নির্মাণ ত্রুটির কারণেই ডুবছে জাহাজ ॥ ১৩ বছরে ৮৭টি জাহাজ ডুবির ঘটনা

41

কাজিরবাজার ডেস্ক :
২০০৬ সালের ২১ ডিসেম্বর, হংকং ইয়ান নামে একটি মাদার জাহাজ থেকে ইউরিয়া নিয়ে বাঘাবাড়ি যাচ্ছিল লাইটার জাহাজ ডায়মন্ড অব শিমুলিয়া। পথে কর্ণফুলীর মুখে জাহাজটি ডুবে যায়। সেই থেকে এ বছরের ৭ আগষ্ট পর্যন্ত মাদার জাহাজ থেকে পণ্য নিয়ে গন্তব্যে যাওয়ার পথে ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলের (ডব্লিউটিসি) অধীনে থাকা ৮৭টি লাইটার জাহাজডুবির ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ গত ৭ আগস্ট সি চ্যাম্পিয়ন নামে একটি লাইটার জাহাজ মাদার ভেসেল থেকে পণ্য নিয়ে নগরবাড়ি যাওয়ার পথে মল্লিকপুর এলাকায় ডুবে যায়।
দুর্বল কাঠামোতে তৈরি এসব জাহাজ বে-ক্রসিংয়ের (সাগর অতিক্রমের) বিশেষ অনুমতি নিয়ে পণ্য পরিবহন করছে। নির্মাণ ত্র“টির কারণেই এগুলো ডুবে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। জাহাজডুবির ঘটনা কমিয়ে আনতে নদীপথের জাহাজ সমুদ্রপথে চলাচল না করা এবং অতিরিক্ত পণ্য বহন না করার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
নৌবাণিজ্য অধিদফতরের সাবেক প্রিন্সিপাল অফিসার প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘অভ্যন্তরীণ রুটের নৌযানগুলো সাগরে চলাচলের উপযোগী করে নির্মাণ করা হচ্ছে না। এসব লাইটার জাহাজ কেবল মেঘনা নদী পর্যন্ত চলাচলের উপযোগী করে তৈরি হয়। তাই অভ্যন্তরীণ রুটের জাহাজগুলো সাগরে প্রবেশ করলে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ডুবে যাচ্ছে। দুর্বল কাঠামোতে তৈরি এসব লাইটার জাহাজ অতিরিক্ত পণ্য বোঝাই করলেও তলা ফেটে ডুবে যাচ্ছে।’
ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলের অধীনে নেই এমন লাইটার জাহাজডুবির ঘটনাও ঘটছে অহরহ। সর্বশেষ গত ৭ আগস্ট আবুল খায়ের গ্রুপের তিনটি জাহাজ; এমভি টিটু-১৬, এমভি টিটু-১৮ ও এমভি টিটু-১৯ চট্টগ্রাম-সন্দ্বীপ ও চট্টগ্রাম-জনতাবাজার নৌ-পথে নিমজ্জিত হয়।
ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেল (ডব্লিউটিসি) সূত্রে জানা যায়, ব্যক্তি মালিকানাধীন যেসব লাইটার জাহাজ ভাড়ায় পণ্য পরিবহন করে সেগুলো ডব্লিউটিসি-র অধীনে থাকে। এর বাইরে বিভিন্ন গ্রুপের মালিকানাধীন অনেক লাইটার জাহাজ রয়েছে যেগুলো তাদের নিজস্ব পণ্য পরিবহন করে। এগুলো ডব্লিউটিসি-র অন্তর্ভুক্ত নয়। আবুল খায়ের গ্রুপ, এমআই সিমেন্ট, ক্রাউন সিমেন্ট, সিটি গ্রুপ, এস আলম গ্রুপ, মক্কা-মদিনা গ্রুপ, কেএসআরএম, রয়েল সিমেন্ট, বসুন্ধরা গ্রুপ, আমান গ্রুপ, ফ্রেশ, দেশ বন্ধু ও আকিজ গ্রুপের অনেকগুলো লাইটার জাহাজ আছে, যেগুলো তাদের নিজস্ব পণ্য পরিবহন করে। এসব লাইটার জাহাজ ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলের (ডব্লিউটিসি) অধীনে নেই। ফলে এগুলোর ডুবে যাওয়া সংক্রান্ত তথ্য ডব্লিটিসির কাছে নেই।
