স্পোর্টস ডেস্ক :
সিলেটে জিততে হলে বাংলাদেশকে করতে হবে ৩২১। যেটা দুরূহই বলা যায়। কারণ, অতীতে সর্বোচ্চ ২১৫ রানের টার্গেট টপকাতে পেরেছিল টাইগাররা। এই টেস্টে জিততে তাই রেকর্ড গড়েই জিততে হবে মাহমুদউল্লাহ ব্রিগেডকে।
প্রথম ইনিংসে জিম্বাবুয়ে করেছিল ২৮২ রান। জবাবে মাত্র ১৪৩ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। তাইজুলের দারুণ বোলিংয়ে জিম্বাবুয়ে ১৮১ রানে অল আউট হলে বাংলাদেশের সামনে টার্গেট দাঁড়ায় ৩২১। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে কোনো উইকেট না হারিয়ে ২৬ রান তুলেছে টাইগাররা। লিটন দাস ১৪ আর ইমরুল কায়েস ১২ রানে ক্রিজে আছেন। আলোক স্বল্পতার কারণে দিনের খেলা একটু আগেভাগেই শেষ হয়ে গেছে। ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আগামীকাল আধ-ঘন্টা আগে শুরু হবে চতুর্থদিনের খেলা।
সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে ১৪০ রানের লিড নিয়ে তৃতীয় দিন শুরু করে জিম্বাবুয়ে। অতিথিদের ইনিংসে প্রথম আঘাত আনেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ব্রায়ান চারিকে (৪) বোল্ড করে জুটি ভাঙেন এই অফ স্পিনার।
মিরাজের পর দ্বিতীয় উইকেট জুটি ভাঙেন তাইজুল ইসলাম। ১৮তম ওভারের তিন নম্বর বলে ইমরুলের হাতে ক্যাচ দিয়ে টেইলরকে ফেরান তিনি। ফেরার আগে ২৪ বলে ২৫ রান করেছেন এই টপ অর্ডার।
এরপর তৃতীয় জুটিতে বড় লিডের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন হ্যামিল্টন মাসাকাদজা এবং শন উইলিয়ামস। এই জুটিতে পঞ্চাশ পার করে ২৩০ এর লিড নিয়ে লাঞ্চে যায় জিম্বাবুয়ে।
তবে লাঞ্চ থেকে ফিরে ৫৪ রানের তৃতীয় জুটি ভাঙেন মিরাজ। ৩৬ তম ওভারে মিরাজের বলে রিভার্স সুইপ করতে গেলেন মাসাকাদজা। কিন্তু লাইন মিস করে বল লাগে যায় পায়ে। এলবিডব্লিউয়ের আবেদনে সাড়া দিতে খুব সময় নেননি আম্পায়ারও। মাত্র ২ রানের জন্য হাফ-সেঞ্চুরি মিস করেন এই ওপেনার।
মিরাজের পর বোলিংয়ে এসে প্রথমে শন উইলিয়ামসকে ফেরান তাইজুল। উইলিয়ামসকে বোল্ড করার পর পিটার মুরকে দিলেন গোল্ডেন ডাকের স্বাদ তিনি। এরপর সিকান্দার রাজাকে(২৫) বোল্ড করে ক্যারিয়ারে প্রথম একম্যাচে ১০ উইকেটের মালিক হন দেশ সেরা এই টেস্ট বোলার। প্রথম ইনিংসে ছয় উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। এর আগে তার এক ম্যাচে সেরা বোলিং ফিগার ছিল ৮১ রানে ৯ উইকেট।
৩০৪ রানের লিড নিয়ে চা-বিরতির যায় জিম্বাবুয়ে। বিরতি শেষে প্রথম ওভারে আঘাত হেনেছেন মিরাজ। অফ স্পিনে ওয়েলিংটন মাসাকাদজাকে ফিরিয়ে ভেঙেছেন জিম্বাবুয়ের প্রতিরোধ। মাসাকাদজার পর বাজে শটে ফিরে গেলেন রেজিস চাকাভা। নাজমুল ইসলাম অপুর হাফ ভলি বলে ফিরে গেলেন কাভারে ক্যাচ দিয়ে।
৬৪তম ওভারে মাভুতাকে নিজের দ্বিতীয় শিকার বানান অপু। আর শেষে নিজের ক্যারিয়ার সেরা ১১তম উইকেট নিয়ে জিম্বাবুয়েকে ১৮১ রানে থামিয়ে দেন তাইজুল ইসলাম।
জিম্বাবুয়ের ২৮২ রানের জবাবে প্রথম ইনিংস মাত্র ১৪৩ রানে গুটিয়ে গেছে টাইগারারা। ফলোঅন এড়াতে পারলেও হার এড়াতে অসম্ভব কিছু করতে হবে স্বাগতিকদের। ১৪০ রানের লিড নিয়ে তৃতীয় দিন ব্যাট করতে নেমেছিল জিম্বাবুয়ে।
শরিবার প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ২৮২ রানে অলআউট হয় জিম্বাবুয়ে। ৫ উইকেটে ২৩৬ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন শুরু করেছিল তারা। রবিবার সকালে বাকি পাঁচ উইকেট নিয়ে মাত্র ৪৬ রান তুলতে পারে অতিথিরা।
বাংলাদেশের হয়ে ৬২ রান দিয়ে সর্বোচ্চ ৫ উইকেট নিয়েছেন তাইজুল ইসলাম। ৪৮ রান দিয়ে তিনটি উইকেট নিয়েছেন মিরাজ। আর অপুর শিকার ২টি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
জিম্বাবুয়ে ১ম ইনিংস: ১১৭.৩ ওভারে ২৮২
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৫১ ওভারে ১৪৩ (লিটন কুমার দাস ৯, ইমরুল কায়েস ৫, মুমিনুল হক ১১, নাজমুল শান্ত ৫, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ০, মুশফিকুর রহিম ৩১, আরিফুল হক ৪১*, মেহেদী মিরাজ ২১, তাইজুল ৮, নাজমুল ইসলাম ৪, রাহী ০; কাইল জার্ভিস ১০-২-২৮-২, চাতারা ১০-৪-১৯-৩, সিকান্দার রাজা ১২-২-৩৫-৩, শন উইলিয়ামস ৪-০-৫-১।
জিম্বাবুয়ে ২য় ইনিংস: ৬৫.৪ ওভারে ১৮১/১০ (হ্যামিল্টন মাসাকাদজা ৪৮, চারি ৪, ব্রেন্ডন টেলর ২৪, শন উইলিয়ামস ২০, সিকান্দার রাজা ২৫, পিটার মুর ০, চাকাভা ২০, ওয়েলিংটন মাসাকাদজা ১৭, মাভুতা ৬, জারভিস ১*, চাতারা ৮; তাইজুল ২৮.৪-৮-৬২-৫, অপু ৬-১-২৭-২, মিরাজ ১৯-৭-৪৮-৩)