স্টাফ রিপোর্টার :
বিয়ানীবাজার উপজেলার শেওলা সেতু এলাকায় পুলিশের সাথে গোলগুলিতে মিসবাহ উদ্দিন নামে ডাকাতি মামলার এক আসামী নিহত হয়েছে। গতকাল রবিবার ভোরে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মিসাবহ উদ্দিন জকিগঞ্জ উপজেলার শরিফাবাদ গ্রামের আলিম উদ্দিনের পুত্র। সে ডাকাত দলের সদস্য বলে দাবি করেছে পুলিশ।
বিয়ানীবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অবনী শঙ্কর জানান, মিসবাহকে শেওলা এলাকা থেকে আটক করে নিয়ে যাবার পথে তার সহযোগীরা তাকে ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এ সময় পুলিশও পাল্টা গুলি করে। এক পর্যায়ে মিসবাহ গুলিবিদ্ধ হলে তাকে উদ্ধার করে বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় ৪ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
পুলিশ জানায়, বিয়ানীবাজার থানার শিকারপুর সাকিনের জনৈক আব্দুল মান্নান এর বাড়িতে গত ১৭/০৬/২০১৯ রাত ২টায় সংঘটিত ডাকাতির ঘটনায় রুজুকৃত বিয়ানীবাজার থানার মামলা নং-১৪ তারিখ-১৯/০৬/২০১৯ এর তদন্তকালে গ্রেফতার আসামীদের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির ভিত্তিতে জকিগঞ্জ থানার লোহারসাঙ্গম (শরিফাবাদ) গ্রামের আলীম উদ্দিনের পুত্র মিছবাহ উদ্দিন (২৭) কে গোয়াইনঘাট থানার জাফলং হতে গ্রেফতার করে ব্যাপক জিঞ্জাসাবাদ করা হয়। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধারের জন্য বিয়ানীবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ অবনী শংকর কর ও মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা এসআই (নিঃ) মোড়ল মিজানুর রহমান সঙ্গীয় ফোর্স এর সহায়তায় ডাকাত মিছবাহসহ গতকাল রবিবার ভোর রাত সোয়া ৩ টার দিকে শেওলা ব্রীজের নিচে উত্তর পাশে পৌছালে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা তার সহযোগিরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি করতে থাকে। আতত্মরক্ষার জন্য পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। গোলাগুলির একপযার্য়ে পুলিশ এর হেফাজতে থাকা ডাকাত মিছবাহ দক্ষিণ চরিয়া রাস্তা অভিমুখে পলায়নের চেষ্টা করে। পুলিশের ব্যাপক প্রতিরোধের ফলে মিছবাহ এর সহযোগীরা পালিয়ে যায়।
পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় এবং থানা হতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করে ঘটনাস্থলে তল্লাশি কার্যক্রম পরিচালনা করে ডাকাত মিছবাহ এর সহযোগীদের ফেলে যাওয়া ১টি দেশীয় তৈরি পাইপগান, ৫ রাউন্ড তাজা গুলি, ৬ রাউন্ড গুলির খোসা, ২টি রামদা, ১টি লম্বা ছোরা, ১ টি কার্টার ও ১টি তলোয়ারসহ ব্রিজের নিচে ডাকাত মিছবাহকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। তাকে চিকিৎসার জন্য দ্রুত বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরবর্তীতে সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুতপূর্বক মৃত মিছবাহ ডাকাতের মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। ঘটনা সংক্রান্তে বিয়ানীবাজার থানায় নিয়মিত মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। উল্লেখ্য মৃত মিছবাহ এর নামে সিলেট জেলার বিভিন্ন থানায় অস্ত্র, ডাকাতি ও ডাকাতির প্রস্তুতিসহ মোট ৮ টি মামলা রয়েছে।
সিলেট জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন পিপিএম বলেন, ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অপরাপর সহযোগী আসামীদের গ্রেফতারে সিলেট জেলার সকল থানার সমন্বয়ে যৌথ অভিযান পরিচালনার নির্দেশনা ইতিমধ্যে প্রদান করা হয়েছে।