কানাইঘাটে এবাদ হত্যার ঘটনায় ২ জন গ্রেফতার

10

কানাইঘাট থেকে সংবাদদাতা :
কানাইঘাট উপজেলার দক্ষিণ বাণীগ্রাম ইউনিয়নের ছত্রপুর গ্রামে গত বুধবার রাতে সৃষ্ট সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত এবাদুর রহমানের হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার দায়ে থানা পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। আটককৃতরা হলো একই গ্রামের মৃত খলিলুর রহমানের পুত্র কামাল আহমদ (৪৫) ও মৃত তবারক আলী তবাইর পুত্র রহিম উদ্দিন (৫৫)। তাদের বৃহস্পতিবার ভোর রাতে থানা পুলিশ এলাকার জংলা বাজার ও গাছবাড়ী চৌমোহনী এলাকা থেকে রাতভর অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করে। এদিকে ছত্রপুর গ্রামের ছয়ফুল্লার পুত্র এবাদুর রহমান (৪৫) প্রতিপক্ষের অতর্কিত হামলায় নিহতের ঘটনায় কানাইঘাট থানায় তার স্ত্রী নাছিমা বেগম বাদী হয়ে গ্রেফতারকৃত কামাল আহমদ ও রহিম উদ্দিন সহ ৮জনের নাম উল্লেখ করে আরো অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জনকে আসামী করে বৃহস্পতিবার রাতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। থানার মামলা নং- ১৭, তারিখ- ৩০/০৪/২০২০ইং।
জানা যায়, গ্রামে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গ্রেফতারকৃত কামাল আহমদ, রহিম উদ্দিন গংদের সথে নিহত এবাদুর রহমান, করিম, হেলাল গংদের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। এ নিয়ে নিহত এবাদুর রহমানের পক্ষের লোকজন থানায় পূর্বে কামাল আহমদ গংদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পূর্ব বিরোধের জের ধরে গত বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে গ্রামের জামে মসজিদ থেকে তারাবির নামাজ পড়ে বাড়ি ফেরার পথে এবাদুর রহমানের ভাতিজা শিবলুকে মারধর করে প্রতিপক্ষ কামাল গংরা। তখন উপস্থিত লোকজনরা বিষয়টি মিমাংসা করে দিলেও পরবর্তীতে কামাল আহমদ গংরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এবাদুর রহমানের বসত বাড়িতে গিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। প্রতিপক্ষের এলোপাতাড়ি হামলায় এবাদুর রহমান সহ পরিবারের ৫ জন আহত হন। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে এবাদুর রহমানের মাথায় গুরুতর রক্তাক্ত জখম থাকায় তাকে সিওমেক হাসপাতালে প্রেরণ করেন চিকিৎসকরা। পথিমধ্যে এবাদুর রহমান মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। ঘটনার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করতে এলাকায় ষাড়াসি অভিযান চালিয়ে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত কামাল আহমদ ও রহিম উদ্দিনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন কানাইঘাট সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল করিম ও থানার ওসি (তদন্ত) আনোয়ার জাহিদ। তারা এবাদুর রহমান হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে বলে নিহতের স্বজনদের আশ^স্থ করেন। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, নিহত এবাদুর রহমান একজন দিনমজুর। তিনি এলাকায় নিরীহ হিসেবে চলাফেরা করতেন। তার ৪টি অবুঝ ছেলে-মেয়ে রয়েছে। যারা তাকে হত্যা করেছে তাদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তির দাবী জানিয়েছেন তারা।
এ ব্যাপারে থানার অফিসার ইনচার্জ শামসুদ্দোহা পিপিএমের সাথে কথা হলে তিনি জানান, পূর্ব বিরোধের জের ধরে এক পক্ষের হামলায় এবাদুর রহমান আহত অবস্থায় মারা গেছেন। আমরা হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত দু’জনকে গ্রেফতার করেছি। মামলার অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতার করতে এলাকায় পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। নিহতের লাশ সিওমেক হাসপাতালে মর্গে রয়েছে। ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে।