স্টাফ রিপোর্টার :
বাংলাদেশের জনগণের মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং প্রকৃত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা নেই বলে মন্তব্য করেছেন গণফোরাম সাধারণ সম্পাদক ড. রেজা কিবরিয়া। তিনি বলেছেন, ‘গণতন্ত্রের অন্যতম স্তম্ভ হলো সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যবস্থা। কিন্তু গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত ‘নির্বাচনে’ ভোটের প্রশ্নে সারা পৃথিবীর সামনে প্রমাণিত হয়েছে বাংলাদেশে প্রকৃত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা আমাদের দেশে নেই।’
মঙ্গলবার সিলেট প্রেসক্লাবের আমীনূর রশীদ চৌধুরী মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। গণফোরামের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পাওয়ার পর এই প্রথম তিনি সিলেটের সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। গণফোরামের সম্পাদকর দায়িত্ব পেয়ে নিজেকে গর্বিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই দলের আদর্শ এবং নেতৃত্ব আমাকে আকর্ষণ করেছে। আমি ড. কামাল হোসেনকে অনেক বছর থেকে চিনি। তিনি অক্সফোর্ডে ড. হোসেনের গবেষণা সহকারী হিসেবে কাজও করেছেন বলে উল্লেখ করেন।
তিনি গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে অনতিবিলম্বে একটি অংশগ্রহণমূলক অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন। তিনি একাদশ সংসদের সমালোচনা করে বলেন, ‘পাঁচজনকে দয়া করে সংসদে ঢুকতে দিলেই এই সংসদের বৈধতা হবে সেটা ভুল ধারণা। দেশের মানুষকে এতটা বোকা মনে করা উচিত না। জনগণই দেশের মালিক এবং সেই মালিকানা তাদের ফেরত দিতেই হবে। ভয় ভীতি, মিথ্যা মামলা, হুমকি দিয়ে মানুষকে চুপ করানো যায় কিন্তু মানুষের ভালবাসা, আস্থা, সম্মান আদায় করা যায় না।’
তিনি বলেন, ‘দেশে এই সময় বিভিন্ন ক্ষেত্রে অরাজকতা এবং ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি বিরাজমান। এই বিষয়গুলি সবার সামনে তুলে ধরা এবং সরকারের গঠন মূলক সমালোচনা করে প্রস্তাব দিতে আমরা চেষ্টা করব। সরকার অনেক ব্যাপারে মনে হচ্ছে দিশেহারা। আমার মনে হয় তাদের নিজেদের আত্মবিশ্বাসের অনেক সমস্যা রয়েছে। গণসর্মথিত সরকার না হওয়ায় এটাই স্বাভাবিক।
তিনি আরও বলেন, ‘অর্থনীতির দুরবস্থা, আর্থিক বৈষম্য, পরিবেশ দূষণ, খাদ্য দ্রব্যে ভেজাল, শিক্ষার নিম্নমান, সাইবার সিকিউরিটি, বেকারত্ব বৃদ্ধি, কৃষিক্ষেত্রে হাহাকার, ব্যাংকিং খাতের অরাজকতা, শ্রমিকদের শ্রমের ন্যায্য মূল্য না দেওয়া, পরিবহন সেক্টরে মারাত্মক অরাজকতা, হত্যা, ধর্ষণ এবং যৌন অপরাধ ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পরা, মাদক ব্যবসা বৃদ্ধি, রোহিঙ্গা সমস্যা, ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন ধরণের হয়রানি- এই সব বিষয় নিয়ে গবেষণা ভিত্তিক নীতি মালা তৈরি করতে হবে।’
তিনি এও বলেন, গণফোরামের কাছে মানুষ আশা করতে পারে – শান্তিপূর্ণ, গণমুখী, গণতান্ত্রিক , অসাম্প্রদায়িক, রাজনৈতিক ধারা। আর যার মূল শক্তি হবে বাংলাদেশের মানুষের সম্মতি ও সমর্থন। এই ব্যাপারে গণফোরামের নীতির কোন পরিবর্তন নেই।’
দেশের জনগণ হলো ক্ষমতার উৎস। জনগণকেই এই দেশের মালিকানা ফেরত নিতে হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘সব থেকে বড় দু:শ্চিন্তার কারণ হলো দেশে গণতান্ত্রিক অধিকার বিলুপ্ত হওয়া। ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে। মত প্রকাশের স্বাধীনতা জনগণকে দিতে হবে।’
তিনি তার পিতা শহীদ শাহ এ এম এস কিবরিয়ার একটি উদ্বৃতি দিয়ে বলেন, ‘আমার পিতা আমাকে একবার বলেছিলেন সবচেয়ে গরিব দেশের সবচেয়ে গরিব মানুষের স্বার্থ রক্ষা করা খুব কঠিন কাজ। কিন্তু সেটা করতে হয়।’ আমি সেভাবেই কাজ করে যাব। তিনি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে গণমাধ্যমের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন।