কানাইঘাট থেকে সংবাদদাতা :
কানাইঘাটের ঝিঙ্গাবাড়ীর বৃহত্তর ঢাকনাইল ৯ মৌজার হাওর এলাকার এজমালী সম্পত্তির হিসাব নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে নিহত আমির উদ্দিন (৫০) এর ময়না তদন্ত রিপোর্ট প্রত্যাখ্যান করেছেন মামলার বাদী পক্ষের লোকজন। আমির উদ্দিনের স্বাভাবিক মৃত্যু বলে ময়না তদন্ত রিপোর্ট দিয়েছেন ডাক্তার। রিপোর্টে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তার মৃত্যুর কথা বলা হয়েছে। আর এ রিপোর্টকে বানোয়াট রিপোর্ট বলছেন বাদী পক্ষ।
জানা যায় গত ২৩ এপ্রিল মঙ্গলবার সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালের ডাক্তার চিন্ময় ভট্টাচার্য কর্তৃক কানাইঘাট থানার মাধ্যমে নিহত আমির উদ্দিনের ময়না তদন্ত রিপোর্ট হাতে পান হত্যা মামলার বাদী ফখরুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমরা কয়েক দিন থেকে শুনে আসছি প্রভাবশালী আসামী পক্ষের লোকজন মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ময়না তদন্ত রিপোর্ট নিজেদের পক্ষে নিতে চাইছেন। রিপোর্ট হাতে পেয়ে তাই সত্যি প্রমাণিত হলো। ফখরুল ইসলাম বলেন, প্রকাশ্য একটি খুনের রিপোর্ট কিভাবে স্বাভাবিক বা হার্ট এ্যাটার্ক মৃত্যু হয় তা আমাদের বোধগম্য নয়। আমরা এ রিপোর্ট প্রত্যাখ্যান করেছি এবং আমরা আদালতের মাধ্যমে ন্যায় ও সুবিচারের স্বার্থে মৃত আমির আলীর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নির্ণয়ার্থে তার লাশ কবর হতে উত্তোলনের আদেশ প্রদান পূর্বক মেডিকেল বোর্ডের অধীন লাশের পুন: ময়না তদন্তের আবেদন জানিয়েছি।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, এলাকায় আধিপত্য ও এজমালী সম্পত্তির দখল ও জলমহালের টাকার হিসাব নিয়ে পূর্ব বিরোধের জের ধরে গোয়ালজুর গ্রামের আব্দুল লতিফ ও ফখরচটি গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল জলিল লোকজন গত ১৩ মার্চ বুধবার এলাকার বাখাইরপাড় গ্রামে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এতে আব্দুল জলিল ও তার লোকজনের হামলায় আমির উদ্দিন (৫০) ঘটনাস্থলে মারা যান। সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হন। এর পর নিহতের ভাতিজা ফখরুল ইসলাম বাদী হয়ে কানাইঘাট থানায় একটি মামলা করেন। মামলা নং-১৪/৩/২০১৯। এ মামলার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ এ পর্যন্ত ৩ জন আসামীকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলেন আলাউদ্দিন (বাখাইরপার) ফখর উদ্দিন (বাখাইরপার) বদরুল ইসলাম (গোয়ালজুর)। মামলায় ২৭ জন এজহার নামীয় ও ২৫/৩০ জন অজ্ঞাতনামা রাখা হয়েছে। মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী এডভোকেট গোলাম রসুল সুমেল বলেন, সম্পূর্ণ উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে ময়না তদন্ত রিপোর্ট দেয়া হয়েছে। আমরা পুন:ময়না তদন্তের জন্য আবেদন করেছি। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কানাইঘাট থানার এস আই স্বপন চন্দ্র সরকার বলেন, আমি আমির উদ্দিনের লাশের সুরতহাল রিপোর্ট করেছি, রিপোর্টে নিহতের মাথার উপরের অংশে জখমের চিহৃ ছিল। আমি রিপোর্টে তা লিখে দিয়েছি। এখন যদি বাদী পক্ষ তাতে সন্তুষ্ট না হন, তবে তারা পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নিতে পারেন।