অর্পিত সম্পত্তি আইন

24

সংখ্যালঘুদের স্বার্থ বা অধিকার রক্ষার বিষয়টি নিয়ে অতীতে অনেক আশ্বাস বা প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে সেসবের নাগাল পায়নি সংখ্যালঘুরা। ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর তদানীন্তন পাকিস্তান সরকার ‘ডিফেন্স অব পাকিস্তান রুলস ১৯৬৫’ অনুযায়ী অনুপস্থিত সংখ্যালঘুর সম্পত্তি ‘শত্রু সম্পত্তি’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়। বাস্তবে ভূমি অফিস থেকে বেশির ভাগ সংখ্যালঘুর সম্পত্তি তালিকাভুক্ত বা লাল দাগ দিয়ে রাখা হয়। স্বাধীনতার পর ‘শত্রু সম্পত্তি’র নাম পরিবর্তন করে অর্পিত সম্পত্তি করা হয়। সেই সম্পত্তি বৈধ মালিকদের হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন করা হয়। এরপর বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় আইনের বাস্তবায়ন থেমে থাকে। ২০০৮ সালে আবার আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০১২ সালে এসংক্রান্ত ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। তখন থেকেই ভুক্তভোগীরা নিজেদের সম্পত্তি ফিরে পাওয়ার লক্ষ্যে অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ ট্রাইব্যুনালে আবেদন করতে থাকেন এবং তার পর থেকে আদালতের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে থাকেন।
জানা যায়, ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা কম হওয়া, অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণের আবেদন ছাড়াও বিচারকদের অন্যান্য মামলা পরিচালনা করা, সরকারপক্ষের আইনজীবী বা বিচারক অনুপস্থিত থাকাসহ নানা কারণে বিচার বিলম্বিত হতে থাকে। হাইকোর্ট গত বছর এক নির্দেশে প্রতি জেলায় বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে বলেছিলেন। তারও কোনো অগ্রগতি নেই। দেশে সংখ্যালঘুদের প্রধান একটি সমস্যা এই অর্পিত সম্পত্তি আইন। এ থেকে তাদের রক্ষার জন্য সবচেয়ে বড় প্রয়োজন রাষ্ট্রযন্ত্রের আন্তরিকতা। আমরা আশা করি, বর্তমান সরকার এ ক্ষেত্রে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।