পেঁয়াজের দাম দশদিনের মধ্যে স্বাভাবিক হবে

11

কাজিরবাজার ডেস্ক :
আগামী দশ দিনের মধ্যে পেঁয়াজের দাম স্বাভাবিক হয়ে আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে বাজারে কেজিপ্রতি ১০ টাকা দাম কমে গেছে। এছাড়া মিসর ও তুরস্কের ৫০ হাজার মে. টনের বড় চালানটি আগামী ১০-১৫ নভেম্বরের মধ্যে দেশে আসার কথা রয়েছে।
সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের পেঁয়াজ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি। এর আগে বাণিজ্যমন্ত্রী নিজ কার্যালয়ে ঢাকায় নিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ার রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক করেন। অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বাড়াতে চলতি মাসে মন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি উচ্চ পর্যায়ের সরকারী-বেসরকারী খাতের প্রতিনিধি দল দেশটি সফরে যাচ্ছে। ওই সময় বাণিজ্য সংক্রান্ত কয়েকটি ইস্যুতে চুক্তি স্বাক্ষর করা হতে পারে। এদিকে পেঁয়াজের দাম কেন কমছে না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, মসলা জাতীয় এ পণ্যটির দাম আপাতত আর বাড়বে না। কারণ ইতোমধ্যে পাইকারি বাজারে কেজিতে প্রায় ১০ টাকা দাম কমে গেছে। শুধু তাই নয়, প্রতিদিন ২ থেকে ৩ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে। তবে পেঁয়াজের বড় লটটি এখনও দেশে এসে পৌঁছায়নি। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, মিসর ও তুরস্ক থেকে আমদানিকৃত পেঁয়াজের বড় চালানটি আসতে আরও অন্তত দশ দিন সময় লাগবে। ওই পেঁয়াজ দেশে ঢুকলে এমনিই দাম কমে আসবে।
তিনি বলেন, আগামী সপ্তাহখানেকের মধ্যে ভারতের ব্যাঙ্গালুরু থেকে ৯ হাজার টন পেঁয়াজ আনা হচ্ছে। মিসরের পাশাপাশি মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আমদানি চলমান রয়েছে। এছাড়াও সিটি গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ এবং এস আলম গ্রুপ বড় ধরনের পেঁয়াজের চালান আমদানির পরিকল্পনা করছে। এতে ধীরে ধীরে পেঁয়াজের দাম কমতে থাকবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, প্রতিদিনই পেঁয়াজ দেশে প্রবেশ করছে। সেক্ষেত্রে মিয়ানমার সবচেয়ে বড় সাপোর্ট দিচ্ছে। মিয়ানমার থেকে কম দামে পেঁয়াজ আমদানি করে ব্যবসায়ীরা বেশি দামে বাজারে বিক্রি করছে-সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এক্ষেত্রে তথ্যে গরমিল থাকতে পারে।
তিনি বলেন, পেঁয়াজের বাজার মনিটরিং জোরদার করা হচ্ছে। বিশেষ করে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে যাতে কারসাজি না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখা হচ্ছে। এ কারণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে আজ চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে একটি ফুল টিম গেছে। একজন উপসচিবকে সেখানে পাঠানো হয়েছে। খাতুনগঞ্জে গিয়ে তারা বাজার মনিটরিং করছেন।
টিপু মুনশি বলেন, ভারত ব্যাঙ্গালুরু থেকে রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে। ওখান থেকে ৯ হাজার টন পেঁয়াজ আসবে। তবে ভারতের যে অঞ্চল থেকে আমাদের পেঁয়াজ আসে নাসিক তারা এখনও প্রত্যাহার করেনি। তবে সরকারের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হচ্ছে, তারা যেন দ্রুত নিষেধাজ্ঞাটা প্রত্যাহার করে। তিনি বলেন, আমাদেরও নতুন পেঁয়াজ উঠতে শুরু করেছে। তবে এখনও সেই আকারে ওঠেনি, এ মাসের শেষ দিকে নিজস্ব নতুন পেঁয়াজ উঠবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, চাহিদা মেটাতে দেশে প্রতিদিন তিন থেকে চার হাজার টন পেঁয়াজ ঢোকা দরকার। কারণ আমাদের দৈনিক চাহিদা ৬ হাজার টন পেঁয়াজ। সব পেঁয়াজ তো বাইরে থাকে আসবে না, কিছু পেঁয়াজের উৎপাদন আমাদের রয়েছে। আর বাইরের মার্কেট থেকে পেঁয়াজ ঢুকছে। আশাকরি দু’একদিনের মধ্যে আরও ভাল রিপোর্ট পাব।
অস্ট্রেলিয়ার রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ মাসের ১২ তারিখ ব্যবসায়ীদলসহ অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড যাবো। সে বিষয়ে আজ আলোচনা হয়েছে। দুদেশের কী কী ব্যবসা হতে পারে সেটি নিয়ে কথা হয়েছে। ব্যবসা সংক্রান্ত কী বিনিয়োগ এদেশে করা যাবে, ব্যবসায়িক সম্পর্ক কীভাবে বাড়ানো যায়, এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট পাওয়ার জেনারেশনের বিষয়ে কথা হয়েছে।