওষুধও বেশ বিক্রি হচ্ছে। এরই মধ্যে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পাঁচটি দল ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তার সমন্বয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তিনটি মনিটরিং টিম ঢাকা মহানগরীর ১৬টি বাজারে চালের আড়ত, কেমিক্যালের দোকানসহ বিভিন্ন সুপারশপে অভিযান চালায়।
কথা সত্য যে করোনাভাইরাসের কারণে মানব ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ অভিঘাত মোকাবেলা করছে বিশ্ব। এর ফলে বিশ্ব অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থা বলছে, বাংলাদেশেও এর প্রভাব পড়ছে। বাজারে অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা এরই প্রমাণ। এর সঙ্গে গুজবও ছড়ানো হচ্ছে। যেকোনো ছুতায় বাজারে অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়। এ প্রবণতা কমাতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা অব্যাহত রাখতে হবে। আমরা আশা করব, সরকারের কঠোর অবস্থান বাজারকে আবার শৃঙ্খলায় ফেরাবে।