সিন্টু রঞ্জন চন্দ :
সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার আর মাত্র কয়েক দিন বাকী। ৫দিন ব্যাপী এ দুর্গাপূজা উপলক্ষে নগরীর হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা এরই মধ্যে পুজার সব ধরণের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন। এখন প্রতিটি মন্ডপে চলছে প্রতীমা বসানো ও আলোক সজ্জার কাজ। এদিকে প্রতিমাকে দৃষ্টিনন্দন করতে রঙ-তুলির আঁচড়ে শেষ কাজটুকু করছেন প্রতিমা শিল্পীরা। পাশাপাশি পুজো উপলক্ষে কেনাকাটাও সারছেন অনেকে। এছাড়া আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও প্রস্তুত রয়েছে।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মতে, শুভ মহালয়ের মধ্যে দিয়ে দেবী দুর্গার আগমনের গননা শুরু হবে। আগামী ১১ অক্টোবর ঘোটকে (ঘোড়ায়) চড়ে মহা ষষ্ঠীর দিনে পৃথিবীতে আসবেন, অসুরকে বধ করার মাধ্যমে পৃথিবী থেকে সকল দুর্গতি নাশ করে ১৫ অক্টোবর দশমির মহাপ্রলয়ের দিনে দোলায় চড়ে আবার স্বর্গে ফিরে যাবেন। ৫দিন ব্যাপী অনুষ্ঠেয় পূজায় হাজার হাজার ভক্ত ও পুণ্যার্থী শারদীয় দুর্গা উৎসব পালন করবেন। তাই প্রতিটি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ঘরে ঘরে বইছে উৎসবের আমেজ।
জানা গেছে, সিলেট জেলা ও মহানগরের এবার ৬৭০টি মন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে সিলেট জেলায় ৬০৫টি মন্ডপে ও মহানগরীর ৬৫টি মন্ডপে পূজা উদযাপন হবে। এর মধ্যে মহানগরে সার্বজনীন ৫০টি এবং ১৫টি পারিবারিক মন্ডপ রয়েছে। এসব মন্ডপে পূজা উদযাপনের জন্য এখন চলছে আলোক সজ্জার প্রস্তুতি। পূজোর দিন ঘনিয়ে আসায় সবগুলো মন্ডপেই সাজ সাজ রব বিরাজ করছে।
এদিকে গতকাল শুক্রবার নগরীর বিপণী বিতানের কাপড়ের দোকানগুলোতে বেশি ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ সিলেট জেলার সাধারণ সম্পাদক রঞ্জন কান্তি ঘোষ জানান, গেল বছরের মতো এবারও করোনার কারণে সামাজিক দূরত্ব বজায় ও স্বাস্থ্যবিধি মানাসহ অনেকগুলো নির্দেশনা মেনে পূজো আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে। এখন মন্ডপে মন্ডপে চলছে দেবী দুর্গার বর্ণিল সাজ-সজ্জার শেষ মুহূর্তের কাজ। পূজোর যাবতীয় উপকরণ, পূজো, পুষ্পাঞ্জলি প্রদান,চন্ডীপাঠ, মহাপ্রসাদ বিতরণ, আলোচনাসভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আরতি, ভজন কীর্তন, আলোকসজ্জা ও ডেকোরেশনসহ নানান প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে। রজত কান্তি আরো বলেন, প্রতিটি পূজামন্ডপে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা, স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ, জেনারেটরের ব্যবস্থা ও পরিদর্শন বই রাখার জন্য পূজা উদযাপন পরিষদের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্টদের বলা হয়েছে।
এ ব্যাপারে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র এডিসি (মিডিয়া) বিএম আশরাফ উল্যাহ তাহের জানান, সুষ্ঠু, শান্তি ও সুন্দরভাবে পূজা পালনে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্বদা সতর্ক অবস্থায় প্রস্তুত রয়েছে। পূজামন্ডপে নিরাপত্তার দিতে বিশেষ নজরদারি রাখা হবে।
সিলেট জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন পিপিএম বলেন, সিলেটে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করে নিজ নিজ ধর্ম সুষ্ঠুভাবে পালনে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্বদা সতর্ক রয়েছে। শান্তিপূর্ণভাবে পুজা উদযাপন উপলক্ষে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য পোষাকধারী পুলিশের পাশাপাশি এবার সাদা পোষাকে পুলিশের নজরদারি বৃদ্ধি করা হবে।