বহিঃনোঙ্গরে অবস্থানরত মাদার ভ্যাসেল (বড় জাহাজ) থেকে পণ্য খালাসের জন্য বর্তমানে ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলের (ডব্লিউটিসি) অধীনে প্রায় ৯০০টি লাইটার জাহাজ রয়েছে বলে জানিয়েছেন ডব্লিউটিসি’র নির্বাহী পরিচালক মাহবুব রশিদ খান। ডব্লিউটিসি’র অধীনে থাকা লাইটার জাহাজগুলোর মধ্যে গত ১৩ বছরে ৮৭টি জাহাজ ডুবির ঘটনা ঘটেছে বলে তিনি জানান। এর মধ্যে ৪৮টি ডুবে যাওয়া জাহাজ ইতোমধ্যে উদ্ধার করা হয়েছে।
মাহবুব রশিদ খান বলেন, ‘২০০৬ সালের ২১ ডিসেম্বর থেকে এ বছরের ৬ আগস্ট পর্যন্ত ৮৭টি লাইটার জাহাজ ডুবির ঘটনা ঘটেছে। এসব জাহাজের অধিকাংশ সন্দ্বীপ চ্যানেল এবং কর্ণফুলীর মুখে ডুবে যায়।’ তিনি বলেন, ‘ডুবে যাওয়া জাহাজগুলোর অধিকাংশ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। গত ১৩ বছরে ডুবে যাওয়া ৮৭ জাহাজের মধ্যে ৪৮ জাহাজ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে বঙ্গোপসাগরের হাতিয়ার অংশে যেসব জাহাজ ডুবে যায়; সেগুলো উদ্ধার করা অনেক কঠিন। সেখানে ডুবে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পলি এসে ভরে যায়।’
ডব্লিউটিসি সূত্র জানিয়েছে, ডুবে যাওয়া ৮৭টি লাইটার জাহাজের মধ্যে ২০০৭ সালে দুটি জাহাজ ডুবির ঘটনা ঘটে। এই জাহাজগুলোর একটি ১৫ আগস্ট ক্লিংকার নিয়ে আরামিট সিমেন্ট কারখানায় যাওয়ার পথে চট্টগ্রাম নেভাল একাডেমির কাছে ডুবে যায়। অন্যটি ১১ সেপ্টেম্বর গম নিয়ে মাদার জাহাজ থেকে বন্দরে আসার পথে কর্ণফুলীর লালবয়ার কাছে ডুবে যায়।
২০০৮ সালে ৫টি জাহাজ ডুবে যায়। এর মধ্যে একটি ২৮ জানুয়ারি বরিশালের মেহেদিগঞ্জ এলাকায় ডুবে যায়। অন্যগুলো মধ্যে ২৬ ফেব্রুয়ারি শাহ সিমেন্ট ঘাটে, ৮ আগস্ট লক্ষ্মীপুরের বাতের খাল এলাকায়, ১৩ সেপ্টেম্বর বন্দরের আউটার এনকোরেজ ও ১৪ অক্টোবর সন্দ্বীপ চ্যানেলে একটি করে জাহাজ ডুবে যায়।
২০০৯ সালে ৪টি জাহাজ ডুবির ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে একটি ২৩ জানুয়ারি গম নিয়ে মাদার ভেসেল থেকে বন্দরে আসার পথে উত্তরপতেঙ্গা পয়েন্টে ডুবে যায়। অন্যগুলোর মধ্যে একটি ১১ জুলাই জিপসাম নিয়ে হোলসিম সিমেন্ট ঘাটে যাওয়ার পথে কর্ণফুলী ইস্টোয়ারিতে, আরেকটি ২১ অক্টোবর অপরিশোধিত চিনি নিয়ে মেঘনাঘাট যাওয়ার পথে লক্ষ্মীপুরের মতিরহাট এলাকায় এবং অন্যটি একইদিন কাফকো থেকে ইউরিয়া নিয়ে বাঘাবাড়ি যাওয়ার পথে লক্ষ্মীপুরের মতিরহাট এলাকায় ডুবে যায়।
