ভয়াল রাত

38

সেলিম সিকদার

পঁচিশে মার্চের আঁধার নেমে আসে
দানবেরা নেমেছে ঢাকার রাজপথে
ঘুমন্ত নাগরী থরথরে উঠলো কেঁপে !
গোপনে গোপনে দানবেরা আসে
ওই পশ্চিম পাকিস্তান থেকে।

অস্ত্র অস্ত্র আর দানব বাহিনী
লেলিহান অনলে জ্বলে ঘরবাড়ি !
গুলি বৃষ্টি, ট্যাঙ্কেরগুলা ও শেল আর্টিলারী
মরনাস্ত্র যা বাঙালি আর দেখেনি !
তা বর্ষিত হয়েছে এদেশের মানুষের বক্ষে
চারিদিকে লাশের স্তুপ পড়ে আছে !
ওই দিন গণহত্যা চলে ঢাকার বুকে
মানুষ-নয়-মাটি-চাই ! মাটি -চাই !
ইয়াহিয়া হুকুম দিল দানব বাহিনীকে
হুকুম দিয়ে ছাড়লো গণহত্যার হেতা
কি বলব সেই নরপিচাশদের কথা !
ভুলে গেলো সেদিন সব ন্যায়-নীতি
জাতি নিধনে এ কোন কলঙ্কিত রাজনীতি ?
সেদিন ঢাকার বুকে চলে গণহত্যার মহোৎসব
জ্ঞানী-গুণী প্রথম হত্যা করবে সব।
বঙ্গবন্ধুকে ধানমন্ডির বত্রিশ নাম্বার
বাড়ি থেকে বন্দী করে নেয় কারাগারে
জানেনা কেউ সেদিন কোনো বাঙালি
পাকিস্তান কারাগারে প্রিয় মানুষটি
বেঁচে আছে না মারা গেছে !
রক্তে প্লাবিত বহমান বুড়িগঙ্গা
রণহুংকারে জাগলো বাঙালির সত্তা
প্রতিরোধ জন্মায় বেয়ারিশ লাশ দেখে
চারিদিকে সাতই মার্চের ভাষণ ভাসছে
অনুপ্রেরণা হিসাবে ওই ভাষণ
বক্ষে জাতি বাঁধছে।
জাগলো জাতি গর্জে ওঠে বীর বাঙালি
স্বপ্ন নিয়ে করবে অধিকার আদায়ের
যুদ্ধে, হটবেনা আর পিছু
ওই নরপিশাচ হায়েনারা শহীদদের
লুকিয়ে শত-শত লাশের দিল গণকবর।
ভোরের আভায় লাল হয়েছে
ঢাকার ব্যস্ত নগরীর রাজপথে
সেই দিনের নরকীয় হত্যা
বাঙালি জাতি ভুলবে কি করে
জানতে হবে সবার অতীত ইতিহাস !
এর মাঝে আছে বেয়ারিশ লাশ
আজও কবি মন কাঁদে
ভয়াল রাতের কথা ভেবে, ভেবে !