জয়ের ধারা অব্যাহত থাকুক

11

‘হিমালয় থেকে সুন্দরবন, হঠাৎ বাংলাদেশ/ কেঁপে কেঁপে উঠে পদ্মার উচ্ছ্বাসে,/ সে কোলাহলের রুদ্ধস্বরের আমি পাই উদ্দেশ।’ কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের কবিতার পঙিক্ত থেকে নিয়েই বলতে হবে ‘জলে ও মাটিতে ভাঙনের বেগ’ নয়, সারা বাংলাদেশ আজ ক্রিকেট আবেগে ভাসে। ৯ ফেব্রুয়ারি রাতে বাংলাদেশের অনূর্ধ্ব ১৯ ক্রিকেট দল যে কীর্তি গড়ল, তাতে আবারও বলতে হয়, ‘শাবাশ বাংলাদেশ, এ পৃথিবী/ অবাক তাকিয়ে রয়!’ বিশ্বকাপ জয়ী যুবদলকে অভিনন্দন জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা অভিনন্দন জানিয়েছেন। অভিনন্দিত করেছেন বিশ্ব ক্রিকেটের অনেক তারকাও। মুজিববর্ষের শুরুতে দেশ ও জাতির জন্য ক্রিকেট দলের এই উপহার অসামান্য।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গনকে নাড়া দিয়ে সাড়া ফেলা বাংলাদেশের এটাই প্রথম কোনো বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট জয়। দল যখন দল হিসেবে খেলে, ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স যখন ঋদ্ধ করে পুরো দলকে, তখন অপ্রাপ্তির হতাশা নয়, প্রাপ্তির উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে দেওয়া যায় সবার মধ্যে। শুধু অনূর্ধ্ব উনিশ দল নয়, বাংলাদেশ জিতেছে দক্ষিণ আফ্রিকার মাঠে। এ খেলা থেকে অনেক কিছু অর্জন করল প্রথমবারের মতো ফাইনালে উঠেই বাজিমাত করে দেওয়া বাংলাদেশ। দেখিয়ে দিল শুধু ধৈর্য ধারণ করতে পারলে ক্রিকেটে অনেক আগেই অনেক কিছু অর্জন করা সম্ভব ছিল। স্নায়ুর প্রবল চাপ সামলে প্রতিপক্ষকে রুখে দাঁড়ানোর যে মানসিক শক্তি দরকার তা ছিল যুবাদের। আর সে কারণেই কোনো অঘটন ঘটেনি। অথচ তীরে এসে তরি ডোবার অনেক উদাহরণ তো আছে বাংলাদেশের। এবার আর তার পুনরাবৃত্তি হয়নি। বলে বলে ম্যাচ এগিয়েছে। পেন্ডুলামের মতো দুলেছে ম্যাচের ভাগ্য। দেশকে প্রথম কোনো বৈশ্বিক শিরোপা জয়ের আনন্দ উপহার দিয়ে রচনা করলেন ইতিহাস।
যুবদের এই জয় সিনিয়রদের জন্য অনুপ্রেরণা হতে পারে। বুঝতে অসুবিধা হয় না, এই দলের গ্রুমিংটা ছিল ইতিবাচক। ক্রিকেট এটা খুব জরুরি। আমাদের প্রত্যাশা, জয়ের এই ধারা অব্যাহত থাকবে। যুবাদের বিশ্বজয় আরো বড় স্বপ্ন দেখাচ্ছে। সেই স্বপ্ন পূরণে প্রয়োজন সঠিক পরিকল্পনা ও প্রতিজ্ঞা।