কাজিরবাজার ডেস্ক :
ভারতের আসাম রাজ্যে জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন (এনআরসি) বা নাগরিক তালিকা চূড়ান্তভাবে প্রকাশ করা হবে আগামী ৩১ আগষ্ট। ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই তালিকা থেকে বাদ পড়লেই তাকে বিদেশি হিসেবে ঘোষণা করা হবে না। মঙ্গলবার ভারতীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বাদ পড়া ব্যক্তিরা বিদেশি ট্রাইব্যুনালে (এফটিএস) মামলা উপস্থাপনের পর্যাপ্ত সময় পাবেন। এই ট্রাইব্যুনালে আবেদনের সময়সীমা ৬০ দিন থেকে বাড়িয়ে ১২০ দিন করা হয়েছে। দেশটির সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু জানিয়েছে, চূড়ান্ত নাগরিক তালিকা প্রকাশ সামনে রেখে রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা বজায় রাখতে আসাম সরকারের মূল্যায়ন অনুযায়ী কেন্দ্রীয় নিরাত্তা বাহিনী সরবরাহ করবে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
গত বছরের জানুয়ারিতে এনআরসি’র প্রথম খসড়া তালিকা প্রকাশ করে আসামের রাজ্য সরকার। প্রকাশিত খসড়া তালিকা থেকে প্রায় প্রায় ১ কোটি ৩৯ লাখ বাসিন্দা বাদ পড়ে। এনিয়ে সমালোচনার মুখে পড়ে ভারত সরকার। গত বছরের জুলাই ও এবছরের জুনে দুই দফায় প্রকাশিত খসড়া তালিকা থেকে বাদ পড়ে ৪১ লাখ মানুষ। এর মধ্যে ৩৬ লাখ মানুষ নিজেদের বাদ পড়ার বিরুদ্ধে আপিল করে আর প্রায় দুই লাখ মানুষের অন্তর্ভুক্তির বিরুদ্ধে আপত্তি তোলে অন্যরা। এসব আপিল ও আপত্তির বিষয়ে শুনানি এখনও চলছে।
৩১ আগষ্ট চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের আগে সোমবার আসামের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সানোয়াল ও অন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, তালিকা থেকে বাদ পড়াদের আপিল করতে পুর্ণাঙ্গ সুযোগ দেওয়ার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেবে রাজ্য সরকার। চূড়ান্ত এনআরসি’তে বাদ পড়া প্রত্যেক ব্যক্তি আপিল কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের মামলা উপস্থাপন করতে পারবেন। ওই বিবৃতিতে বলা হয়, ফরেনার্স অ্যাক্ট ১৯৪৬ ও ফরেনার্স (ট্রাইব্যুনাল) অর্ডার ১৯৬৪ অনুযায়ী কেবলমাত্র ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালই কোনও ব্যক্তিকে বিদেশি ঘোষণা করতে পারে। সেকারণে নাগরিক তালিকা থেকে বাদ পড়লেই তাকে বিদেশি ঘোষণা করা যাবে না।
সুবিধাজনক স্থানে পর্যাপ্ত সংখ্যক এই ট্রাইব্যুনাল স্থাপন করা হয়েছে জানিয়ে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাদ পড়া যেসব মানুষের প্রয়োজন পড়বে তাদের আইনগত সহায়তা দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ওই বিবৃতিতে বলা হয়, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বাদ পড়াদের আপিল করা সম্ভব না হওয়ায় বর্তমান সময়সীমা ৬০ দিন থেকে বাড়িয়ে ১২০ দিন করা হয়েছে। এর সঙ্গে নাগরিকত্ব আইন ২০০৩ও সংশোধন করা হয়েছে।