২০১০ সালে ৭টি জাহাজ ডুবে যায়। এর মধ্যে একটি জাহাজ ২০ জানুয়ারি ইউরিয়া নিয়ে সিইউএফএল যাওয়ার পথে খেজুরতলা সমুদ্র সৈকতের কাছে ডুবে যায়। অন্যগুলোর মধ্যে ৩০ মার্চ গম নিয়ে নারায়ণগঞ্জে যাওয়ার পথে কালিচরে, ৩ এপ্রিল ক্লিংকার নিয়ে যাওয়ার পথে হাতিয়ায় এবং ৩০ মে ক্লিংকার নিয়ে ডায়মন্ড সিমেন্ট ঘাট যাওয়ার পথে ডায়মন্ড সিমেন্ট ঘাটের সামনে ডুবে যায়। বাকি তিনটির মধ্যে একটি ২৩ জুন চালের বস্তা নিয়ে সাইলো জেটিতে যাওয়ার পথে ঘাসিয়ার চর এবং অন্যটি ১০ নভেম্বর ডাল নিয়ে মাদার ভেসেল থেকে বন্দরে আসার পথে চট্টগ্রামের জুট র্যালি ঘাট ও আরেক ১২ নভেম্বর ইউরিয়া নিয়ে বাঘাবাড়িয়া যাওয়ার পথে টাংকি খালের রামাঘাট এলাকায় ডুবে যায়।
২০১১ সালে ২টি জাহাজ ডুবির ঘটনা ঘটে৷ এর মধ্যে একটি ১ জানুয়ারি ক্লিংকার নিয়ে আকিজ সিমেন্ট ঘাটে যাওয়ার পথে বন্দরের আউটার এনকোরেজে ডুবে যায়। অন্যটি ১৯ ফেব্রুয়ারি ক্লিংকার নিয়ে হলসিম সিমেন্ট ঘাটে যাওয়ার পথে হাতিয়াতে ডুবে যায়।
২০১২ সালে ৭টি জাহাজ ডুবির ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে একটি ২ মার্চ ক্লিংকার নিয়ে মুন্সিগঞ্জ যাওয়ার পথে মেঘনা নদীর মোহনপুর লঞ্চ ঘাটে ডুবে যায়। অন্যগুলোর মধ্যে একটি ১৩ মার্চ ক্লিংকার নিয়ে ইউনিক সিমেন্ট ঘাটে যাওয়ার পথে ভোলার পাটারচরের দৌলত খাঁ এলাকায়, ২১ জুন জিপসাম নিয়ে মোংলায় যাওয়ার পথে কর্ণফুলী মোহনায়, ১ জুন চর গজারিয়ায়, ৯ আগস্ট ডাপ নিয়ে নারায়ণগঞ্জ যাওয়ার পথে চরগজারিয়া পাইলট বিটে, ২৩ ডিসেম্বর ইউরিয়া নিয়ে নগরবাড়ি যাওয়ার পথে নেভাল একাডেমির রিভার মাউথ এলাকায় এবং ৩১ ডিসেম্বর ক্লিংকার নিয়ে আকিজ সিমেন্ট ঘাটে যাওয়ার পথে মেঘনা নদীর মল্লিকপুর এলাকায় ডুবে যায়।
২০১৩ সালে ১০টি জাহাজ ডুবির ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে একটি ১৩ জানুয়ারি কয়েল নিয়ে বহির্নোঙরে ডুবে যায়। একই দিন আরও একটি মাদার ভেসেল থেকে পণ্য নিয়ে বন্দরে আসার পথে বন্দরের আইটার অ্যাংকোরেজে ডুবে যায়। অন্যগুলো ৩০ জানুয়ারি ইউরিয়া নিয়ে বাঘাবাড়িয়া যাওয়ার পথে মল্লিকপুর, ৩১ জানুয়ারি আশুগঞ্জ যাওয়ার পথে ঘাসিয়ার চর, ২৩ ফেব্রুয়ারি ক্লিংকার নিয়ে চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে মংলা পোর্ট, ২ মার্চ ক্লিংকার নিয়ে যাওয়ার পথে হাতিয়া এক নম্বর বয়ার কাছে, ৩১ মে ইউরিয়া নিয়ে মাদার ভেসেল থেকে বন্দরে যাওয়ার পথে কাফকো অ্যান্ড সিইউএফএল জেটিতে, ১৪ সেপ্টেম্বর স্টোন নিয়ে সন্দ্বীপ চ্যানেলে, ২৮ অক্টোবর কালীগঞ্জে এবং ৩১ অক্টোবর গম নিয়ে সাইলো জেটি যাওয়ার পথে সাইলো জেটিতে ডুবে যায়।
