করোনা ভাইরাস রোধে সার্কের উদ্যোগ জরুরী

12

কভিড-১৯ নামের নতুন করোনাভাইরাস বৈশ্বিক মহামারির আকার ধারণ করার পর তা মোকাবেলায় জোরালো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। কোনো কোনো দেশে জারি করা হয়েছে জরুরি অবস্থা। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সীমান্ত। বিদেশ থেকে আগতদের কোয়ারেন্টাইন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। জনসমাগম নিষিদ্ধ করাসহ খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড বন্ধের মতো সিদ্ধান্ত এসেছে বিভিন্ন দেশের সরকারের পক্ষ থেকে। ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব বেড়ে গেলেও এখনো অনেক দেশ গা করছে না বলে যখন হতাশা উচ্চারণ করছে, তখনই ভিডিও কনফারেন্সে মিলিত হয়েছিলেন দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা সার্কের নেতারা। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে আয়োজিত রবিবারের এই ভিডিও কনফারেন্সে এই রোগ মোকাবেলায় সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণের ওপর জোর দিয়েছেন সার্কভুক্ত দেশগুলোর সরকার প্রধানরা। ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি ‘কভিড-১৯ ইমারজেন্সি ফান্ড’ গঠনের প্রস্তাব দিয়ে বলেছেন, প্রাথমিকভাবে ভারত এক কোটি ডলার দিয়ে এই তহবিলের শুরুটা করতে পারে। করোনাভাইরাসের মহামারি পরিস্থিতি মোকাবেলায় সার্ক সদস্যরাষ্ট্রগুলোকে সহায়তার লক্ষ্যে এই প্রস্তাব দিয়েছে ভারত। সার্কের সদস্যরাষ্ট্রগুলোর পররাষ্ট্রসচিবরা এই প্রস্তাব ও তহবিল পরিচালনার নীতি চূড়ান্ত করবেন। এ ছাড়া সার্ক রাষ্ট্রগুলোর জন্য ভারত সুনির্দিষ্টভাবে ৯টি প্রস্তাব দিয়েছে।
ভারতের দেওয়া এই প্রস্তাবগুলো অত্যন্ত কার্যকর। শুধু রোগ প্রতিরোধ কিংবা প্রতিকার নয়, সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক বিনিময়ের ক্ষেত্রেও এই প্রস্তাবগুলো কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে আমরা মনে করি। যেমন ভারত অনলাইনে প্রশিক্ষণের যে প্রস্তাবটি দিয়েছে, তাতে সব দেশই উপকৃত হবে। যেকোনো রোগ প্রতিরোধে অভিজ্ঞতা কার্যকর ভূমিকা রাখে। সার্ক রাষ্ট্রগুলোয় করোনা মোকাবেলায় সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা ও সেবাচর্চা বিষয়ে চিকিৎসক ও চিকিৎসা পেশাজীবীদের মধ্যে প্রতি সাত থেকে ১০ দিনে একবার করে ভিডিও কনফারেন্স আয়োজনের প্রস্তাবটিও প্রশংসার দাবি রাখে। এ ছাড়া বাণিজ্য কর্মকর্তাদের মধ্যে ভিডিও কনফারেন্স, সার্কের সব ভাষায় তথ্য-উপাত্তসংবলিত ওয়েবসাইট প্রণয়নে সহায়তাসহ অন্য প্রস্তাবগুলোও বিবেচনার দাবি রাখে।
গত রবিবার বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ১৫৬টি দেশ ও অঞ্চলে করোনা ছড়িয়েছে। বাংলাদেশেও নতুন করে আক্রান্তের খবর পাওয় গেছে। এ অবস্থায় পারস্পরিক বিনিময়ের মাধ্যমে সম্মিলিতভাবে করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সার্ক প্ল্যাটফর্ম কার্যকর হবে বলে আমরা মনে করি।