কাজিরবাজার ডেস্ক :
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বলেছেন, আমরা ঠিক করেছি অনূর্ধ্ব-২১ দল গঠন করব। আর এই দলে সুযোগ পাবে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী দলের ক্রিকেটাররা। ওদের আমরা দুই বছরের ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করব। এই দুই বছর এই দলের ক্রিকেটাররা প্রত্যকে মাসে ১ লাখ টাকা করে পাবে।
বুধবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বিসিবি সভাপতি আরও বলেন, আমরা দেখব তারা যদি উন্নতি করতে পারে তাহলে চুক্তিতে থাকতে পারবে, না হয় বাদ পড়ে যাবে। এদের উন্নয়নে যত প্রকার সুযোগ-সুবিধা দেয়া যায় আমরা তাই কবর।
দক্ষিণ আফ্রিকার বৈরী কন্ডিশনে শক্তিশালী ভারতকে ৩ উইকেটে হারিয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে প্রথম শিরোপা জয় করা যুবাদের নিয়ে পাপন বলেন, ওরা আমাদের গৌরব, তারা বিশ্বকাপ জয় করে এসেছে। বিশ্বকাপ জেতা অনেক কঠিন কাজ। তবে এখান থেকে সামনে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা অনেক অনেক কঠিন। আমি ওদের বলেছি আর্থিক বিষয়গুলো নিয়ে তোমাদের কোনো চিন্তা করার কিছু নেই।
বিসিবি সভাপতি আরও বলেন, আগামী সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ক্রিকেটারদের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সংবধর্না দেবেন। ক্রিকেটাররা আগামীকাল বাড়িতে যাবে। ওরা যাতে সুন্দরভাবে বাড়িতে পৌঁছতে পারে সে জন্য আমরা সব ব্যবস্থা করে দিয়েছি।
এদিকে বুধবার বিকেলে বিশ্বকাপজয়ী বাংলাদেশ যুব ক্রিকেট দল ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পা রাখার পর বিশ্বজয়ী আকবর আলিদের সংবর্ধনা জানায় ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ও বিসিবি।
সেখান থেকে বিশ্বকাপজয়ী দলকে ‘চ্যাম্পিয়ন বাস’-এ করে নিয়ে আসা হয় মিরপুর শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। বিমানবন্দরের মতো স্টেডিয়ামও লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে আগে থেকেই।
মিরপুর-১০ নম্বর থেকে ২ নম্বর পর্যন্ত এবং স্টেডিয়ামের সামনের এলাকায় অন্তত হাজার দশেক মানুষ ব্যানার, ফেস্টুন, জার্সি এবং জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে অপেক্ষমাণ থাকে বিশ্বজয়ী বীরদের বরণ করে নিতে।
আকবর আলিদের বাস মিরপুর ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে অপেক্ষার অবসান ঘটে সেখানে অপেক্ষমাণ ক্রিকেট ভক্ত-সমর্থকদের। ক্রিকেটাররা স্টেডিয়ামে এসে পৌঁছার আগ পর্যন্ত পুলিশ প্রশাসন দর্শকদের উপচে পড়া ভিড় সামলাচ্ছিলেন।
কিন্তু আকবর-ইমন-রাকিবুলরা স্টেডিয়ামে প্রবেশ করার পরপরই সেই উপচে পড়া ভিড় সামলাতে পারেনি পুলিশ। হুড়মুড়িয়ে দর্শকরা প্রবেশ করে স্টেডিয়াম চত্বরে। এ সময় অন্তত আড়াই থেকে তিনশ মোটরসাইকেল শোভাযাত্রাও প্রবেশ করে স্টেডিয়ামের মূল চত্বরে।
এরপর অবশ্য দর্শকদের জন্য খুলে দেয়া হয় স্টেডিয়ামে গ্র্যান্ড স্ট্যান্ড গ্যালারির গেট। দর্শকরা সবাই বিশ্বজয়ী বীরদের বরণের জন্য চলে যায় গ্র্যান্ড স্ট্যান্ডে।
বিসিবি কার্যালয় থেকে স্টেডিয়ামে নেমে আসার পথে আগে থেকেই বিছানো ছিল লাল গালিচা। আন্তর্জাতিক ম্যাচ শেষে যে জায়গায় পুরস্কার বিতরণ করা হয়, সেখানে রাখা ‘ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়ন’ লেখা ব্যাকড্রপ। যার ঠিক সামনেই টেবিলে সাজানো ‘বিশ্বচ্যাম্পিয়ন’ লেখা কেক।
আকবর আলিরা লাল গালিচা দিয়ে সেই জায়গায় পৌঁছার পর আনা হয় বিশ্বকাপের ট্রফিটি। এরপর বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন আর বাংলাদেশ যুব দলের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক আকবর আলি একসঙ্গে ট্রফি উঁচিয়ে অংশ নেন ফটোসেশনে।
দুই কেকের মাঝখানে রাখা হয় ট্রফিটি। তারপরই কেক কেটে উদযাপন। কনফেত্তি আর আলোর ঝলকানিতে উৎসবমুখর এক পরিবেশ শেরেবাংলায়।
অপর দিকে অতীতে অনেকবারই বিজয়ী ক্রীড়াবিদদের বিমানবন্দরে ফুল দিয়ে বরণ করে নিয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু বিমানবন্দরে সম্পূর্ণ অন্য আবহ, অন্যরকম উৎসব। এবার যে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের বরণ করে নিলো বাংলাদেশ।
বুধবার বিকেল ৪টা ৫৫ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেটের বিশ্ব বিজয়ী টাইগাররা।
এ সময় আকবর আলী, তৌহিদ হৃদয়দের ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। এ সময় ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ও বিসিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গ থেকে দুবাই হয়ে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের ইকে-৫৮৬ ফ্লাইটে দেশে আসেন লাল-সুবজের প্রতিনিধিরা।
যুবা টাইগারদের দেশে ফেরা উপলক্ষে ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে জাঁকজমক অভ্যর্থনার আয়োজন করা হয়।