সংবাদ সম্মেলনে মালিক পক্ষের অভিযোগ ॥ ঝুঁকিপূর্ণ রাজা ম্যানশন পুন:নির্মাণে অন্তরায় মার্কেটের ব্যবসায়ীগণ

4
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করছেন রাজা ম্যানশনের স্বত্ত্বাধিকারী দেওয়ান শমসের রাজা চৌধুরী।

স্টাফ রিপোর্টার :
নগরীর জিন্দাবাজারের রাজা ম্যানশনকে সিলেট সিটি করপোরেশন ও ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করার পরও মার্কেটের ব্যবসায়ীদের অসযোগিতার কারণে পুন:নির্মাণ করা যাচ্ছে না। বৃহস্পতিবার দরগাগেটস্থ নিজ বাসায় সংবাদ সম্মেলনে ভবন মালিকদের পক্ষে এ অভিযোগ করেন হাসন রাজার প্রপৌত্র দেওয়ান শমশের রাজা চৌধুরী।
লিখিত বক্তব্যে দেওয়ান শমসের রাজা চৌধুরী বলেন, সিটি করপোরেশনের ঝুঁকিপূর্ণ তালিকায় রাজা ম্যানশন থাকায় সম্প্রতি দফায় দফায় ভূমিকম্পের পর দশ দিন মার্কেটটি বন্ধ রাখা হলেও আবার খুলে দেওয়া হয়েছে। সিটি করপোরেশন ঝুঁকিপূর্ণ ভবন কিসের ভিত্তিতে দশদিন পর আবার খুলে দিলো তা আমাদের বুঝে আসছে না। তিনি মার্কেটের ভাড়াটিয়াদের ঝুঁকিপূর্ণ ভবন থেকে সরে যাওয়ার আহবান জানিয়ে বলেন, তা না হলে মাকের্টে যে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে মালিক পক্ষ এর দায়ভার নিবে না।
শমশের রাজা চৌধুরী জানান, দোকান মালিকরা ১৮৭টি দোকান থেকে মাসে ২৫ লাখ টাকার মত ভাড়া আদায় করেন। অথচ মালিক পক্ষকে দেওয়া হয় মাত্র ৫০ হাজার টাকা। ভাড়ার অনেক টাকা এখনও বকেয়া রয়েছে। ভাড়াটিয়ারা অবৈধভাবে সাব ভাড়া দিয়ে লাখ লাখ টাকা আদায় করছেন। তারা ট্যাক্স ফাঁকি দিচ্ছেন।
তিনি বলেন, রাজা ম্যানশন ভেঙে সেখানে আমরা আধুনিক বিপণী বিতান নির্মাণ করতে চাই। ভাড়াটিয়া দলিল অনুযায়ী নতুন ভবনের তৃতীয়তলা পর্যন্ত বর্তমান দোকান মালিকদের দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরও তারা মার্কেট ছাড়ছেন না। তারা ঝুঁকি নিয়ে ব্যবসা করছেন। যার কারণে মার্কেটের মালিক হিসেবে আমাদেরও আইনি ঝামেলায় ফেলছেন তারা। তিনি বলেন, ২০১৬ সালে সিলেট সিটি করপোরেশন ও ফায়ার সার্ভিস ভবনটি ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিল।
তিনি বলেন, তাদের পরিবার একটি দানশীল পরিবার। জনস্বার্থে ১৯৭৫ সালে ৪২ শতক জায়গার ওপর তার প্রপিতামহ হাসন রাজার নামের রাজা অংশ নাম ধারণ করে রাজা ম্যানশন তৈরি করেন তার পিতা সাবেক মন্ত্রী দেওয়ান তৈমুর রাজা চৌধুরী। উত্তরাধিকারী সূত্রে বর্তমানে তিনি ছাড়াও তার ভাই দেওয়ান শাহীন রাজা চৌধুরী ও দেওয়ান শাহবাজ রাজা চৌধুরী ভোগ দখল করে আসছেন। অর্ধশত বছর বয়সি ভবনটি এখন আর সংস্কার উপযোগী নয়। তার পরও বতর্মানের সংস্কার কাজ শুর” করেছেন দোকান মালিকরা। ভবন মালিককে না জানিয়ে তারা এমন কাজ করতে পারেন না।
শমশের রাজা জানান, গত ২১ ও ৩০ মে সিলেটে একাধিকবার ভূমিকম্প হওয়ায় আতঙ্ক দেখা দেয়। সিটি করপোরেশন ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে ৩১ মে ১০ দিনের জন্য বন্ধ করে দেয়। তারা সিটি মেয়রের সাথে সাক্ষাৎ করে ভবনটি স্থায়ীভাবে বন্ধ রাখার অনুরোধ করেন। কিন্তু মেয়র কোনো আশ্বাস দেননি। এ অবস্থায় ১৩ জুন পত্রিকায় জর”রি আইনগত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে ৩০ দিনের মধ্যে ভবনটি খালি করে মালিক পক্ষকে সমঝে দেওয়ার কথা জানানো হয়। কিন্তু রাজা ম্যানশন দোকান মালিক সমন্বয় কমিটির নামে একটি অবৈধ কমিটি গঠন করে তারা পাল্টা বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ভবনের ক্ষতি হলে দায়ভার মালিকপক্ষের ওপর বর্তাবে বলে উল্লেখ করেছেন। যা আমাদের বিস্মিত করেছে। এছাড়া ভবনটি খালি না করেই দোকান মালিকরা সংস্কার শুর” করেছেন। এ ক্ষেত্রে আমদের কিছু জানানো হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে শমশের রাজা ভবনটি ভেঙে সেখান আধুনিক বিপনী বিতান করে পূর্বের ন্যায় তালিকানুযায়ী দোকান মালিকদের বরাদ্দ দেওয়ার কথাও জানান। জানমালের ক্ষতিরোধে ঝুকিপূর্ণ এই ভবন রাজা ম্যানশন বন্ধ রাখতে জনমত গঠনে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।