শাহবাজপুরে সেতু ভাঙ্গা ॥ শায়েস্তাগঞ্জে দু’হাজার যাত্রী অপেক্ষমান, ঢাকা-সিলেট রেলপথে চরম দুর্ভোগ

66

হবিগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে শাহবাজপুর সেতু ভেঙে গিয়ে যান চলাচল বন্ধ থাকায় রেল যোগাযোগই একমাত্র ভরসা যাত্রীদের।
শুক্রবার (২১ জুন) সন্ধ্যায় শায়েস্তাগঞ্জ রেলস্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, অন্তত ২ হাজার যাত্রী ট্রেনের জন্য অপেক্ষমান। ঢাকাগামী পারাবত ট্রেন আসলে যাত্রীরা কে কার আগে উঠবেন এ নিয়ে শুরু হয় হুলস্থূল। কিছু যাত্রী ওঠার পর ট্রেনের দরজা বন্ধ করে দিলে যাত্রীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। যারা ট্রেনে উঠতে পেরেছেন এদের প্রায় সকলেই স্ট্যান্ডিং টিকিটধারী। অনেক যাত্রীই উঠেছেন টিকিট ছাড়া। টিকিট না থাকাকে কেন্দ্র করে ট্রেনে কর্তব্যরতদের সঙ্গে যাত্রীদের বাগবিতণ্ডার ঘটনাও ঘটে।
শায়েস্তাগঞ্জ রেল স্টেশনের সহকারী মাস্টার গৌর প্রসাদ দাশ জানান, শুক্রবার সারাদিনে সিলেট থেকে ঢাকাগামী ট্রেন ছিল চারটি। সবগুলো ট্রেন মিলিয়ে ওই স্টেশন থেকে টিকিট বরাদ্দ রয়েছে মাত্র ১৯০টি। অথচ সারাদিনে যাত্রী উঠেছেন কমপক্ষে ২ হাজার। যাদের অধিকাংশই যাচ্ছেন স্ট্যান্ডিং টিকিট নিয়ে। অনেকেই আবার টিকিট ছাড়াও যাচ্ছেন। অতিরিক্ত যাত্রীর কারণে স্টেশনজুড়ে সারাদিন দুর্ভোগ লেগে রয়েছে।
তিনি আরও জানান, অন্যান্য স্টেশনের তুলনায় শায়েস্তাগঞ্জ জংশনের জন্য টিকিট বরাদ্দের পরিমাণ অনেক কম। শুক্রবার সারাদিনে শুধু স্ট্যান্ডিং টিকিট বিক্রি হয়েছে প্রায় ২ লাখ টাকার। যা অন্যান্য সময় ৫ থেকে ১০ হাজার টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। এই অবস্থার মোকাবেলা করতে রেল কর্তৃপক্ষ পুরোদমে হিমসিম খাচ্ছে।
শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে পুলিশের ইনচার্জ শফিকুল ইসলাম খান জানান, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকায় শায়েস্তাগঞ্জ রেলস্টেশনে চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। যাত্রী নিরাপত্তায় আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে রেলওয়ে পুলিশ।
ঢাকা যাওয়ার উদ্দেশে শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনে আসা রোকেয়া আক্তার বলেন, সকাল থেকেই সন্তানদের নিয়ে রেলস্টেশনে রয়েছি। ইতোপূর্বে দুটি ট্রেন আসলেও যাত্রীদের হুলস্থূলের কারণে উঠতে পারেননি। পরবর্তীতে সন্ধ্যা ৬টায় শতশত যাত্রীদের ভিড় টেলে তাকে ট্রেনে উঠতে দেখা যায়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম আল মামুন জানান, মঙ্গলবার (২০ জুন) ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের শাহবাজপুর সেতুর স্প্যানের ফুটপাতসহ রেলিং ভেঙে পড়ায় ভারি যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। ক্ষতিগ্রস্ত সেতুটি মেরামত করতে জরুরিভাবে কাজ করা হচ্ছে। যত দ্রুত সম্ভভ সেতুটি মেরামত করে যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে।
হবিগঞ্জ-ঢাকা রুটে চলাচলকারী অগ্রদূত পরিবহনের ফজলুর রহমান লেবু বলেন, হবিগঞ্জ-ঢাকা রুটে চলাচলকারী সব পরিবহন ঠিকমতো চলতে পারছে না। সরাইল-নাসিরনগর-লাখাই-হবিগঞ্জ রাস্তায় ছোট গাড়িগুলো বেশি চলাচল করায় এই রাস্তায় বাস চালাতে বেগ পেতে হচ্ছে। তাছাড়া মাধবপুর-চান্দউড়া-আখাউড়া রাস্তা দিয়ে ছোট গাড়িগুলো চলাচল করতে পারলেও ওই রাস্তাটি ছোট হওয়াতে সেখানেও প্রচুর যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।