ঈদ যাত্রা শংকাহীন হোক

22

জাতীয় মহাসড়কগুলোর বেশির ভাগ অংশ নাজুক অবস্থায় থাকায় এবারও ঘরমুখো মানুষের ঈদ যাত্রা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। মাঝের একটি দিন বাদ দিলে এবারের ঈদের ছুটি অনেক দীর্ঘ। স্বাভাবিকভাবেই এবার ঘরমুখো মানুষের ভিড় বাড়বে। ঈদ যাত্রা শুরুর আগে যাত্রীদের জন্য একটি সুখবর থাকছে। মহাসড়কগুলোতে এবারের ঈদ যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে থাকছে বিআরটিসির এক হাজার ১৫০টি বাস। মহাসড়কের পাশে পশুর হাট বসানো যাবে না। ফিটনেসহীন বাস নামালে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর ঈদ যাত্রায় যাত্রীদের কাছ থেকে কোনোক্রমেই বাড়তি ভাড়া আদায় করা যাবে না। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত সমন্বয়সভায় এমন সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন মন্ত্রী। অথচ জাতীয় মহাসড়কগুলোর বহু অংশ নাজুক অবস্থায় রয়ে গেছে। গত সোমবার পর্যন্ত নাজুক সড়ক-মহাসড়কের বেশির ভাগ অংশের মেরামত কাজ শুরু না হলেও সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর বলছে, পুরোদমে সংস্কারকাজ চলছে। সব মহাসড়কে যান চলাচলের উপযোগী করা হবে বলেও আশ্বাস দিয়েছে তারা। সারা দেশে অধিদপ্তরের আওতাধীন পাঁচ হাজার ৪৮ কিলোমিটার মহাসড়ক নাজুক অবস্থায় রয়েছে। এর মধ্যে সা¤প্রতিক বন্যায় বিধ্বস্ত হয়েছে ২৬ জেলায় ৮০১ কিলোমিটার। বন্যায় সড়ক-মহাসড়কে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৩৬৫ কোটি টাকা। অন্যদিকে সওজ অধিদপ্তরের মহাসড়ক উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা (এইচডিএম) বিভাগের জরিপে বলা হয়েছে, চার হাজার ২৪৭ কিলোমিটার মহাসড়ক খারাপ অবস্থায় রয়েছে। অতিবৃষ্টিতে এসব অংশ আরো নাজুক হয়ে পড়ে। ভালো নয় রেলপথের অবস্থাও। কোথাও দেবে গেছে রেল সেতু। বাঁশ দিয়ে স্লিপার আটকে রাখার ঘটনাও এসেছে গণমাধ্যমে। রেলপাত দুর্বল, স্লিপারের অবস্থা সঙ্গিন, ফিশপ্লেট নেই কোথাও কোথাও। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই চলছে রেল। দুর্ঘটনাও ঘটছে। সা¤প্রতিক বৃষ্টি-বন্যা পরিস্থিতিকে আরো নাজুক করেছে, ঝুঁকি আরো বেড়েছে। রেলপথের উন্নয়নে সোয়া লাখ কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হলেও পুরনো রেলপথের এ অবস্থা ক্রমেই ভয়াবহ হচ্ছে। বাংলাদেশ রেলওয়ের হিসাবে অপেক্ষাকৃত বড় আকারের ৪০২ রেল সেতুই পুরনো, ৭৫ শতাংশ রেলপথের মান যাচ্ছেতাই।
এ অবস্থায় ঈদ যাত্রা নির্বিঘ্ন হবে, এমন নিশ্চয়তা কি আছে? ঘরমুখো মানুষের যাত্রাপথ নির্বিঘœ করতে ব্যবস্থা নিন।