২০১৪ সালে ৬টি জাহাজ ডুবে যায়। এর মধ্যে একটি ৯ মার্চ পণ্য নিয়ে বরিশাল যাওয়ার পথে বরিশালের কীর্তনখোলা নদীতে ডুবে যায়। বাকিগুলো ১৪ জুন ক্লিংকার নিয়ে নোয়াপাড়া যাওয়ার পথে সন্দ্বীপের কালিচরে, ২৭ জুন নারায়ণগঞ্জ যাওয়ার পথে বন্দরের আউটার অ্যাংকোরেজে, ৯ আগস্ট হাতিয়ার তিন নম্বর বয়া এলাকায়, ২৩ আগস্ট ক্লিংকার নিয়ে হসিম সিমেন্ট ঘাটে যাওয়ার পথে চর নুরুল ইসলামে ও ১৪ নভেম্বর লবণ নিয়ে মাদার ভেসেল থেকে বন্দরে আসার পথে কর্ণফুলীর ১৮ নম্বার ঘাট ডুবে যায়।
২০১৫ সালে ৬টি জাহাজ ডুবির ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে একটি ২০ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ যাওয়ার পথে চাঁদপুরের আনন্দ বাজার এ ডুবে যায়। অন্যগুলো ৩ এপ্রিল রূপসী যাওয়ার পথে সন্দ্বীপ চ্যানেল, একই দিন গম নিয়ে নারায়ণগঞ্জ যাওয়ার পথে সন্দ্বীপ, ২৪ এপ্রিল কয়লা নিয়ে খুলনা যাওয়ার পথে সন্দ্বীপ চ্যানেল, ১৫ মে পাথর নিয়ে যাওয়ার পথে কর্ণফুলী ও ২৮ ডিসেম্বর সিমেক্স সিমেন্ট ঘাটে যাওয়ার পথে খালেদা খালের কাছে কাশপি হাসান দ্বীপে ডুবে যায়।
২০১৬ সালে ১৪টি জাহাজ ডুবির ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে একটি ১৯ মার্চ কয়লা নিয়ে ঘোড়াশাল যাওয়ার পথে সুন্দরবনের শিলা নদীতে ডুবে যায়। অন্যগুলোর মধ্যে ৭ এপ্রিল পাথর নিয়ে এনজিএস সিমেন্ট ঘাট যাওয়ার পথে পতেঙ্গা সংলগ্ন এলাকায়, ৭ মে গম নিয়ে মাদার ভেসেল থেকে বন্দরে যাওয়ার পথে লোকাল ঘাট, ১৬ জুন ক্লিংকার নিয়ে শাহ সিমেন্ট ঘাট যাওয়ার পথে সন্দ্বীপচর, ১ জুলাই পাথর নিয়ে মিরপুর যাওয়ার পথে হাতিয়া, ১৪ আগস্ট ক্লিংকার নিয়ে হলসিম সিমেন্ট ঘাট যাওয়ার পথে হাতিয়া, ৫ সেপ্টেম্বর ফ্লাই অ্যাশ নিয়ে যাওয়ার পথে অথোরিটি বয়া এলাকায়, ২৬ সেপ্টেম্বর ক্লিংকার নিয়ে নোয়াপাড়া যাওয়ার পথে ১৫ নম্বর ঘাট এরিয়া, ১৬ অক্টোবর লবণ নিয়ে আলিগঞ্জ যাওয়ার পথে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে, ১৫ নভেম্বর পাথর নিয়ে ঢাকা যাওয়ার পথে ক্ষ্মীপুরের রামগতি এলাকায়, ১৪ ডিসেম্বর চিনি নিয়ে মেঘনা যাওয়ার পথে ঘাইসসার চরে ডুবে যায়। একইদিন তিনটি লাইটার জাহাজ ডুবে যায়। এর মধ্যে একটি ক্লিংকার নিয়ে শাহ সিমেন্ট ঘাট যাওয়ার পথে কর্ণফুলীর মুখে, কাঁচপুর যাওয়ার পথে সন্দ্বীপে, আরেকটি মাদার ভেসেল থেকে বন্দরে যাওয়ার পথে বন্দরের আউটার অ্যাংকোরেজে ডুবে যায়।
