আল-হেলাল সুনামগঞ্জ থেকে :
কালবৈশাখী ঝড়ে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার গৌরারং ইউনিয়নের বড়ঘাটে পল্লী বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নির্মাণাধীন ৩৩ কেভি বিদ্যুৎ লাইনের ১১টি খুঁটি ভেঙ্গে রাস্তায় পড়ে সুনামগঞ্জ- জামালগঞ্জ সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে অনেক মানুষ সুনামগঞ্জ থেকে জামালগঞ্জ এবং জামালগঞ্জ থেকে সুনামগঞ্জ আসতে ও যেতে পারছেন না। রবিবার (১১ এপ্রিল) খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত শনিবার রাতে কালবৈশাখী ঝড়ে বড়ঘাট এলাকার একাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। আধাপাকা বিল্ডিং ও টিনের তৈরী বসতঘরগুলো ধুমড়ে মুচড়ে পড়ে গেছে। প্রত্যেকটি বসতবাড়ীর টিনের চালের ঢেউটিনগুলো তুফানে উড়িয়ে নিয়ে গেছে। রাস্তার উপরে গাছ ও রাস্তার পাশে নির্মাণাধীন নতুন ৩৩ কেভি পল্লী বিদ্যুৎ লাইনের ১১টি খুঁটি ভেঙ্গে রাস্তায় পড়ে রয়েছে। রাস্তার পাশে কারো ঘরবাড়ি ছিল না এবং রাত হওয়ায় রাস্তাঘাটে যান চলাচল বন্ধ থাকায় কারো কোন ক্ষতি হয়নি। বড়ঘাট এলাকার বাসিন্দা মাওলানা মুহাম্মদ এমদাদুল হক জানান, পল্লী বিদ্যুৎ বোর্ডের কাজের গাফিলতির কারণে আজকে তাদের নির্মাণাধীন ১১ টি খুঁটি ভেঙ্গে রাস্তায় পড়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। যদি দিনের বেলা ঐ কালবৈশাখী ঝড় হতো তাহলে না জানি রাস্তায় থাকা কত মানুষ মারা যেত। জগাইরগাঁও গ্রামের বাসিন্দা রফিক মিয়া জানান, রাস্তার একসাইটে একটানা অনেক বাড়িঘর আরেক সাইটে হাওরের ধান বর্তমানে বিদ্যমান আছে। যদি খুঁটিগুলো ভেঙ্গে বাড়ির উপর পড়ত তাহলে পরিবারসহ সবাই আজকে না ফেরার দেশে চলে যেতাম। বড়ঘাট গ্রামের বাসিন্দা মিজান মিয়া জানান, কালবৈশাখী ঝড়ে নিমার্ণাধীন খুঁটি গুলো ভেঙ্গে পড়েছে তার মানে খুঁটির নির্মাণের কাজে গাফিলতি আছে আমি সরকারের কাছে অনুরোধ জানাই এটার যেন তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। সুনামগঞ্জের পল্লী বিদ্যুৎ বোর্ডের পল্লীবিদ্যুতের জিএম সুজিত কুমার বিশ্বাস এজিম কুদরতে এলাহী ও মঙ্গলকাটা কেন্দ্রের লাইনম্যান আবুবক্কর সিদ্দিক জানান, সুনামগঞ্জ- জামালগঞ্জ সড়কে ৩৩ কেভি নতুন বিদ্যুৎ লাইনের কাজ চলছিল। শনিবার রাতে কালবৈশাখী ঝড়ে নির্মাণাধীন ১১ টি খুটি ভেঙে রাস্তায় পড়ে গেছে। তবে কারো কোন ক্ষতি হয়নি বর্তমানে ঐ সড়ক দিয়ে যাতায়াত বন্ধ রয়েছে আমরা আজকের মধ্যে রাস্তা থেকে সব খুঁটি তুলে দিব।
এর আগে গত ৩০ মার্চ মঙ্গলবার রাত ৮টায় সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে কাঁচা আধা-কাঁচা ঘরের টিন উড়ে যাওয়া ও গাছ পড়ে ৫ শত ঘর বাড়ির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে গাছগাছালি উপড়ে পড়ে। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় কাঁচা-আধাপাকা ঘরবাড়ির পাশাপাশি, বিদ্যুৎ লাইন ও বোরো ফসলেরও। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রচন্ড ঝড়ের কবলে পড়ে অনেক স্থানেই বড় বড় গাছ উপড়ে পড়ে। ক্ষতিগ্রস্ত হয় কাঁচা ও আধাপাকা ঘরবাড়ি। বিভিন্ন স্থানে সড়ক ও বৈদ্যুতিক তারের উপর গাছ উপড়ে পড়ার কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত হয়। সমাজকর্মী মিসবাহ উদ্দিন জানান, ঝড়ের ফলে ধান ও সবজির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। দমকা হাওয়ার ফলে মাটির সাথে মিশে গেছে ধান। উপড়ে পড়েছে ক্যাপসিকাম, নাগা মরিচ, বেগুন ও টমেটোর গাছ।