শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শান্তিশৃংখলা চাই

11

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ডাকসুর নির্বাচিত ভিপি নূরুল হক ও তার সহযোগীদের ওপর হামলার অভিযোগে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের অন্তত তিনজনকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। অন্যদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। এর পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে যথাযথ সাংগঠনিক ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। উল্লেখ্য, গত রবিবার দুপুরে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নামে কতিপয় দুর্বৃত্ত এবং ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কৃত কয়েক নেতা-কর্মী ডাকসু ভবনে ভিপি নূর ও সহযোগীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে নূরসহ কয়েকজন গুরুতর আহত হন। এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ঢাবি শিক্ষক সমিতি। এর পাশাপাশি ভিপি নূরকেও তার বিভিন্ন কর্মকা- ও বক্তব্যে সংযত এবং দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা। কোন গঠনতন্ত্র ও আহ্বায়ক কমিটি ছাড়াই কয়েক মাস আগে ঢাবিতে আবির্ভাব ঘটে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের। সংগঠনটির কতিপয় নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে কারণে-অকারণে হামলা, ভাঙচুর ও চাঁদাবাজির অভিযোগও উঠেছে। এর সঙ্গে যোগ দিয়েছে ঢাবি ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কৃত কয়েক নেতা-কর্মী। এরাই মূলত ভিপি নূরের ওপর হামলার জন্য দায়ী ও দোষী সাব্যস্ত হয়েছে। তবে ভিপি নূরও যে ধোয়া তুলসীপাতা এমন বলা যাবে না। ডাকসু ভবনে তার বহিরাগতদের নিয়ে যাওয়ার কথা নয়। তদুপরি ভারতের নাগরিকত্ব বিল কিংবা নাগরিকপঞ্জি নিয়ে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য রাখার জন্য রাষ্ট্র ও সরকার রয়েছে। এ নিয়ে রাজনীতি করা ডাকসু ভিপির কাজ হতে পারে না। তথ্যমন্ত্রী যথার্থই প্রশ্ন তুলেছেন যে, নূরের ওপর হামলা কোন ষড়যন্ত্রের অংশ কিনা তা খতিয়ে দেখতে হবে। গোয়েন্দা সংস্থা তা দেখবে নিশ্চয়ই। এর বাইরেও ইতোপূর্বে ভিপি নূরের অতীতের বিভিন্ন কর্মকা-সহ দুর্নীতি-অনিয়ম নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। বিভিন্ন ঠিকাদারি কাজ পাইয়ে দেয়ার বিনিময়ে কমিশন বাণিজ্যের একাধিক অডিও ক্যাসেট পাওয়া গেছে ভিপি নূরের। কোটা আন্দোলনের মাধ্যমে ছাত্র রাজনীতিতে আগমন ঘটলেও এর পেছনে জামায়াত-বিএনপি-শিবিরের ইন্ধনসহ সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ মিলেছে। যে কারণে তার ওপর একাধিকবার হামলার ঘটনা ঘটেছে। স্বার্থসংশ্লিষ্ট কোন মহলের এসবের পেছনে আদৌ কোন ষড়যন্ত্র তথা দুরভিসন্ধি আছে কিনা তা অবিলম্বে খুঁজে দেখা দরকার। ঢাবি কর্তৃপক্ষ ছয় সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটিও গঠন করেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েটসহ একাধিক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ভিপিসহ ছাত্র শিক্ষকদের বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতি-অব্যবস্থাপনা-সংঘর্ষ-পাল্টা সংঘর্ষ, এমনকি শিক্ষার্থী হত্যাসহ নানা ইস্যুতে ক্ষোভ-বিক্ষোভ-ধর্মঘট-অবরোধ ইত্যাদি ধুমায়িত হয়ে উঠেছে। প্রশ্ন হলো, হঠাৎ করেই একই সঙ্গে কেন একাধিকবার ক্ষোভ-বিক্ষোভের ঘটনা ঘটছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে? শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে হলে শিক্ষা-বিরুদ্ধ কর্মকা- অবিলম্বে বন্ধ করা দরকার। দেশের ভবিষ্যত যারা সেই শিক্ষার্থীদের ক্ষতি হয় এমন কর্মসূচী সব সময় পরিত্যাজ্য। এর পাশাপাশি ঢাবি, বুয়েটসহ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হোক, সেটাও প্রত্যাশিত অবশ্যই।