২০১৭ সালে ৯টি জাহাজ ডুবির ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে একটি ২০ ফেব্রুয়ারি পাথর নিয়ে ইলশা ঘাট যাওয়ার পথে মেঘনা ঘাটে ডুবে যায়। অন্যগুলো ১০ মে গম নিয়ে বরিশাল যাওয়ার পথে সন্দ্বীপ চ্যানেলে, ১২ জুন পাথর নিয়ে মিরপুর যাওয়ার পথে মিরপুরে, ১৫ জুন গম নিয়ে নোয়াপাড়া যাওয়ার পথে কুতুবদিয়ায়, ২ আগস্ট ইউরিয়া নিয়ে নোয়াপাড়া যাওয়ার পথে চট্টগ্রামের গ্রীণবয়ায়, ৭ নভেম্বর লবণ নিয়ে ব্রিজঘাট যাওয়ার পথে কর্ণফুলী ব্রিজ এলাকায়, ১০ নভেম্বর গম নিয়ে ঝালকাঠী যাওয়ার পথে ইলশা চ্যানেলে ও ২১ ডিসেম্বর ডাল নিয়ে যাওয়ার পথে কামাল নগরে ডুবে যায়।
২০১৮ সালে ৮টি জাহাজ ডুবির ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে একটি ২ ফেব্রুয়ারি পাথর নিয়ে রূপগঞ্জ যাওয়ার পথে রামগতি এলাকায় ডুবে যায়। অন্যগুলো ১ মার্চ ফ্লাই অ্যাশ নিয়ে যাওয়ার পথে চর গজারিয়ায়, ৩ মার্চ ক্লিংকার নিয়ে নোয়াপাড়া যাওয়ার পথে কর্ণফুলী মোহনায়, ৮ জুলাই গম নিয়ে নোয়াপাড়া যাওয়ার পথে সন্দ্বীপ চ্যানেলে, ১৬ আগস্ট ফ্লাই অ্যাশ নিয়ে ক্রাউন সিমেন্ট ঘাট যাওয়ার পথে হরিণা ফেরি ঘাটে, ২৯ সেপ্টেম্বর স্ক্রাব নিয়ে সদরঘাট যাওয়ার পথে বন্দরের আউটার অ্যাংকোরেজ, ১ ডিসেম্বর ভোলা যাওয়ার পথে বাথের খাল সেলিম বাজার এলাকায়, ৭ ডিসেম্বর ক্লিংকার নিয়ে এমআই সিমেন্ট ঘাট যাওয়ার পথে ভোলার ইলিশায় ডুবে যায়।
২০১৯ সালে ৬টি জাহাজ ডুবির ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে একটি ২৪ জানুয়ারি গম নিয়ে নারায়ণগঞ্জ যাওয়ার পথে সন্দ্বীপ চ্যানেলে ডুবে যায়। ৩ ফেব্রুয়ারি ইউরিয়া নিয়ে মিরপুর যাওয়ার পথে হাতিয়ায়, ২৪ মার্চ পাথর নিয়ে মিরপুর যাওয়ার পথে কালিগঞ্জে, ১ জুন ক্লিংকার নিয়ে স্ক্যান সিমেন্ট ঘাট যাওয়ার পথে সন্দ্বীপ, ৩০ জুন পাথর নিয়ে মিরপুর যাওয়ার পথে হাতিয়ায়, ৬ আগস্ট নগরবাড়ি যাওয়ার পথে মল্লিকপুরে ডুবে যায়।
২০১৪ সাল পর্যন্ত যেসব জাহাজ ডুবেছে, সেগুলো ইতোমধ্যে উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি জাহাজগুলোর মধ্যে ২০১৫ সালের ২০ জানুয়ারি ডুবে যাওয়া সোয়াদ নামের জাহাজটি উদ্ধার করা হয়। এছাড়া ২০১৬ সালের ৭ মে ডুবে যাওয়া লাইটার জাহাজ ইফতি, ২০১৮ সালের ১ ডিসেম্বর ডুবে যাওয়া গাজীপুর ও একই বছরের ৭ ডিসেম্বর ডুবে যাওয়া তানভীর তৌসিফ-২ লাইটার জাহাজ দুটি উদ্ধার করা হয়। বাকি ৩৯টি জাহাজ এখনও উদ্ধার করা হয়নি।