স্টাফ রিপোর্টার :
জকিগঞ্জে চাঁদাবাজি মামলার এক আসামিকে রক্ষা করতে বাদীর ওপর চাপ প্রয়োগের অভিযোগ উঠেছে তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। গতকাল মঙ্গলবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন জকিগঞ্জ পৌরসভা এলাকার গন্ধদত্ত গ্রামের মৃত আফতাব আলীর পুত্র মো. আব্দুল হান্নান।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সা চালিয়ে জকিগঞ্জ বাজারসহ উপজেলার বিভিন্ন বাজারের দোকানে দোকানে গিয়ে এসএসফুড কোম্পানীর মালামাল বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করি। গত বছর থেকে পৌর এলাকার গোপিরচক গ্রামের বেন্ডাই মিয়ার ছেলে আব্দুস সালাম, পীরেরচক গ্রামের ইউনুছ আলীর ছেলে মাসুম আহমদ, একই গ্রামের ধলাই মিয়ার ছেলে আবুল হোসেন, আব্দুস সাত্তারের ছেলে শামিম আহমদ ও মৃত মহব্বত আলীর ছেলে মামুন আহমদ আমার নিকট চাঁদা দাবি করে। না দিলে জকিগঞ্জ বাজারে মালামাল বিক্রি করতে পারবো না বলে হুমকি দেয়।’
তিনি বলেন, একই বছরের ২৭ জুলাই জকিগঞ্জ বাজার থেকে বাড়ী ফেরার পথে উল্লিখিত ব্যক্তিরা পথরোধ করে তার কছে জানতে চায় কেন তাদেরকে নিয়মিত দাবিকৃত চাঁদার টাকা দিচ্ছেন না। এ সময় অপারগতা প্রকাশ করলে আব্দুস সালাম গলায় চেপে ধরে প্রাণে মেরে ফেলার চেষ্টা করে এবং তার সঙ্গীদেরকেও বলে মারধর করতে। তাদের মারধরে তিনি রক্তাক্ত হন। এ সময় তার পকেটে থাকা মালামাল বিক্রির ১৭ হাজার ৫শ টাকা ও একটি মোবাইল সেট নিয়ে যায় তারা। তিনি চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে তারা পালিয়ে যায়। পরে উপস্থিত লোকজন তাকে জকিগঞ্জ সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালে কিছুটা সুস্থ হয়ে তিনি এলাকার জনপ্রতিনিধিদের দ্বারস্থ হন। কিন্তু হামলাকারীরা সালিশে বসতে অস্বীকৃতি জানালে জকিগঞ্জ থানায় তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, চুরি ও মারধরের অভিযোগ এনে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু পুলিশ অভিযোগটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করেনি। পরে বাধ্য হয়ে ১৩ অক্টোবর জকিগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে তাদের বিরুদ্ধে নালিশ দাখিল করেন। আদালত জকিগঞ্জ থানা পুলিশকে মামলা রেকর্ডের নির্দেশ দিয়ে ১৫ অক্টোবরের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দেন। এরপর পুলিশ মামলা রেকর্ড করে। জকিগঞ্জ থানার মামলা নং ০৮, তারিখ ১৩/১০/১৮। দীর্ঘদিন পরেও কোন আসামি গ্রেফতার কিংবা আদালতে চার্জশীট দাখিল না করায় ২০১৯ সালের ২৫ এপ্রিল সিলেটের ডিআইজি বরাবর আসামি গ্রেফতারের জন্য একটি লিখিত আবেদন করলে ‘শামিম আহমদ’ নামে এক আসামিকে পুলিশ গ্রেফতার করে।
তিনি আরো বলেন, পুলিশ দীর্ঘদিন পর মামলাটির চার্জশীট আদালতে দাখিলের পর তিনি জানতে পারেন মূল হোতা আব্দুস সালামকে অব্যাহতি দানের সুপারিশ করে বাকি ৪ আসামিকে অভিযুক্ত করে তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে দাখিল করেছেন। আদালতের কাছে মামলাটি পুনরায় তদন্তের আবেদন করলে আদালত তা আমলে নিয়ে জকিগঞ্জ থানা পুলিশকে পুনরায় তদন্তের নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশের পর মামলাটির তদন্তভার পান জকিগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) সালাহ উদ্দিন। তিনিও এ মামলা থেকে আব্দুস সালামকে বাঁচানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। আব্দুল হান্নান অভিযোগ করে বলেন, আসামি আব্দুস সালাম প্রভাবশালী হওয়ায় তদন্তকারী কর্মকর্তা পক্ষপাতিত্ব করে সাক্ষীদেরকে ডেকে নিয়ে ধমক দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে আব্দুস সালামকে বাঁচাতে উঠে পড়ে লেগেছেন। তিনি বলেছেন, ‘আব্দুস সালামকে ছেড়ে সাক্ষী দিতে হবে। তিনি বলেন, এর আগেও বিভিন্ন সময়ে একাধিকবার অনেক টমটম চালককে জিম্মি করে আব্দুস সালাম চাঁদা আদায় করেছিলেন। চাঁদা আদায়ের ঘটনায় সালামের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দিয়েছিলেন টমটম চালকরা। কিন্তু আব্দুস সালাম প্রভাব খাটিয়ে পার পেয়ে যান।