বিমানবন্দরে যাত্রী হয়রানি বন্ধ হউক

60

বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বেসামরিক বিমান সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ব্যবস্থাপনা ও সেবা নিয়ে যাত্রী, ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকে এখনো অভিযোগ ওঠে। কাক্সিক্ষত সুনাম এখনো অর্জন করতে পারেনি সংস্থাটি। যাত্রীরা প্রায়ই অভিযোগ করেন, তাঁরা টিকিট কাটতে গিয়ে টিকিট পান না। অনেক চেষ্টা-তদবির করে টিকিট জোগাড় করতে হয় অথবা কালোবাজারিদের কাছ থেকে বেশি দামে কিনতে হয়। অথচ বিমান ছাড়ার সময় দেখা যায় অনেক সিট খালি। এমন অভিযোগও রয়েছে, বিমানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা টাকার বিনিময়ে বেসরকারি বিমান সংস্থাগুলোর অনুকূলে টিকিটের অব্যবস্থাপনা জিইয়ে রাখছেন। ফ্লাইট-সূচিতেও প্রায়ই গড়বড় হয়। তেমনি অভিযোগ আছে বিমানবন্দরের সেবা নিয়েও। একটি সিন্ডিকেট হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের যাত্রীসেবা প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে ‘সোনার তরী’ ও ‘অচিন পাখি’ নামে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের দুটি নতুন ড্রিমলাইনার বোয়িং ৭৮৭-৯ এবং বিমানের একটি নতুন মোবাইল অ্যাপসেরও উদ্বোধন করেন তিনি। নির্মাণাধীন তৃতীয় টার্মিনাল প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে শাহজালাল বিমানবন্দরের বর্তমান যাত্রী ধারণক্ষমতা ৮০ লাখ থেকে বেড়ে দুই কোটি হবে। কার্গোর ধারণক্ষমতা বর্তমান দুই লাখ টন থেকে বেড়ে পাঁচ লাখ টন হবে। একক নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে কেন্দ্রীয়ভাবে মনিটরের মাধ্যমে নতুন টার্মিনালটির সব কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা সম্ভব হবে। তৃতীয় টার্মিনালের নির্মাণকাজ ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের দুটি নতুন ড্রিমলাইনার বোয়িং ৭৮৭-৯ উদ্বোধন শেষে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী অব্যবস্থাপনার বিষয়টিই তুলে এনেছেন। যাত্রীসেবার বিষয়ে তিনি বলেছেন, ‘বিমানে যাত্রীসেবার পাশাপাশি লাভের বিষয়টাও দেখতে হবে। টিকিট নেই, বিমান খালি যায় এ অবস্থা যেন না চলে। এ ছাড়া বিমানে যাত্রীরা যাতে হয়রানি না হয় সে জন্য কর্তৃপক্ষকে কড়া নজরদারি করতে হবে। আমাদের দেশের যাঁরা বিদেশে থাকেন তাঁরা অত্যন্ত কষ্ট করে পয়সা উপার্জন করেন। তাঁদের পাঠানো টাকায় বাংলাদেশের উন্নয়ন হয়। তাঁরা যেন কোনোক্রমেই এই বিমানবন্দরে নেমে হয়রানির শিকার না হন এ বিষয়টা লক্ষ রাখতে হবে।’ অন্যদিকে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা বিষয়ে তিনি বলেছেন, ‘নিরাপত্তার যে নিয়মাবলি রয়েছে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে, আমাদের সব যাত্রীকে সেটা মেনে নিতে হবে।’
হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেমে হয়রানির সম্মুখীন হতে হয়, এমন অভিযোগ ভুক্তভোগী যাত্রীদের। বিমানের সেবা নিয়েও প্রশ্ন আছে। এসব কাটিয়ে উঠে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ও হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মান অর্জন করতে হবে। আর এর জন্য সবার আগে প্রয়োজন এখানে কর্মরত সবার আন্তরিকতা। আমরা আশা করব, বিমান ও বিমানবন্দরকে আধুনিক ও আন্তর্জাতিক মানের করে গড়ে তোলা হবে।