গোলাপগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
সিলেটে মিরাবাজারের দাদা পীর (রহঃ) এর মাজারের নাম ভাঙ্গিয়ে গোলাপগঞ্জের কথিত পীরের ভন্ডামী এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। কথিত পীর উপজেলার খর্দ্দাপাড়া বিএনকে এলাকার জড়ই মিয়ার পুত্র ছানু মিয়ার ভন্ডামী নিয়ে যে কোন সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের অঘটন। সিলেটের দাদা পীর মাজারের নামে ছানুর বাড়ীতে ওরস নিয়ে প্রতারণা ও কথিত ওই পীরের ভন্ডামী বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার জন্য এলাকাবাসী উপজেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট দফতরে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায় সিলেট মিরাবাজারে অবস্থিত দাদা পীর (রহঃ) এর মাজারের নাম ভাঙ্গিয়ে উপজেলার সাধারণ মানুষের সাথে দীর্ঘদিন থেকে প্রতারণা করে আসছে ভন্ড ছানু মিয়া। দাদা পীর মাজারের নাম ভাঙ্গিয়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ রয়েছে। আজ (বুধবার) থেকে বার্ষিক ওরসের পাশাপাশি গান বাজনার আয়োজন করা হয়েছে বলে একাধিক সূত্রে জানা যায়। ছানু মিয়া উপজেলার সহজ সরল মানুষের কাছ থেকে এক সময় শাহনুর ওরফে ছানু পীর আবার কখনও দাদা পীর (রহঃ) এর নাম ভাঙ্গিয়ে প্রতারণা করে আসছিল। সহজ সরল মানুষের কাছ থেকে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে ভন্ড ছানু। সে ওরসের নামে ইসলাম বিরোধী কাজে লিপ্ত থাকে। ভন্ড ছানুর হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না ভিটে মাটি হারা ও শ্রমজীবী মানুষেরা। ছানুর কাছে চিকিৎসার জন্য আসা মহিলাদেরকে তার নিজ কক্ষে নিয়ে চিকিৎসার নামে অপকর্ম চালায় বলে ভুক্তভোগীরা জানান। অনেক মহিলা সমাজপতিদের ভয়ে ইজ্জত হারানোর কথা কাউকে বলতে পারছেন না। সিলেট জেলার বিভিন্ন উপজেলায় প্রতারক চক্রের সদস্য দিয়ে পীরাকির নামে প্রতারণার কাজ করে আসছে ভন্ড ছানুসহ পীর নামধারী ভন্ড চক্রটি। এ চক্রটি গোলাপগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের কিছুদিন নিরব থাকার পর সময় বুঝে তৎপরতা বৃদ্ধি করে। চক্রটি নিজস্ব লোক দিয়ে সবার কাছে প্রচার করে থাকে এই পীরের দ্বারা তারা অনেক রোগ থেকে মুক্তি পেয়েছে। তাই সবাইকে ঐ পীরের কাছে যেতে পরামর্শ দিয়ে সহজভাবে প্রতারণার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। অনেক পীরভক্ত পুরুষ ও মহিলা পীরের কাছে আসেন সন্তান লাভসহ অনেক স্বপ্ন নিয়ে। পীর যখন সব কিছুর সমাধান দিতে ব্যর্থ হন তখন পীরভক্তরা অন্য পীরের সন্ধানে ছুটতে থাকেন। বিশেষ করে পীরভক্ত মহিলারা ভন্ডদের প্রতারণার ফাঁদে পা ফেলে স্বামীর সংসারসহ সর্বস্ব হারিয়ে এখন রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে ফিরছেন। ভন্ডপীর ছানুর হাতে প্রতারিত এক রোগী জানান অনেক মানুষের কাছ থেকে শুনেছি খর্দ্দাপাড়া গ্রামের জড়ই মিয়ার বাড়িতে একজন পীর এসেছে তাই আমি সেখানে যাই। সেখানে যাবার পর ওই ভন্ড আমাকে এমন একটি ঔষধের নাম লিখে দেয় কোন দোকানে সেটি পাইনি। তাদের কাছে আসার পর তারা ওই ঔষধ জোগাড় করে দেবে বলে আমার কাছ থেকে নগদ ২৫ হাজার টাকা নিয়ে আমার সাথে প্রতারণা করে। জড়ই মিয়ার বাড়িতে আশা পীরনামধারী ভন্ড কাশেম আলী তার পীরাকি জড়ই মিয়ার পুত্র সানু মিয়াকে দিয়ে দেয়। তার পর থেকে ছানু মিয়া পীরের আসনে বসে পীরাকির কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় সুত্রে জানাযায় ছানু দীর্ঘদিন থেকে লড়াই করানোর জন্য ষাঁড় পালতেন এবং সিলেটের বিভিন্ন জায়গায় লড়াই করানোর জন্য ষাঁড় নিয়ে যেতেন। ছানুর ষাঁড়টি লড়াইয়ে জয় পাবার জন্য কাশেম আলী পাঠান নামে এক গুণীন সাথে রাখতেন। কিছুদিন পর ওই গুণীন চলে যাওয়ার পর থেকে মানুষের কাছে নিজে পীরাকি পেয়েছে বলে পরিচয় দিয়ে বেড়াত ছানু। পীর পরিচয় দিয়ে মানুষের কাছ থেকে প্রতারণা করে বেশ টাকা হাতিয়ে নিয়ে কয়েক লক্ষ টাকা দিয়ে পাকা করে নিজের বসত ঘরও তৈরি করে ছানু। কয়েক দিন পূর্বে ছানুর বসত ঘরের সামনে রাতের আঁধারে একটি কবর বানিয়ে দাদা পীরের মাজার নাম দিয়ে প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছে। সে (ছানু) এলাকায় বলে বেড়াচ্ছে সিলেটের দাদা পীরের মাজার তার বাড়ীতে চলে এসেছে। ভন্ড ছানুর এসব কান্ড নিয়ে ঐ গ্রামে থমথমে বিরাজ করছে। এলাকার কেউ ছানুর এই অপকর্মের প্রতিবাদ করতে গেলে তাকে নানা ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের মুখ বন্ধ করে দেয়। এ ব্যাপারে গোলাপগঞ্জ মডেল থানা অফিসার ইনচার্জ একেএম ফজলুল হক শিবলীর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে এলাকা থেকে কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।