কাজিরবাজার ডেস্ক :
রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ আইনজীবীদের সমাজ ও রাষ্ট্রের কল্যাণে সামাজিক দায়বদ্ধতায় কাজ করার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, আইনজীবীরা সমাজে পিছিয়ে রয়েছে। জাতীয় সংসদসহ রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোতে তাদের প্রতিনিধির সংখ্যা দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। আচরণগত কারণে জনগণের সঙ্গে তাদের দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে। অথচ আইনজীবীরা সমাজের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, জনগণের ওপর আস্থা রেখে মামলা পরিচালনায় বিচার প্রার্থীদের সঙ্গে সহনশীল আচরণ করতে হবে। রাষ্ট্রপতি এ সময় বিচারপ্রার্থীরা যাতে ন্যায্য বিচার পায় সেভাবেই আইনের সেবা প্রদানের জন্য আইনজীবীদের পরামর্শ দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে রাষ্ট্রপতি জজকোর্ট প্রাঙ্গণে জেলা আইনজীবী সমিতির দেয়া সংবর্ধনা ও ১০ তলা বিশিষ্ট রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি আইনজীবীদের দুর্নীতি ও মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, এককালের খরস্রোতা নরসুন্দা নদী এখন আর আগের অবস্থানে নেই। অধিকাংশ পুকুরও ভরাট হয়ে গেছে। অথচ বড় ধরনের অগ্নিকান্ড সংঘটিত হলে তা রোধ করা কঠিন হয়ে পড়বে। তিনি এ বিষয়ে পরিবেশ আইন সম্পর্কে সচেতন করতে স্থানীয় প্রশাসন, আইনজীবীসহ সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট মিয়া মোহাম্মদ ফেরদৌসের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন কিশোরগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য নূর মোহাম্মদ, জেলা ও দায়রা জজ মোঃ সায়েদুর রহমান খান, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ জিল্লুর রহমান, জেলা বারের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট শহীদুল আলম শহীদ, সহসাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এহতেশামুল হক জুয়েল, এডভোকেট নাযমুন নাহার মলি প্রমুখ। অনুষ্ঠানে আইনজীবী সমিতি ও স্থানীয় বিচারকদের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদকে ক্রেস্ট ও মানপত্র প্রদান করা হয়। এ সময় কিশোরগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য মোঃ আফজাল হোসেন, জেলা প্রশাসক মোঃ সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী, পুলিশ সুপার মোঃ মাশরুকুর রহমান খালেদ বিপিএম, জেলা পিপি শাহ আজিজুল হক, স্পেশাল পিপি এমএ আফজল, জেলা বারের সদস্যসহ বিভিন্ন সামরিক, বেসামরিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
কিশোরগঞ্জ বারের সদস্য আইনজীবীর বিরুদ্ধে কোন ঘটনায় মামলা হলে অন্যান্য আইনজীবী তার পক্ষে অবস্থান নেন এমনটি উচিত নয় মন্তব্য করে রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, সাধারণ মানুষ যাতে সহজে আদালতের মাধ্যমে সেবা পেতে পারেন সেজন্য তিনি জেলা বারের ওকালতনামার ফি কমানোর পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, তার সময়ে আইনজীবীদের জন্য কল্যাণ তহবিল গঠন করা হয়। এ সময় রাষ্ট্রপতি কিশোরগঞ্জে দীর্ঘদিন আইন পেশায় নিয়োজিত থাকার উদাহরণ দিয়ে সিনিয়র আইনজীবীদের বারের সমস্যা ও নবীন আইনজীবীদের সঠিক আইনগত পরামর্শ ও সার্বিক সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়েছেন। এর আগে তিনি আদালত প্রাঙ্গণে ১০ তলাবিশিষ্ট রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। পরে তিনি জেলার বিচারকদের সঙ্গে আইনী বিভিন্ন দিক নিয়ে মতবিনিময় করেন। বিকেলে রাষ্ট্রপতি শহরের শ্যামসুন্দর আখড়া পরিদর্শন শেষে সন্ধ্যায় সার্কিট হাউজে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।