কাজিরবাজার ডেস্ক :
র্যাবের টানা ছত্রিশ ঘণ্টার অভিযানের মুখে শেষ পর্যন্ত ধরা পড়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীর ধর্ষক মজনু। মঙ্গলবার সারাদিন বনানী রেলস্টেশনে কড়া নজরদারিতে রাখার পর বুধবার ভোর ৪টা ৫০ মিনিটে তাকে শ্যাওড়া রেলক্রসিং এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। পেশায় হকার মজনু চুরি-ছিনতাইয়ের সঙ্গেও জড়িত। তোলপাড় সৃষ্টিকারী এই ঘটনায় সে একাই জড়িত বলে স্বীকার করলেও র্যাব বলছে, ‘মজনু সিরিয়াল রেপিস্ট’। এর আগেও সে একই স্থানে একাধিকবার ভাসমান ভিক্ষুক, প্রতিবন্ধী ও অসহায় নারীদের একই কায়দায় ধর্ষণ করেছে। ক্লুলেস এই মামলার একমাত্র আসামি হিসেবে তাকে ধরা সম্ভব হয়েছে ম্যানুয়াল ও তথ্য প্রযুক্তির সহযোগিতায়। গ্রেফতারের পরপরই তার ছবি দেখে ধর্ষক হিসেবে শনাক্ত করেন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ভিকটিম। চাঞ্চল্যকর এই ধর্ষণকাণ্ডে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ ও প্রতিবাদী হয়ে উঠলেও, মজনুর গ্রেফতার সংবাদে তাদের মাঝে কিছুটা স্বস্তি নেমে আসে। আজ (বৃহস্পতিবার) মজনুকে আদালতে পেশ করে রিমান্ড চাইবে মামলার তদন্তকারী সংস্থা ডিবি। গ্রেফতারের কয়েক ঘণ্টার পর তাকে কাওরানবাজারে র্যাব মিডিয়া কার্যালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি করা হয়। এরপর লে.কর্নেল সারোয়ার বিন কাশেম জনাকীর্ণ সাংবাদিক সম্মেলনে মজনুকে গ্রেফতারের আগে পরের নাটকীয় সব ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দেন।
র্যাব জানিয়েছে, মজনু মাদকাসক্ত। তার বাড়ি হাতিয়ায়। সে এর আগেও ওই একই এলাকায় ভিক্ষুক ও প্রতিবন্ধী নারীকে ধর্ষণ করেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী যেদিন ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন, সেদিন মজনু অসুস্থতার কারণে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে গিয়েছিল। সেখান থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্রীকে দেখে ও তাকে ধর্ষণ করার জন্য টার্গেট করে। মেয়েটি কুর্মিটোলায় বাস থেকে নামার পর মজনু অনুসরণ করে তার গলা চেপে ধরে। তাকে রাস্তার কিনারা থেকে ঝোপঝাড়ের পেছনে নিয়ে যায়। এরপর তাকে কয়েকবার কিল-ঘুষিও মারে। ধর্ষণের সময় কয়েকবার তার গলা টিপে হত্যার হুমকি দেয় মজনু। সে ওই ছাত্রীকে তিন ঘণ্টা সেখানে রেখেছিল। এর মধ্যে মেয়েটি কয়েকবার অচেতন হয়ে পড়ে। সর্বশেষ মেয়েটির যখন জ্ঞান ফেরে- তখন সে কৌশলে সেখান থেকে পালিয়ে রাস্তার ওপারে চলে যায়। মজনুর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে সারোয়ার বিন কাশেম জানান, ধর্ষণের সময় মজনু একা ছিল, আর কেউ ছিল না। সে একজন ছিনতাইকারী এবং সিরিয়াল রেপিস্ট। তার কাছ থেকে কোন অস্ত্র পাওয়া যায়নি। এর আগেও বেশ কয়েকজন বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ও ভিক্ষুক নারীকে এই ঝোপঝাড়ে এনে ধর্ষণ করে মজনু।