প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে আজ শেষ হচ্ছে শারদীয় দুর্গোৎসব

11

স্টাফ রিপোর্টার :
সনাতন হিন্দু সম্প্রাদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শ্রীশ্রী দুর্গাপূজা আজ মঙ্গলবার বিজয়াদশমী পূজা অর্থ্যা দর্পণ বিসর্জনের পর প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হচ্ছে ৫দিন ব্যাপী শারদীয় এ দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা। গতকাল সোমবার সকালে বিহিত পূজার মাধ্যমে ভক্তি আর শ্রদ্ধায় বিভিন্ন পূজা মন্ডপে আরতি, অঞ্জলি প্রদান ও প্রসাদ বিতরণের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয় নবমী পূজা।
নবমীর সকাল মানে অশুভ শক্তি থেকে মুক্তি। শারদীয় দুর্গা উৎসবের নবমীর এ দিনটিতে দেবী দুর্গা অসুরকে বধ করেছিলেন। সে প্রত্যয়েই এদিন নিজেদের মনের ভেতর ও বাইরের অসুর বধের আশায় মায়ের কৃপা প্রার্থনা করেছেন ভক্তরা। গত শুক্রবার ৪ অক্টোবর সন্ধ্যায় ষষ্ঠীপূজার মধ্য দিয়ে শুরু হয় শারদীয় দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা।
নগরীর কয়েকটি মন্ডপ ঘুরে দেখা গেছে, ঢাক ঢোল ও শঙ্খ বাজিয়ে চলে উলুধ্বনি। ভক্তরা প্রাণভরে স্মরণ করছেন মা দুর্গাকে। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পুণ্যার্থীরা ভিড় ঢেলে মা দুর্গার আর্শীবাদ নিতে পরিবার পরিজন নিয়ে মন্ডপে মন্ডপে ছুটেন। ভক্তরা মায়ের চরণে অঞ্জলী প্রদানও করেছেন। দুর্গাপূজাকে ঘিরে এ সময় পরিণত হয় এক উৎসবের নগরী। আজ মর্ত্য ছেড়ে কৈলাশে স্বামীগৃহে ফিরে যাবেন দুর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গা। দশভুজা দুর্গার আরাধনার পাশাপাশি দেবীকে বিদায় জানানোর আয়োজনে ভক্তকুল আজ মঙ্গলবার থাকবেন বিষন্ন। অবশ্য একটু চোখ ছল ছল, একটু মন খারাপ, একটু বিদায়ের সুর। মা ফিরে যাবেন কৈলাসে। বছর ভরে অপেক্ষা শুরু হবে আবার। এর আগে অর্থ্যা দেবী বিসর্জনের পূর্বে ভক্তরা সিদুঁর ও রং খেলার আনন্দে ভাসবেন।
জানা গেছে, এবার নগরীর মেট্রোপলিটন এলাকাসহ সিলেট বিভাগের সকল জেলা ও উপজেলার তৃণমূল পর্যায়ের মোট ২ হাজার ৬৩৬টি পূজা মন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে সিলেট জেলার ১৩টি উপজেলায় ৬০৫ টি মন্ডপ, সুনামগঞ্জ জেলার ১১টি উপজেলায় ৩৯০টি মন্ডপ, হবিগঞ্জ জেলার ৯টি উপজেলায় ৬৪৫টি মন্ডপ ও মৌলভীবাজার উপজেলার ৬টি উপজেলায় ৯৯৬টি মন্ডপ।
এবছর দুর্গাপূজা উপলক্ষে সিলেটের প্রতিটি পূজামন্ডপের নিরাপত্তা রক্ষায় পুলিশ, আনসার, র‌্যাবসহ অন্যান্য আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি প্রায় প্রতিটি মন্ডপে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী দায়িত্ব দায়িত্ব পালন করেন। তবে এবার সিলেটের কোথাও কোন বড় ধরনের খবর পাওয়া যায়নি।
এদিকে, আজ মঙ্গলবার বিকেল থেকে নগরী ক্বীন ব্রীজের নিচে চাঁদনীঘাটে বিসর্জন মঞ্চ স্থাপন করে সুরমা নদীতে একে একে দেবী বিসর্জন দেয়া হবে। এসময় বিসর্জনস্থল নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে আইন-শৃংঙ্খলা বাহিনীর সদস্য।
পুরোহিতরা বলেছেন, এবার মা দুর্গা আসেন ঘোড়ার পিঠে চড়ে। যাচ্ছেনও ঘোড়ায়। এ কারণে ঝড় ঝাপটার আশঙ্কা আছে। তাই মা দুর্গার প্রতি এবার আমাদের বিশেষ প্রার্থনা থাকবে-প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে যেন রক্ষা পায় মানুষ।