আস্থার সংকটে ধস নেমেছে পুঁজিবাজারে। কমছে মূল্যসূচক ও লেনদেন। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে সূচক কমে অবস্থান করছে চার হাজার ৩৩১ পয়েন্টে, যা গত তিন বছর সাত মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে ২০১৬ সালের ১৭ মে এই সূচকের অবস্থান ছিল চার হাজার ৩২৬ পয়েন্টে। অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসইএস বা শরিয়াহ সূচক ১২ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৯৮৩ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ২৮ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৪৫১ পয়েন্টে। যে খবরটি সবচেয়ে ভয়ের তা হচ্ছে, পুঁজিবাজারে মন্দার প্রভাবে ডুবতে বসেছে আইসিবি। ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ—আইসিবি হচ্ছে পুঁজিবাজার স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে গঠিত রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান। রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে সরকারের কাছ থেকে মূলধন নিয়ে পুঁজিবাজারকে চাঙ্গা রাখতে বড় ভূমিকা পালন করে আইসিবি। চলতি অর্থবছরের তিন মাসের হিসাবে লোকসান করেছে ১৩৪ কোটি টাকা।
২০১৯ সালজুড়েই ভালো যায়নি পুঁজিবাজার। আস্থাহীনতায় দেশি বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রির পাশাপাশি বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও অব্যাহতভাবে শেয়ার বিক্রি করে বাজার ছেড়েছে। গত এক বছরে মূলধন উত্তোলন ও পুঁজিবাজারের বিক্রয়যোগ্য শেয়ারের দাম ব্যাপকভাবে কমে গেছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তথ্যানুযায়ী, ২০১৯ সালে গত ১১ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন মূলধন উত্তোলন হয়েছে। বিক্রয়যোগ্য শেয়ারের দাম কমেছে প্রায় ৪৮ হাজার ৮০১ কোটি টাকা। গত এক বছরে মূল্যসূচক কমেছে ৯৬৬ পয়েন্ট। দুই লাখের বেশি বিও হিসাব বন্ধ করেছে বিনিয়োগকারীরা। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো চেষ্টাই পুঁজিবাজারকে চাঙ্গা করতে পারছে না।
সম্প্রতি বড় মূলধনী কোম্পানির শেয়ারের দামে উত্থান-পতন সম্পর্কে বিনিয়োগকারীকে ধারণা দিতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ‘সিএনআই-ডিএসই সিলেক্ট ইনডেক্স’ চালু হয়েছে। এই সূচকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৪০টি বৃহৎ ও সবচেয়ে লিকুইড স্টকের কোম্পানিকে রাখা হয়েছে। এই সূচক চালুর ফলে দেশের পুঁজিবাজার বিশ্বব্যাপী ব্র্যান্ডিং হবে। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে আরো বেশি আগ্রহী হবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের। আসলে বাজারে নতুন পণ্য দরকার, যা বিনিয়োগকারীদের বাজার সম্পর্কে আগ্রহী করবে। সবার আগে ফেরাতে হবে আস্থা। আস্থার সংকট কাটানো না গেলে বাজার ঘুরে দাঁড়াবে না।