কাজিরবাজার ডেস্ক :
নতুন বহুতল স্থাপনা নির্মাণের ক্ষেত্রে এলাকার জনঘনত্ব, সড়কে যানবাহনের চাপ ও ধারণক্ষমতার মতো বিষয়গুলো বিবেচনায় রাখতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যত্রতত্র বহুতল ভবন নির্মাণ বন্ধ করতে প্রয়োজনে আইন প্রণয়নের কথাও বলেছেন তিনি। বৃহস্পতিবার গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়নাধীন এবং বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তাবিত কয়েকটি প্রকল্পের ধারণা প্রস্তাব দেখার পর এই নির্দেশ দেন সরকারপ্রধান।
তিনি বলেন, আবাসিক ভবন নির্মাণের সময় টেকসই পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। বিশেষ করে উন্মুক্ত জায়গা, প্রাকৃতিক বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা, বারান্দা এবং অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা যেন থাকে, তা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি বর্জ্য, পানি ব্যবস্থাপনার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে নজর দিতে কর্মকর্তাদের তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী। এখন থেকে গ্যাস ও পানির লাইনের পাশাপাশি বিদ্যুত লাইনকেও ভূগর্ভে স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এ বৈঠকে পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রকল্পগুলোর তথ্য উপস্থাপন করেন স্থাপত্য অধিদফতরের প্রধান স্থপতি কাজি গোলাম নাসির ও সহকারী স্থপতি সায়মা বিনতে আলম। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মোঃ নজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান এবং উর্ধতন কর্মকর্তারাও এ সময় উপস্থিত ছিলেন। আজিমপুর সরকারী কলোনিতে কর্মকর্তাদের জন্য বহুতল আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ, সচিবালয়ে নির্মাণাধীন ২০ তলা ভবনে মন্ত্রিপরিষদের সভা আয়োজনের সংস্থান, শেরেবাংলা নগরে স্থপতি লুই আই কানের করা মাস্টারপ্ল্যানের ৪৩ একর জমিতে জরাজীর্ণ ভবন অপসারণ করে বহুতল ভবন নির্মাণ এবং হাতিরঝিল প্র্রকল্প এলাকায় মাল্টিপারপাস সহযোগী ভবন নির্মাণ প্রকল্প রয়েছে এর মধ্যে।
গণপূর্ত মন্ত্রণালয় শেরেবাংলা নগরের বহুতল ভবন নির্মাণ প্রকল্পে লুই আই কানের সহযোগী স্থপতি হেনরি উইলকটকে পরামর্শক অথবা উপদেষ্টা হিসেবে রাখার সুপারিশ করলে প্র্রধানমন্ত্রী তাতে সম্মতি দেন। পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, শেরেবাংলা নগরে সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসনের জন্য ৫১টি দশতলা ভবন করা হবে। এসব ভবনে মোট ১৮৩৬ আবাসিক ফ্ল্যাট থাকবে। প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৪৪৪৪ কোটি ৫১ লাখ টাকা। সচিবালয়ে নির্মাণাধীন ২০ তলা ভবনটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪২০ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। সেখানে মন্ত্রিপরিষদের সভা করার মতো ব্যবস্থা রেখে নক্সা চূড়ান্ত করার নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। আজিমপুরে সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ২০ তলা বিশিষ্ট ১৫টি ভবন নির্মাণ করার পরিকল্পনা নিয়েছে মন্ত্রণালয়। এসব ভবনে বিভিন্ন আকারের মোট ১১৪০টি ফ্লাট থাকবে। ব্যয় হবে ১৯২১ কোটি ৮০ লাখ টাকা।
এছাড়া রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অধীনে হাতিরঝিল এলাকায় পুলিশ প্লাজা সংলগ্ন ভায়াডাক্ট ১ ও ২-এর পাশে ১ দশমিক ৩ একর জমিতে ২০ তলা একটি নতুন ভবন নির্মাণের প্রস্তাব পদ্মার পাড়ে স্থানান্তরের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।