বড়লেখা থেকে সংবাদদাতা :
মৌলভীবাজারের বড়লেখার শ্রমিক নেতা আব্দুল আহিদের সৌদি আরব ফেরত স্ত্রী গত ১৫ দিন থেকে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ রয়েছেন। খালা শাশুড়ি পুনরায় বিদেশ পাঠাতে ফুঁসলিয়ে তাকে সরিয়ে রেখেছেন বিভিন্ন সূত্রে এমন খবর পেয়ে স্ত্রীর সন্ধান জানতে চাওয়ায় মামলার আসামী হয়েছেন শ্রমিক নেতা আব্দুল আহিদ। নিখোঁজ গৃহবধূর ৯ বছর বয়সী একমাত্র ছেলে মিজানুর রহমান নাহিদ মায়ের জন্য উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে।
জানা গেছে, উপজেলা অটোটেম্পু সিএনজি পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুল আহিদের দ্বিতীয় স্ত্রী রেবা বেগম সৌদি আবরে গৃহকর্মীর কাজ করতেন। ১৭ মাস সৌদি থাকার পর গত জুলাই তিনি দেশে আসেন। আব্দুল আহিদ ও রেবা বেগমের একমাত্র ছেলে মিজানুর রহমান নাহিদ স্থানীয় এমএইচ সরকারী প্রাইমারী স্কুলের ৪র্থ শ্রেণীর ছাত্র। পরিবহন শ্রমিক নেতা আব্দুল আহিদ স্ত্রীকে গত ২ মাস ধরে প্রতিবেশী পারভিন বেগমের কাছে টেইলারী কাজ শিখাচ্ছেন। যাতে বিদেশ না গিয়ে দেশে টেইলারী করে আয় রোজগার করতে পারেন। রেবা প্রতিদিন দুপুরে পারভিনের বাড়িতে গিয়ে সেলাই কাজ শিখছিলেন। গত ১৮ অক্টোবর সেলাই প্রশিক্ষক পারভিনের বাড়ি থেকে রেবা বেগম বাড়ী ফেরেননি। আব্দুল আহিদ খোঁজ নিয়ে প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানতে পারেন স্ত্রী রেবা বেগম খালা শাশুড়ি ফাতা বেগমের বাড়িতে গিয়েছেন। কিন্তু খালা শাশুড়ি তা অস্বীকার করেন। ঘটনার দুইদিন পর খালা শাশুড়ি ফাতা বেগম আব্দুল আহিদের বাড়িতে রেবা বেগমের কাপড়-চোপড় আনতে গেলে আহিদ স্ত্রীর সন্ধান দিতে তাকে চাপ দেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ফাতা বেগমের জামাতা সুমন আহমদ শাশুড়িকে হত্যার চেষ্টা ও মারধরের অভিযোগ এনে আব্দুল আহিদকে আসামী করে থানায় মামলা করেন। এর আগে শ্রমিক নেতা আহিদ আহমদ স্ত্রী রেবা বেগমকে উস্কানী প্রদান ও ফুঁসলিয়ে সরিয়ে রাখার অভিযোগে খালা শাশুড়ি ফাতা বেগম ও জামাতা সুমন আহমদকে আসামী করে থানায় মামলা করেন।
আব্দুল আহিদ জানান, ওই খালা শাশুড়ি তার স্ত্রীকে বিদেশ পাঠিয়েছেন। ১৭ মাসে ছেলের জন্য মাত্র ২২ হাজার টাকা দিয়েছে। রেবা বিদেশ থেকে সব টাকা পয়সা তার খালার কাছে দিয়েছে। আমি টাকা পাঠিয়ে তাকে দেশে এনেছি। ফাতা বেগম আমার স্ত্রীকে ফুঁসলিয়ে আবার বিদেশ পাঠাতে চাচ্ছে। এজন্য অন্যত্র সরিয়ে রেখেছে। আমি অনেক অনুনয় বিনয় করেও স্ত্রীর সন্ধান পেতে ব্যর্থ হন। উল্টো আমাকে আসামী করে থানায় মামলা দেয়া হয়েছে। বিভিন্নভাবে তারা হুমকি ধমকি দিচ্ছে আমার স্ত্রীকে আর ফেরৎ দিবে না।
নিখোঁজ গৃহবধূ রেবা বেগমের এসমাত্র ছেলে মিজানুর রহমান নাহিদ জানায়, বাবা-মায়ের মধ্যে কোন মনোমালিন্য ছিল না। নানী (ফাতা বেগম) আমার মাকে লুকিয়ে রেখেছেন। মায়ের জন্য খুব মন খারাপ লাগছে। কয়েকদিন ধরে সে স্কুলে যাচ্ছে না।
এ ব্যাপারে জানতে ফাতা বেগমের বাড়িতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে ফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহ্ম্মাদ সহিদুর রহমান জানান, পুলিশ দুটি মামলারই এফআইআর করেছে। নিখোজ রেবা বেগমকে উদ্ধার করতে পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।