কাজিরবাজার ডেস্ক :
সাবেক নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খানের বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকার মানহানি মামলা করেছেন নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের চেয়ারম্যান ও চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন।
বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টায় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করে নিরাপদ সড়ক চাই কর্তৃপক্ষ।
প্রতিষ্ঠানটির যুগ্ম মহাসচিব লিটন এরশাদ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, পরিবহন শ্রমিক নেতা শাজাহান খান এমপির বিরুদ্ধে মানহানির অভিযোগ এনে ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালতে ১০০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা করেছেন নিরাপদ সড়ক চাইয়ের (নিসচা) প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন। মামলা নং- ০৯/২০২০, তারিখ: ১২.০২.২০২০। ইলিয়াস কাঞ্চনের পক্ষে মামলাটি করেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের এডভোকেট মো. রেজাউল করিম।
প্রসঙ্গত, গত ৮ ডিসেম্বর ২০১৯ পরিবহন শ্রমিক নেতা শাজাহান খান এমপি নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে এক অনুষ্ঠানে নিরাপদ সড়ক চাইয়ের (নিসচা) প্রতিষ্ঠাতা এবং চেয়ারম্যান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন এবং নিরাপদ সড়ক চাইসহ তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নির্লজ্জ মিথ্যাচারের মাধ্যমে অসত্য, বানোয়াট ও উদ্ভট কিছু প্রসঙ্গ টেনে এনে চরিত্র হরণের চেষ্টা চালিয়েছেন।
সেদিন তিনি বলেছিলেন, ‘ইলিয়াস কাঞ্চন কোথা থেকে কত টাকা পান, কি উদ্দেশ্যে পান, সেখান থেকে কত টাকা নিজে নেন, পুত্রের নামে নেন, পুত্রবধূর নামে নেন সেই হিসাবটা আমি জনসম্মুখে তুলে ধরবো’- যা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
শাহজাহান খানের এমন মিথ্যাচারে যেহেতু সেই সময় ইলিয়াস কাঞ্চন দেশের বাইরে অবস্থান করছিলেন তখন নিরাপদ সড়ক চাইয়ের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানিয়ে এ মিথ্যা বক্তব্য প্রত্যাহারের জন্য ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেয়া হয়, যা সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়।
কিন্তু শাজাহান খান তার এ বক্তব্য প্রত্যাহার এবং ক্ষমা প্রার্থনা না করায় নিসচা চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন ১০ ডিসেম্বর ২০১৯ রাতে দেশে ফিরেই পরদিন ১১ ডিসেম্বর ২০১৯ জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে নিজের বক্তব্য তুলে ধরেন এবং আবারও শাজাহান খানকে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন এ মিথ্যা বক্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা প্রার্থণার জন্য।
সংবাদ সম্মেলনে সেদিন ইলিয়াস কাঞ্চন জাতির উদ্দেশে বলেন, তিনি (শাজাহান খান) এসব মানহানিকর কথা বলেছেন আমাকে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য।
সংবাদ সম্মেলনে ইলিয়াস কাঞ্চন সেদিন নিজের, পরিবারের সদস্যদের জীবনের নিরাপত্তা নিয়েও শঙ্কা ব্যক্ত করেন।
ইলিয়াস কাঞ্চন সেদিন প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘আমি যখন দেশের বাইরে ছিলাম তখন কেন এসব প্রশ্নের অবতারণা। আমি মনে করি এটা পেছন থেকে ছুরিকাঘাতের শামিল। যদি সৎসাহস থাকে তাহলে সামনে এসে প্রমাণ নিয়ে বসুন। কিন্তু তা না করে অসত্য তথ্য উপস্থাপন করে তিনি নিজেকে জাহির করতে চাইছেন। স্বজন হারিয়ে সবার সহযোগিতায় ২৭ বছর ধরে আন্দোলন করছি আমি। কিন্তু এখানে কেন আমার পরিবারকে টেনে আনা হয়েছে। যেহেতু টেনে আনাই হয়েছে শাজাহান খান সাহেবের দায়িত্ব হলো এর স্বপক্ষে প্রমাণ হাজির করা। নতুবা ক্ষমা চাওয়া। তা না হলে আইনের পথে হাঁটতে বাধ্য হবো।’
কিন্তু আজ অবধি শাজাহান খান তার বক্তব্যের স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ জাতির সামনে হাজির করতে পারেননি এবং ক্ষমাও চাননি। যে কারণে নিজের অবস্থান অনুযায়ী বিশেষ করে তিনি দুর্নীতির যে মিথ্যা অপবাদ দিয়েছেন তা আমি বহন করতে পারি না। যে কারণে আমাকে জাতির সামনে বিষয়টি পরিষ্কার করতে আদালতের আশ্রয় নিতে হলো। আমরা চাই প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসুক।