স্টাফ রিপোর্টার :
সিলেট মহানগরীর দুটি স্থানে এডিস মশার লার্ভা (ডেঙ্গু রোগের জীবাণু) শনাক্ত করা হয়েছে। ২৫ ও ২৬ নং ওয়ার্ডের ভার্থখলা, রেলওয়ে স্টেশন ও বাসস্টেশন সংলগ্ন এলাকা থেকে জীবাণু শনাক্তের লক্ষ্যে স্যাম্পল সংগ্রহ করা হয়েছিলো। গত রবিবার পাওয়া রিপোর্টে এসব নমুনায় ডেঙ্গু রোগের জীবাণু শনাক্ত হয়। তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. এসএম শাহরিয়ার।
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানায়- সিসিকের ২৫ ও ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের ভার্থখলা, রেলওয়ে স্টেশন ও বাসস্টেশন সংলগ্ন এলাকায় অনেকগুলো টায়ারের দোকান রয়েছেন। রুটিন অনুযায়ী স্বাস্থ্য বিভাগের একটি টিম বিভিন্ন এলাকার ডেঙ্গুর জীবাণু শনাক্তের লক্ষ্যে স্যাম্পল সংগ্রহ করে। তারই ধারাবাহিকতায় এসব টায়ারের দোকানে পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকা টায়ারে জমা পানি (স্যাম্পল) গত জুলাই মাসে সংগ্রহ করা হয়। এসব স্যাম্পল পরীক্ষার পর জীবাণু শনাক্ত হয়েছে।
এ বিষয়ে সিলেটের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. জন্মেজয় দত্ত বলেন- আমরা রুটিন অনুযায়ী প্রতিটি এলাকা থেকে স্যাম্পল সংগ্রহ করি। তারপর আমাদের ল্যাবে পাঠাই। ল্যাবে পরীক্ষার পর জীবাণু শনাক্ত হলে ওই এলাকার বাসিন্দাদের সচেতন হওয়ার আহ্বান জানাই। এবারও জীবাণু শনাক্ত হওয়া এলাকার বাসিন্দাদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। কোনো স্থানে পানি জমে থাকলে ডেঙ্গুর আশঙ্কা থাকে। তাই আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। যাতে কোথাও জমে থেকে এডিস মশার লাভা তৈরি না হয়। তিনি আরও বলেন- গত জানুয়ারি মাসের ১ তারিখ পর্যন্ত ৪ জন রোগী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সিলেটের হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তাদের সবাই ঢাকা থেকে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সিলেটের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। সব মিলিয়ে গত ৭ মাসে সিলেট জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ওই ৪ জনই।
ডা. জন্মেজয় দত্ত বলেন, ইতোমধ্যে আমরা ডেঙ্গুর জীবাণু শনাক্তের কথা সিটি কর্পোরেশনকে বলেছি। সিসিক প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা নেবে। আমরাও তাদের সহযোগিতা করবো। তবে এখন এ বিষয়ে কিছু জানেন না বলে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় জানিয়েছেন সিটির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন- আমি এখন পর্যন্ত এ তথ্য জানি না। তবে আগামী সপ্তাহে আমরা মশক নিধন অভিযান শুরু করবো।
বৃষ্টির জন্য অভিযান চালানো যাচ্ছে না উল্লেখ করে ডা. জাহিদুল ইসলাম বলেন- আমরা তো অভিযান চালাতে চাই। কিন্তু বৃষ্টির জন্য পারছি না। বৃষ্টির কারণে আমাদের ছিটানো ওষুধ মুছে যায়। ফলে কার্যকর ফলাফল পাওয়া যায় না। তবে আগামী শনি অথবা রবিবারের দিকে আমরা অভিযান শুরু করবো।
সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. এসএম শাহরিয়ার সোমবার সন্ধ্যায় বলেন- আমরা ভার্থখলা, রেলওয়ে স্টেশন ও বাসস্টেশন সংলগ্ন এলাকা থেকে জীবাণু শনাক্তের লক্ষ্যে লার্ভা সংগ্রহ করি। পরবর্তীতে এটি পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠালে ডেঙ্গুর জীবাণু শনাক্ত হয়।
ডা. এসএম শাহরিয়ার আরও বলেন- লার্ভা পাওয়া গেলেও এখন পর্যন্ত সিলেটে কোনো রোগী পাওয়া যায়নি। আমাদের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের প্রতিদিনের রিপোর্ট অনুসারে এ বছর সিলেটে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়নি। তবে চলতি বছরের শুরুর দিকে ৪ জন রোগী শনাক্ত হয়েছিলেন, তারা সবাই ঢাকা থেকে আক্রান্ত হয়ে আসছিলেন।