কাজিরবাজার ডেস্ক :
বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যকার অমীমাংসিত তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়নে ভারত আগের অবস্থানেই আছে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তিনি বলেছেন, ‘তিস্তা চুক্তি নিয়ে আগের অবস্থানে অনড় ভারত। প্রতিশ্রুতি মোতাবেক আমরা এ চুক্তি করে যাব।’
মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বাংলাদেশ-ভারত দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক শেষে এসব কথা বলেন তিনি।
২০১৭ সালের এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দুই দেশের বর্তমান সরকারের মেয়াদেই তিস্তা চুক্তি করার আশ্বাস দেন। কিন্ত আওয়ামী লীগের গত মেয়াদে এই চুক্তি বাস্তবায়ন হয়নি।
গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। আগের মেয়াদে না হলেও ক্ষমতাসীনরা চাচ্ছে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাস অনুযায়ী তিস্তা চুক্তি সম্পূর্ণ হবে। এই উদ্দেশ্যে ঢাকা জোর চেষ্টাও চালিয়ে যাচ্ছে।
কিন্তু ভারতের পক্ষ থেকে তিস্তা নিয়ে বারবার আশ্বাস আসলেও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের অনঢ় অবস্থানের কারণে হচ্ছে না তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি। তিস্তা নিয়ে ভারত সরকার আশ্বাস দিলেও তারাও এটাও বলছেন যে, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সম্মতি ছাড়া এই চুক্তি হচ্ছে না।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ঢাকায় সফররত ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর বলেন, ৫৪টি নদী নিয়ে কীভাবে নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করা যায়, তার ফর্মুলা খুঁজছে দুই দেশ। পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে অভিন্ন নদীর পানিবন্টন সমস্যার সমাধান করা হবে।
এ সময় বাংলাদেশে অবস্থান নেয়া রোহিঙ্গা সমস্যার ব্যাপারেও কথা বলেন তিনি। বলেন, সবার সুবিধার কথা ভেবে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে ভারত গুরুত্ব দেবে।
এর আগে বেলা ১১টার দিকে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকের পর দুপুর সোয়া ১২টার দিকে তারা যৌথভাবে সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেনের আমন্ত্রণে গতকাল সোমবার রাত ৯টা ২০ মিনিটে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর। সেখানে ড. আব্দুল মোমেন তাকে অভিবাদন জানান।
সফরসূচি অনুযায়ী, মঙ্গলবার সকালে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জয়শঙ্কর। বিকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার সৌজন্য সাক্ষাতের কথা রয়েছে।